কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

সাগরিকায় শান্ত ঝলকে মুগ্ধ সমর্থক

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় দুইশ বছর শাসন করেছে ব্রিটিশ সরকার। গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমে ব্যাট হাতে তাদের বোলারদের কড়া শাসন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর প্রথমবার আন্তর্জাতিক বিশ ওভারের ম্যাচে নেমেই তিনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পেলেন। এর আগের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়েই শান্ত প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজেকে। বিপিএলে ব্যাট হাতে তার পারফরমেন্স দেখেই বুঝা গিয়েছিল দুর্দান্ত ছন্দে আছেন এই ব্যাটসম্যান। ইংলিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তিনি নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করে নিজের রূপ দেখিয়েছিলেন। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও দলের হাল ধরা নায়কের নাম নাজমুল হোসেন শান্ত।
রনি-লিটনের ওপেনিং জুটি ভালো শুরু এনে দিয়ে অপ্রত্যাশিত বলে আউট হন। রনির বিদায়ের পর তিন নম্বরে ব্যাট হাতে পিচে আসেন শান্ত। এসেই প্রথম বলে দর্শক ও ভক্তদের মর্মাহত করে আউট হন। মূলত সেই আউট ছিল আম্বায়ারেরই ভুল। আদিল রশিদের বল শান্তর ব্যাট এবং গøাভস স্পর্শ করে প্যাডে ঠেকাতে আম্পায়ার তাকে লেগ বিফোরের আউট দেন। তবে নিজের আত্মবিশ্বাস থাকায় রিভিউ নেন শান্ত। রিভিউতে জীবন ফিরে পান তিনি। জীবন ফিরে পেয়েই শুরু করেন তাণ্ডব। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশের দিকে জয়ের পাল্লা ভারী হয়। এর মধ্যে এক ওভারে তিনি টানা ৪টি চার মেরে দর্শকদের নান্দনিক ক্রিকেটের স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগও দেন। আন্তর্জাতিক বিশ ওভারের ম্যাচে শান্ত নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের দেখা পান ২৭ বল খেলেই।
শেষ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের জয়ের ম্যাচটিতে ৩০ বলে ৫১ রান করে বিদায় নেন। বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয়ের নায়ক শান্তই ম্যাচসেরা খেলোয়াড় ঘোষিত হন। ক্যারিয়ারে তিনি প্রথমবারের মতো অর্ধশত রান পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তিনি ম্যাচটিতে ৪৮ বলে ৫৪ রান সংগ্রহ করে মাঠ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। ম্যাচে তিনি ভালো করতে পারলেও অন্য ব্যাটারদের অপারগতায় ম্যাচটিতে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি নিজেকে ভরসার প্রতীক হিসেবে পরিচিত করেছেন বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ভালো অবদান রেখেই। ইংলিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের আগমনে টাইগাররা ভালো করবে এমন আশা ছিল শুরু থেকেই। এর সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্ত ওয়ানডে ম্যাচেও নিজেকে প্রমাণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিনি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেছেন ৮২ বলের মুখোমুখি হয়ে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেই তিনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন। তার অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সাকিব-মুশফিকের পারফরমেন্স বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ থেকে বাঁচিয়েছিল সেদিন।
এর আগে বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগে শান্ত ব্যাট হাতে আগুন ঝড়ানো পারফরমেন্স দেখান। বিপিএলের সর্বশেষ আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহও ছিলেন তিনি। সিলেট স্ট্রইকার্সের হয়ে তিনি প্রথম ম্যাচেই ৪১ বলে তিন চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস গড়েন। পরের ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষেও ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা হাঁকিয়ে এই ব্যাটসম্যান গড়েন ৪৮ রানের ইনিংস। নবম আসরে দলের চতুর্থ ম্যাচে তিনি বিপিএলের প্রথম ফিফটির দেখা পান। সেই ম্যাচে এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩৯ বলে ৫৭ রানের ইনিংস গড়েন। ইনিংসে তিনি ৭টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কা হাকান। পরের দুই ম্যাচে ফের খেই হারালেও তিনি দলের সপ্তম ম্যাচে পুনরায় জ¦লে উঠেন। গড়েন ৬৬ বলে ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। ইনিংসটি গড়তে ১১টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। এমন সফলতা ও ব্যর্থতা মিলিয়ে বিপিএলের নবম আসরে মোট ১৫টি ইনিংস আছে তার। অধিকাংশ ম্যাচেই তিনি দলকে ভালো কিছুই উপহার দিয়েছেন। আসর শেষে মোট ৫১৬ রান সংগ্রহ করে রানার্স আপ দলের হয়েও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শান্তর ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১৬ সালে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিউজিল্যান্ড সফরের পূর্বে দলকে অস্ট্রেলিয়ায় ট্রেনিং ক্যাম্পে নেয়া হয়। সেই ক্যাম্পের জন্য ২২ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াডে স্থান পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি টেস্টে খেলায় তার অভিষেক হয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
এরপর ২০১৮ সালের আগস্টে তাকে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নেয়ার লক্ষ্যে গঠিত ৩১ সদস্যের প্রাথমিক দলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই বছরের শেষ দিকেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দলের হয়ে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে এসিসি উদীয়মান বাংলাদেশ দলের স্কোয়াডেও ছিলেন তিনি। এশিয়া কাপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ দল থেকে ছিটকে গেলেও ২০১৯-২০ মৌসুমে বাংলাদেশের একটি ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ফের দলে ডাক পান তিনি। এরপর ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়