কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

মতিয়া চৌধুরী : নারী-পুরুষকে এক প্ল্যাটফর্মে দেখতে চাই

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নারী মানুষ; তাই মানুষ হিসেবেই স্বীকৃতি পাক এমন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে নারীরা যে এগিয়েছে এর পেছনের পথ সহজ ছিল না। তাই আমাদের সবার উচিত দায়িত্বশীল হওয়া বা দায়িত্বশীল আচরণ করা। কাউকে ছোট করে না দেখা। এ দেশের নারীরা আগামীর সম্ভাবনা। ভালো ব্যবহার করা, সুন্দর করে কথা বলা কিন্তু নারীদের দুর্বলতা না। এটা নারীদের সাহসিকতা, নারীদের সম্ভাবনা। আমরা নারী-পুরুষকে এক প্ল্যাটফর্মে দেখতে চাই।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘ডিজিটাল সাংবাদিকতা : নারীর চ্যালেঞ্জ ও ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মতিয়া চৌধুরী। ডিআরইউর সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ফ্রেন্ডশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান, বিডব্লিউসিসিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নাজমা জামালউদ্দিন। এ সময় ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিআরইউর সাবেক নারীবিষয়ক সম্পাদক আইরিন নিয়াজী মান্না। সঞ্চালনা করেন ডিআরইউর নারীবিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেঁজুতি।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউর অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম, ক্রীড়া সম্পাদক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ডিআরইউর নারী সদস্যদের জন্য নির্মিত কমনরুমের উদ্বোধন করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

মুক্তিযুদ্ধে নারীরা দুইভাবে নির্যাতিত হয়েছে উল্লেখ করে অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নারীর ওপর প্রথম যে নির্যাতন হয়েছে তা হলো তার সম্ভ্রমহানী। প্রথমে সে ভোগের সামগ্রী হিসেবে শিকার হয়েছে, তারপর দ্বিতীয় হচ্ছে নারীর জীবননাশ। এভাবেই নারীরা মুক্তিযুদ্ধে তাদের উৎসর্গ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে ছেলেরা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করেছে, যেটা মেয়েরা পারেনি। কিন্তু তারা পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছে। ভোটার লিস্টে বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম থাকার বিষয়টি দেশে প্রথম প্রচলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এটাই চাইব যে, নারী সে মানুষ; তাই মানুষ হিসেবেই স্বীকৃতি পাক। আর অন্য কিছু চাচ্ছি না। এমন না যে নারীদের অনেক কিছু দেয়া হয়েছে। যদি দেয়া হতোই তাহলে সচিবালয়ে ’৯৬ সাল পর্যন্ত কেন বেবি ডে-কেয়ার সেন্টারের জন্য অপেক্ষা করতে হলো? শেখ হাসিনাই বেবি ডে-কেয়ার সেন্টার প্রথম চালু করেছেন। এত বড় একটা ডিগ্রি নিয়ে মেয়েরা যখন চাকরি করতে আসে, তখন তার মনকে দুই ভাগ করে দেয়া হয়। একেতো সে বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে আসছে, অন্যদিকে অফিসের কাজে ভালো করে মন দিতে পারে না। শেখ হাসিনা স্লোগান দিয়ে বলেন না যে পাশে আছি। কিন্তু তিনি পাশেও থাকেন এবং কাছেও থাকেন। মায়ের মমতা দিয়ে মাথায়ও হাত রাখেন এবং পিঠেও হাত রাখেন। এটাই হচ্ছে আজকের সরকার প্রধানের নীতি।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ছেলেমেয়ে বললে সাধারণ মানুষ বোঝানো হয়। আর যদি মেয়েছেলে বলা হয় তখনই শুধু আমরা বুঝতে পারি যে মেয়েদের সম্বোধন করা হচ্ছে। এই ধরনের অসমতা বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।
রুনা খান বলেন, অনেকে বলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীরা ভালো করে কাজ করতে পারে না। কিন্তু আমি বলব এটা একদমই ভুল। আমি বিগত ২০ বছর ধরে কাজ করছি। আমাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। সবাই বলত এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে চোর, ডাকাতসহ অনেক খারাপ কিছু থাকে। কিন্তু আমি বলব সেসব সমস্যা থেকে আমাদের মানুষই রক্ষা করেছে।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকতা এখন আর হাতে কলমে নেই, ডিজিটালে প্রবেশ করেছে। ফলে যে কেউ চাইলেই তাদের তোলা ছবি বা খবর গণমাধ্যমে পাঠাতে পারে। তবে সামান্য কিছু নারী প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। নারীদের প্রতি সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো দরকার।
সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সভাপতি মুরসালিন নোমানীর নেতৃত্বে ডিআরইউর সামনে থেকে একটি র?্যালি বের হয়। র?্যালিতে ডিআরইউর সদস্য এবং ফ্রেন্ডশিপ এনজিওর সদস্যরা অংশ নেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ প্রকাশনা ‘কণ্ঠস্বর’র মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ অতিথিরা।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে ডিআরইউর নারী সদস্যদের জন্য নির্মিত কমনরুমের উদ্বোধন করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে বেসরকারি সংগঠন ফ্রেন্ডশিপ ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়