কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

বিস্ফোরণে আর কত প্রাণ ঝরবে?

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিস্ফোরণে ঝরছে তাজা প্রাণ। গুলিস্তানে মঙ্গলবারের ঘটনায় ২০ জন মারা গেছেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা ও গুরুতর আহতসহ মোট চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক মানুষ। এর আগে শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ নামের প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। এতে ৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন। সিলিন্ডার থেকেই ওই বিস্ফোরণের সূত্রপাত বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। গত রবিবার সকালে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বিস্ফোরণে তিনজন মারা যান। পরপর কয়েক দিনের ব্যবধানে ঢাকা-চট্টগ্রামে এমন ভয়াবহ তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা দেশবাসীকে শঙ্কায় ফেলেছে। বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে বেশ কয়েকটি কারণ সামনে আসছে। সেপটিক ট্যাংক, এসি, গ্যাসের লাইন, গাড়ি ও বাসার সিএনজি সিলিন্ডার, কারখানার বয়লার ও রাসায়নিক গুদামে এখন যেন বিস্ফোরণ ঘটনা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে করে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের ক্ষতিও হচ্ছে ব্যাপক। এতে এক বছরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহস্রাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন। গত কয়েক বছরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে গ্যাস বিস্ফোরণে কত পরিবারের যে সব শেষ হয়ে গেছে, তার হিসাব নেই। গত সেপ্টেম্বরে নারায়ণগঞ্জে একটি মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ৪০ জন মানুষ মারা যান। এর আগে চট্টগ্রামেও গ্যাস বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে কি? তদন্ত হলেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এমন উদাহরণ নেই। আমাদের দেশে দুই ধরনের তদন্ত হয়। একটি হলো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা। আরেকটি হলো দায়ী ব্যক্তিদের আড়াল করা। পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা দেখিয়ে দিল আমাদের চারপাশে কীভাবে ওঁৎ পেতে আছে মৃত্যু। উদ্বেগের বিষয় হলো, রাজধানীসহ সারাদেশে এ রকম বহু ভবনই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। বিভিন্ন ভবনে অগ্নিকাণ্ড, পুরান ঢাকায় রাসায়নিক বিস্ফোরণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিস্ফোরণ প্রভৃতি ঘটনা এর প্রমাণ। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাস লাইনের ত্রæটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। মানুষ অকালে প্রাণ হারাক- এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। পত্র-পত্রিকার খবর অনুসারে দেশের সড়ক-মহাসড়কে সিএনজিচালিত যানবাহনগুলোয় ৫ লাখেরও বেশি গ্যাস সিলিন্ডার ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে দেশে রূপান্তরিত ও আমদানিকৃত মিলিয়ে সাড়ে ৫ লাখ যানবাহন সিএনজিতে চলছে। এসব যানবাহনে ১ থেকে ৪টি পর্যন্ত সিলিন্ডার সংযোজিত হয়েছে। সে হিসাবে ৬ লাখের বেশি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে চলছে যানবাহনগুলো। গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষতি এড়াতে সবার সচেতনতা ও সতর্কতা জরুরি। তৎপরতা বাড়াতে হবে তদারকি সংস্থাগুলোকে। বিশেষ করে রক্ষণাবেক্ষণে মানুষকে আরো মনোযোগী হতে হবে। একমুহূর্তের অসতর্কতায় এগুলো থেকে ঘটে যেতে পারে এমন ভয়ংকর আরো বিস্ফোরণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়