কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

সিডিবিএলের তথ্য : পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে কমছে নারী বিনিয়োগকারী

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দেশের পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা গত চার বছরে কমেছে প্রায় ৩ লাখ বা সাড়ে ৩৯ শতাংশ। বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও এর বাইরে বিভিন্ন খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ও ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার ধারণসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএল। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৭ মার্চ পুঁজিবাজারে নারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৯২। আর গত ৭ মার্চ মঙ্গলবারের তথ্য মতে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৬। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে ২ লাখ ৯৭ হাজার ১৪৬ নারীর বিও হিসাব বন্ধ হয়েছে।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, পুরুষের তুলনায় নারীদের বিও হিসাব বন্ধের হার বেশি। গত চার বছরে পুরুষ বিও হিসাব প্রায় পৌনে ৭ লাখ বা ৩৩ শতাংশ কমে ৭ মার্চে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৯৬ হাজারে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানান- পুঁজিবাজারে নারী বিনিয়োগকারী কমার কারণ মূলত দুটি। প্রথমত, কয়েক বছর ধরে মন্দাভাব থাকার কারণে সবার আগ্রহ কমে গেছে। দ্বিতীয়ত, ২০২০ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি বাজারে ২০ হাজার টাকা ন্যূনতম বিনিয়োগের শর্ত আরোপের কারণে সামগ্রিকভাবে বিও হিসাবের সংখ্যা কমে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় নারী বিও হিসাবও কমে গেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সংশ্লিষ্টরা জানান- ২০২০ সালের আগে পুঁজিবাজারে বিও হিসাবের বড় একটি অংশই ব্যবহার হতো শুধু আইপিও আবেদনের জন্য। আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি বাজারে ৫০ হাজার টাকার ন্যূনতম বিনিয়োগের নতুন শর্ত দেয়ার পর বিও অ্যাকাউন্ট আরো কমে। নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমে যাওয়ার পেছনে এটিও একটি বড় কারণ। আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যেত নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের একটি বড় অংশ পুরুষ বিনিয়োগকারীরা আইপিওতে ব্যবহার করতেন। সেই সুবিধা এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিও হিসাবের সংখ্যাও কমে গেছে।
সিডিবিএলের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিনিয়োগের শর্তারোপের পরপরই ২০২১ সালের ৮ মার্চ পুঁজিবাজারে নারী বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ লাখ ৮৭ হাজার। দুই বছরের ব্যবধানে তা কমে যায়।
এ ব্যাপারে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান- পরিসংখ্যান মতে পুঁজিবাজারে নারী বিও হিসাবের সংখ্যা কমলেও আমাদের তথ্য অনুযায়ী প্রকৃত নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেনি। কারণ আগে বেশির ভাগ নারী বিও হিসাব পুরুষরা আইপিওতে ব্যবহার করতেন। সেই প্রবণতা কমেছে এখন। বর্তমানে যেসব নারী বিনিয়োগকারী রয়েছেন বাজারে, তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, একজন বিনিয়োগকারী একটি ব্রোকারেজ হাউসে একক ও যৌথ নামে সর্বোচ্চ দুটি বিও হিসাব খুলতে পারবেন। এভাবে কোনো বিনিয়োগকারী চাইলে ১০টি ব্রোকারেজ হাউসে একক ও যৌথ নামে দুটি করে মোট ২০টি বিও হিসাব খুলতে পারেন। তবে কোনো কোম্পানির শেয়ারের আইপিওতে একক ও যৌথ মিলিয়ে কেবল দুটি বিও হিসাব থেকে আবেদনের সুযোগ পান একজন বিনিয়োগকারী। সে ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি বাজারে প্রতিটি বিও হিসাবের বিপরীতে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে।
এদিকে শুধু নারী বিও হিসাব নয়, সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারে বিও হিসাবের চার বছরের ব্যবধানে সাড়ে ৩৪ শতাংশ কমে গেছে। সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৭ মার্চে সব মিলিয়ে বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৮ লাখ ২৫ হাজার। চার বছর পর এ সংখ্যা কমে হয়েছে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ২৩৩টি।
পুঁজিবাজারে লেনদেন করতে হলে ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি বিও হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক। সাধারণভাবে পুঁজিবাজারে একটি বিও হিসাব মানে একজন বিনিয়োগকারী ধরা হয়। তবে অনেক পুরুষ বিনিয়োগকারী পরিবারের নারী সদস্যের নামে বিও হিসাব খুলে লেনদেন করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়