এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতন : ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইবি (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দ্বারা র?্যাগিংয়ের নামে প্রথম বর্ষের ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার পর ২৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো উদ্ধার হয়নি হলের সিসিটিভি ফুটেজ।
সেদিনের ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজগুলো উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় দেশরতœ শেখ হাসিনা হল প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে হাইকোর্ট তার পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনাপত্রে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
গত ৬ মার্চ হাইকোর্ট ফুলপরীর ওপর নির্যাতনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনাপত্র প্রকাশ করেছে। হাইকোর্ট বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার, সুপারিনটেনড্যান্ট ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনাপত্রে হল প্রশাসনের সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহে ব্যর্থতায় আলাদা করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। অভিযুক্ত হালিমা আক্তার উর্মীর মোবাইলে ধারণকৃত নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দ্রুত উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল আছে কিনা এ ব্যাপারে স্মুথ অপারেশনের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
হলসূত্রে জানা যায়, দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের বারান্দা, ডাইনিং, অফিস, করিডরসহ মোট ১২টি সিসিটিভি রয়েছে। যার ফুটেজ হল প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা। তদন্তে ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী সেদিন রাতে ডাইনিংয়ে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। সে হিসেবে ডাইনিংয়ের সিসিটিভিতে ভিডিও ফুটেজ থাকার কথা।
বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি হল কমিটির কাছে ফুটেজ চাইলে তা সরবরাহ করতে পারেনি। হল থেকে জানানো হয়, টেকনিক্যাল ত্রæটির কারণে হল কর্তৃপক্ষ ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারেনি। সেজন্য হল প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলকে দায়িত্ব দিয়েছিল। আইসিটি সেলও উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার মতো এমন প্রত্যেকটি ডিভাইসে বায়োসের ব্যাটারি লাগানো থাকে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরও যেন ক্যামেরা সচল থাকে এজন্য এটা লাগানো হয়। হলের ওই সিসিটিভি ক্যামেরায় লাগানো বায়োসের ব্যাটারিটা আগেই নষ্ট হয়ে গেছে, যেটা হয়তো হলের কেউ লক্ষ্য করেনি। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিশিয়ান দিয়ে এ সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব নয়। বাইরে থেকে অভিজ্ঞদের আনলে হয়তো সম্ভব হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনাপত্রের পূর্ণাঙ্গ কপি আমরা হাতে পেয়েছি। কপি পেয়ে রেজিস্ট্রারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। ক্যাম্পাস খুললে অফিসিয়ালি বিষয়টি জানা যাবে। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছে সবগুলো যথাযথভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সে অনুযায়ী কাজ করছি। আদালতের নির্দেশপালনে আমরা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।’
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দেশরতœ শেখ হাসিনা হলে র‌্যাগিংয়ের নামে ফুলপরীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গত ১ মার্চ সানজিদা অন্তরাসহ পাঁচ অভিযুক্তকে ক্যাম্পাস থেকে সাময়িক বহিষ্কার, হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার, ভুক্তভোগী ফুলপরীর নিরাপত্তা ও তার পছন্দের হলে উঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে সেদিনই হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করে প্রশাসন।
এছাড়া গত ৪ মার্চ পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কেন তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে তাদের হল ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া ফুলপরীকে তার পছন্দের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সিটের ব্যবস্থাও করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়