এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

কুবিতে বহিরাগতদের হামলায় ৩ ছাত্রলীগ নেতা আহত : প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কুবি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : স্থানীয় ছাত্রদল নেতা ও বহিরাগতদের দিয়ে নিজেদেরই ৩ নেতাকে বেধড়ক মারধর করল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। গতকাল বুধবার দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আল আমিন কনফেকশনারির সামনে এ ঘটনা ঘটে। মারধরকারীরা হলেন- কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা রনি মজুমদার এবং কুবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার

প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব চন্দ্র দাস, অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাওসার হোসেনসহ ১০-১২ জন ছাত্রদল-ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত অভিযুক্ত বিপ্লব চন্দ্র দাস, স্বজন বরণ বিশ্বাস, ইকবাল খান ও অন্য নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রোক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা সমর্থিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন, সালমান, সাদ্দাম, সায়েমসহ কয়েকজন আল আমিনের দোকানে বসে নাস্তা করছিলেন। এ সময় রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত ১২ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বেলতলি অংশ অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। এতে মহাসড়কের দুইপাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং প্রোক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন। নেতাকর্মীরা ‘সুষ্ঠু বিচার করে দে, না হয় গদি ছেড়ে দে’, ও প্রোক্টরের দুর্নীতি মানিনা না মানব না’, ‘প্রোক্টরের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও; এক দফা এক দাবি প্রোক্টরের পদত্যাগ চাই’ আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান হৃদয় ও বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহান।
এর আগে হামলায় শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান, বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহানের হাত ভেঙে গেলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে হত্যা মামলার আসামি বিপ্লব চন্দ্র দাসের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন।
গত ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টায় রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত বিপ্লব চন্দ্র দাসসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে উঠতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাধা প্রদান করেন। পরে এক সহকারী প্রোক্টরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর জেরে ৭ মার্চ এনায়েত উল্লাহ এবং সালাম চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে। বহিষ্কারের পরদিনই এ মারধর পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রোক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানারও যোগসাজেশ রয়েছে বলে দাবি করে তারা তার পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাস গেটে অবস্থান নেন।
ভুক্তভোগী সালমান চৌধুরী বলেন, আমাকে বিপ্লব চন্দ্র দাস ডেকে নিয়ে যায় এবং প্রশাসন বহিষ্কার করলেও কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছি জানতে চেয়ে আমাকে এবং হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহকে মারধর শুরু করেন।
এদিকে বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইন্ধন হিসেবে মন্তব্য করে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হাসান বিদ্যুৎ বলেন, খুনি বিপ্লব ও ছাত্রদলের লোকজন কিভাবে একজন হল ছাত্রলীগের সেক্রেটারিকে মারধর করে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইন্ধনে তারা আজ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আধা ঘণ্টার মধ্যে যদি এর সমাধান না আসে তাহলে আমরা প্রোক্টরের পদত্যাগ চাই।
এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রোক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর সামনে দিয়েই শতাধিক বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অস্ত্রের মহড়া দেয় ছাত্রলীগের একটি অংশ। ক্যাম্পাসে প্রবেশের পরই ফাঁকা গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। এ অংশের নেতৃত্বে ছিলেন খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি এবং মারধরকারী বিপ্লব চন্দ্র দাস।
এ বিষয়ে কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক এসএম আতিকুউল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। বহিরাগতরা যেহেতু আক্রমণ করেছে তাই আমরা তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করব।
প্রোক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এসব বিষয়ে আমার কোনো ইন্ধন নেই। যারা এমনটি বলছে তাদের এটা প্রমাণ করতে হবে। প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি, এটা তাদের বিষয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়