এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

নারী বৈষম্য দূর করার আহ্বান দুই টাইগ্রেসের

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সমাজের সব মহান কীর্তিতেই পুরুষদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে অবদান রাখছেন নারীরা। সমাজ ও দেশের মানোন্নয়নে তারা প্রতি ক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখছেন। তাদের অবদান ও ভূমিকার প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রতি বছরই ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ দূর করার লক্ষ্যে দেশ-বিদেশের সর্বত্র আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। এই দিনে নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এই আহ্বান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররাও। নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে তারা সমাজে সমতায়ন প্রতিষ্ঠা করার বার্তা দিয়েছেন।
সর্বস্তরের জনগণকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি একটি ভিডিও বার্তা দেন। বার্তায় তিনি বলেন, ‘সমাজ অনেক সময় নির্ধারণ করে দেয় কোন কাজটা ছেলেদের, আর কোনটা মেয়েদের। যা তাদের একটি গণ্ডির ভেতর আটকে রাখার চেষ্টা। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে নারীদের কোণঠাসা করে না রেখে, তাদের পছন্দের ক্যারিয়ারের পথটাকে সহজ করে দিতে হবে। যেন সে স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তাই সমান অধিকারই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সমতায়নের। সবাইকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা।’
নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পাকিস্তানে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে। সেই ম্যাচে খেলার জন্য পাকিস্তানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার জাহানারা আলম। নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নারীরা আজ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি। পথ অতটা সহজ ছিল না। প্রত্যেকের সফলতার পেছনে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সংগ্রামের গল্প। তবে, সমাজ থেকে এখনো বৈষম্য দূর হয়নি। নারীর অগ্রযাত্রা নিশ্চিতে এবং সমতার সমাজ গড়তে সমতায়ন আনতে হবে।’ নারীদের সমাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯১১ সালে নারী দিবস প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং ১৯১৪ সাল থেকে কয়েকটি দেশ এই দিবস পালন শুরু করে। শতবর্ষেরও অধিক সময় যাবৎ এই দিবস পালন করা হলেও এখন পর্যন্তও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি নারীদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার। এ প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় দলের আরেক পেসার মারুফা আক্তার বলেন, ‘নারীরা প্রাপ্য সম্মানটুকু পেতে চায়। ঘরে, ঘরের বাইরে, পরিবারে কিংবা কর্মস্থলে শুধু সমঅধিকারই যথেষ্ট নয়, সব ক্ষেত্রে নারীর প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। তাহলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পূর্ণতা পাবে।’
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের আটকে রাখা হয় সমাজের নানা কুসংস্কারের প্রতি বিশ্বাস রেখে। নারীর প্রতি সমাজের কুসংস্কার ও নীচু দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আহ্বান জানিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের অধিনায়ক দিশা বিশ্বাস বলেন, ‘আজ নারীদের সফলতার পথে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কুসংস্কার ও সমাজভীরু দৃষ্টিভঙ্গি। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নারীদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। ছিনিয়ে আনতে হচ্ছে বিজয়। সমাজে সমতায়ন প্রতিষ্ঠিত হোক এই প্রত্যাশায় সবাইকে জানাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা। সমাজে সমতায়ন প্রতিষ্ঠা হোক।’
নারীদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের দোহাই দিয়ে আটকে রাখা হয় বলে সফলতার স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে পারছে না অনেক দেশ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দখলদারিত্বের মুক্তির লড়াই করেছেন বাঙালি নারীরা।
মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় থেকে শুরু করে অস্ত্র হাতে যুদ্ধও করেছেন তারা। বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেটাররা যেমন দেশের নাম বিশ্ব দরবারে উঁচিয়ে তুলেছেন, তেমনি নারী দলও দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন। সম্প্রতি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে পরাজিত করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা গ্রুপপর্ব শেষ করেছিলেন।
সমতায়ন প্রতিষ্ঠা করে সমাজে নারীদের চলার পথ মসৃণ করার প্রত্যাশা প্রকাশ করে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের ক্রিকেটার স্বর্ণা আক্তার বলেন, ‘পথে-ঘাটে, গণপরিবহনে, কর্মক্ষেত্রে, এমনকি ঘরের নারীরাও এখন অনিরাপদ। বন্ধ হয়নি নারীর প্রতি নির্যাতন। এত সব বাধার পরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে। আমাদের এগিয়ে চলার পথ মসৃণ করতে প্রয়োজন সমতায়ন। এই আশা ব্যক্ত করে সবাইকে জানাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা।’
নারী দিবসের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, ‘আসুন উৎযাপন করি নারী দিবস এবং নিশ্চিত করি নারীদের সমান এবং বিশেষাধিকার, তার পাশাপাশি পুরুষ হিসেবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো নারী যেন সমান অধিকার ও সুসম্মান থেকে বঞ্চিত না হয়।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়