কাতার নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : প্রবাসে অপরাধে জড়ালে দায় নেবে না সরকার, দালালের মাধ্যমে কেউ বিদেশমুখী হবেন না

আগের সংবাদ

বিপর্যয় সামালের সক্ষমতা কম : ইঞ্জিনিয়ার ও প্যারামেডিকেল টিম নেই, প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম

পরের সংবাদ

ডাচ-বাংলার টাকা ছিনতাই পরিকল্পিত, ৯ কোটি উদ্ধার : মানিপ্ল্যান্ট লিংকের ২ পরিচালক আটক

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরায় দিনে-দুপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ৯ ঘণ্টার মধ্যে এর একটি বড় অংশ উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। উদ্ধার করা টাকার পরিমাণ আনুমানিক ৯ কোটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে খিলক্ষেত এলাকা থেকে টাকা উদ্ধার করে ডিবির সদস্যরা। টাকা ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়। এ সময় টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানিপ্ল্যান্ট লিংকের ২ পরিচালকসহ ৭ জনকে আটক করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানানো হয়নি।
ডিবি পুলিশ বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিত। ছিনতাইকারীরা অনেক আগে থেকেই টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছিল। গতকাল রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাকি টাকা উদ্ধারে ক্ষিলখেত এলাকায় অভিযান চলছিল। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানায় ডিবি পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সকালে টাকা বহনকারী গাড়িটি মিরপুর-১২ নম্বর থেকে রওনা দেয়। উত্তরায় যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীরা গাড়িটির থামায়। গাড়িতে ৬ জন লোক ছিল। ছিনতাইকারীরা তাদের মারপিট করে টাকার ৪টি বাক্স নিয়ে আরেকটি গাড়িতে করে পালিয়ে যায়। বাক্সগুলোতে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা ছিল।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাপর পরপরই ডিবির টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে টাকা উদ্ধার ও ছিনতাইকারীদের ধরতে কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে উত্তরা এলাকা থেকে পালানোর সময় ৩টি বাক্সসহ ৭ জনকে আটক করা হয়।
টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি পরিকল্পিত জানিয়ে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, মানিপ্ল্যান্ট লিংক সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের টাকা আনা-নেয়ার বিষয়টি ছিনতাইকারীরা অনেক দিন ধরে অনুসরণ করছিল। তবে ছিনতাইকারীদের হাতে ছিল না কোনো অস্ত্র।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। মানিপ্ল্যান্ট লিংক সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের দুজন পরিচালকসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত বলা যাবে।
গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর উত্তরার তুরাগ থানাধীন ১১নং সড়কে ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী মানিপ্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের গাড়ি থেকে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়েছিল।
পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বদরুল আলম জানান, সকাল ৭টার দিকে সিকিউরিটি কোম্পানির মাইক্রোবাসে করে মিরপুরের ডিওএইচএস থেকে সোয়া ১১ কোটি টাকা নিয়ে সাভারের ইপিজেড এলাকায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিভিন্ন বুথের উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথে উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশে এক দল ছিনতাইকারী একটি কালো রঙের হাইয়েস মাইক্রোবাস নিয়ে তাদের গতিরোধ করে। এরপর ছিনতাইকারী দলের ১১ জন গাড়ি থেকে নেমে ৫ জনকে জিম্মি করে ৪ জনকে রাস্তায় মারধর করে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। তখন

গাড়িতে একজন ছিল। পরে ছিনতাইকারীরা সুবিধামতো স্থানে নিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানির মাইক্রোবাসের দরজা ভেঙে ট্রাংকসহ ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা কালো মাইক্রোবাসে তুলে পালিয়ে যায়। এডিসি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে কোনো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিয়া বাড়ির ১১ নম্বর ব্রিজের দক্ষিণপাশে ব্যারিকেড দেয়া। উভয় পাশের গাড়ি চলাচল করে উত্তর পাশের রাস্তা দিয়ে। ঘটনাস্থল থেকে ২০০ গজ পূর্বে ১৫ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্ব পাশের জসিম উদ্দিনের খাবার হোটেল। জসিম উদ্দিন বলেন, তিনি সকাল ৬টায় হোটেল খুলেছেন। ব্রিজের ওপার হওয়ায় তারা বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি। সকাল ৯টার দিকে যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসা শুরু করেন তখন বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি আরো বলেন, যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানে সকালে গাড়ি চলাচল খুব কম থাকে।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে থানা পুলিশ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায়। ছিনতাইয়ের ঘটনার খবর পেয়ে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন এরপর ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। কোম্পানির ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এতে আমাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ টাকা বহন ও এটিএম বুথে জমার দায়িত্ব টাকা বহনকারী সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানের। আবার এই টাকা বিমার আওতায় রয়েছে। ফলে এ নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়