এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণ : সবজি বিক্রেতা বাবার স্বপ্ন আইসিইউতে

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাজলা এলাকায় সবজি বিক্রি করেন জাহাঙ্গীর আলম সরদার। পরিবার নিয়ে থাকেন ওই এলাকাতেই। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বেশ আগেই। তাই বিএ পড়–য়া ২০ বছর বয়সি একমাত্র ছেলে জাহান সরদারই ছিল জাহাঙ্গীর দম্পতির স্বপ্নপূরণের একমাত্র অবলম্বন। পড়াশোনা শেষে বড় চাকরি নিয়ে বাবা-মায়ের কষ্ট ঘোচাবে এমন স্বপ্নে যখন দিন কাটছিল সবার, তখন তাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে আসে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনা। সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ থেকে ফেরার পথে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত জাহান এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। সবজি বিক্রেতা ওই বাবার স্বপ্ন এখন আইসিইউতে ৫০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। শুধু জাহান সরদারই নন, বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে দগ্ধ বা আহত হয়ে ভর্তি সবার অবস্থাই এখন দুর্বিষহ।
গত মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানী গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে একটি ৭ তলা ভবনে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ২০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
সবার মৃতদেহ শনাক্ত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতেই একে একে মৃতদেহ শনাক্ত করে লাশ নিয়ে যান স্বজনরা। এছাড়া গতকাল বুধবার আরো দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন- মমিন উদ্দিন সুমন (৪৪) ও রবিন হোসেন শান্ত (২০)।
গত মঙ্গলবার ১৮ জনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- মো. সুমন (২১),

ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস (৬০), নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫৫), হৃদয় (২০), সম্রাট (১৯) ও সিয়াম (১৮)।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে আমরা ১৬টি লাশ হস্তান্তর করি। আর গতকাল বুধবার উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহও হস্তান্তর করা হয়। এর মাঝে মঙ্গলবার আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই স্বজনদের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া দুজনের নামপরিচয় লিপিবদ্ধ করে গেছেন। এ দুটিও আমরা হস্তান্তর হিসেবে ধরেছি। সব মিলিয়ে ২০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১০ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রাখা হয়েছে। তারা হলেন- ১২ শতাংশ দগ্ধ হাসান (৩২), ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ইয়াসিন (২৬), ৯৮ শতাংশ দগ্ধ মুসা (৪৫), ৮ শতাংশ দগ্ধ খলিল (৫০), ৮০ শতাংশ দগ্ধ আজম (৩৬), ২০ শতাংশ দগ্ধ ওলি শিকদার (৫৫), ১৮ শতাংশ দগ্ধ বাবলু (২৫), ১৫ শতাংশ দগ্ধ আল আমিন (২৫), ৪০ শতাংশ দগ্ধ বাচ্চু মিয়া (৫৫), ৫০ শতাংশ দগ্ধ জাহান (২৫)। আর মোস্তফা (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে বার্ন থেকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে রয়েছেন হাসান, ইয়াসিন ও জাহান। তাদের শরীরে দগ্ধ হওয়া ছাড়াও জখম হয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন ব?লেন, যারা আছে তা?দের কেউই শঙ্কামুক্ত নয়। কারণ কারো শরীরের ৮০ শতাংশ, কারো ৯০ শতাংশ বা কারো ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। সবারই শ্বাসনালি পু?ড়ে গে?ছে। আমরা কাউকেই শঙ্কামুক্ত বল?তে পারব না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়