এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

সিলেটে মামলার বাদী আপন ভাই যখন ‘খুনি’

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফারুক আহমদ, সিলেট ব্যুরো : গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় বরইকান্দিতে টেকনিক্যাল রোডের একটি অটো রাইসমিলের সামনের নদীর তীর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সাজ্জাদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নদী থেকে মরদেহ উদ্ধারের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পেরে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে থানা ও ওসমানী মেডিকেলে যান মৃতের ভাই জাহাঙ্গীর আলী (২৭)। মরদেহ শনাক্তের পাশাপাশি ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে ২২ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন।
এমন একটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে এ হত্যা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলী নিজেই খুন করেছেন তার ভাই সাজ্জাদ আলীকে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ল²ীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে সাহাজানকে (৩৯), জালালাবাদ থানাধীন বস্তন্তরগাঁও এলাকার মৃত ছোরাব আলীর ছেলে সিরাজ আলী (৪২) ও জাহাঙ্গীর আলী (২৭)। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপশহরস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজা পিপিএম।
পুলিশ জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে দক্ষিণ সুরমায় বরইকান্দিতে টেকনিক্যাল রোডের একটি অটো রাইসমিলের সামনের নদীর তীর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সাজ্জাদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নদী থেকে মরদেহ উদ্ধারের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পেরে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে থানা ও ওসমানী মেডিকেলে যান জাহাঙ্গীর আলী (২৭)। মরদেহ শনাক্তের পাশাপাশি ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে ২২ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন।
এরপর থেকে পুলিশ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত নিয়ে অভিযানে নামে। মামলা দায়েরের পর পুলিশের তদন্তে সাজ্জাদ আলী হত্যার নেপথ্যে জাহাঙ্গীর আলীর জড়িত থাকার তথ্য পায় পুলিশ। ভাই হত্যার দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। সাজ্জাদ আলী হত্যার ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
উত্তরাধিকারভাবে প্রাপ্ত জায়গা-জমি ভাগবাটোয়ারা করার তাগিদ দেয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এর জেরেই হত্যা করা হয় তাকে। ঘটনাকে আড়াল করার জন্য জাহাঙ্গীর আলী নিজেই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলা বাদী জাহাঙ্গীর আলী।
পুলিশ আরো জানায়, তদন্তের এক পর্যায়ে সন্দিগ্ধ হিসেবে ল²ীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে সাহাজানকে (৩৯) জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। পুলিশের তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়া শুরু করে। পুলিশ তদন্ত নেমে নিহত সাজ্জাদ আলীর বসবাসের কক্ষে গিয়ে তার কোনো কাপড় পায়নি পুলিশ। পরবর্তীতে বাসার ছাদের উপর কাপড় শুকানোর রশির কিছু অংশ সংগ্রহ করে নিহত সাজ্জাদ আলীর হাত-পা বাঁধার রশির সঙ্গে মিল পায় পুলিশ। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হত্যা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলীকে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তিনি পুলিশকে প্রাথমিকভাবে নিহত সাজ্জাদ আলীকে হত্যার কথা জানালে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জালালাবাদ থানাধীন বস্তন্তরগাঁও এলাকার কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে রশিও উদ্ধার করে পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়