কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

নীরব ঈশ্বরগঞ্জের প্রশাসন : নারী দিবসে বাল্যবিয়ের শিকার এক স্কুলছাত্রী

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন বাল্যবিয়ের শিকার হলো দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। গত বুধবার উপজেলার মাউজবাগ ইউনিয়নের বড়জোড়া গ্রামে ওই বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়।
প্রশাসন এবং জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করেও বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করা যায়নি ছাত্রীটিকে।
সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়জোড়া গ্রামের বাসিন্দা হলেন নূরুল ইসলাম। তার ছেলে স্থানীয় একটি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহেল মিয়া। সে একই গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিল বলে জানরা গেছে।
গত ৫ মার্চ সোহেল মিয়া ওই শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করে। ঘটনার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম ভূঁইয়া, সাবেক ইউপি সদস্য ইউসুফ আলী, আব্দুস ছালাম, আবুল কাসেমসহ আরো কয়েকজন সালিশের মাধ্যমে সোহেল মিয়ার সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করেন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা গত ৭ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্র্রেক্ষিতে থানার এসআই সাদী মোহাম্মদ ওইদিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সালিশকারী ও প্রভাবশালী মহলের চাপে আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই স্কুলপড়–য়া মেয়ের বিয়ে দিতে বাধ্য হন অসহায় বাবা।
বাল্যবয়ের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের চাপে বাধ্য হয়ে মেয়ের বাল্যবিয়ে দিয়েছি।’ স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, ‘সালিশে আমি ছিলাম। পরে শুনেছি স্থানীয় মসজিদের ইমাম শামছুল হক ওই বিয়ে পড়ান।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই সাদী মোহাম্মদ বলেন, ‘বাদী অভিযোগ দেয়ার পর আর যোগাযোগ করেনি। আমি অন্যত্র আছি। শুনেছি তারা বিয়ের আয়োজন করেছে।’
এদিকে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিষয়টি স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী আজিজুর রহমান হবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজা জেসমিনকে জানান। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মানবাধিকার কর্মীকে আশ্বস্ত করেন।
কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্বস্ত করলেও ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানান আজিজুর রহমান হবি।
৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে এসআই জাহাঙ্গীর ঘটনাস্থলে যান। তবে তিনি যাওয়ার আগেই বিয়ে পড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ওই প্রভাবশালীরা।
এ বিষয়ে এসআই জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিয়েবাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। সবাই পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজা জেসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এরপর আর কোনো আপডেট পাননি বলে জানান তিনি।
নারী দিবসে এভাবে জোর করে কেন বাল্যবিয়ে দেয়া হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন কথা বলতে পারছি না, পরে কথা বলব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়