সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

সোনামসজিদ স্থলবন্দর : পণ্য আমদানি কমায় রাজস্ব আহরণে ধস

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানি কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে আমদানি কমায় রাজস্ব আদায়ে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ঘাটতি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস বিভাগ বলছে- এ বন্দর দিয়ে ফল আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৩০৪ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, ডলার সংকট, এলসি খোলায় ব্যাংকের কড়াকড়ি, সর্বোপরি বৈশ্বিক মন্দার কারণে কমেছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা এটি। আমদানিকারকদের দাবি- কয়েক মাস ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) খোলা যাচ্ছে না। ডলার সংকটের কথা বলে ব্যাংকগুলো নতুন ঋণপত্র (এলসি) খুলছে না। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আমদানিতে।
কাস্টমস বিভাগ বলছে- সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি সরকারও রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এই স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৩০৪ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এ সময় রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৮১ কোটি ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। যদিও ভারতের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছিল এ স্থলবন্দরটি।
তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানি-রপ্তানি কম হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রধান আমদানি পণ্য ফল আমদানি একবারে কম। সোনামসজিদ স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগেও এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০টি ভারতীয় ট্রাক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করত। সেই সংখ্যা কমে এখন ১৫০-১৬০টিতে নেমেছে।
এ ব্যাপারে সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারকরা বলছেন, ভারত থেকে স্থলপথে আমদানি পণ্যের বড় অংশ আসে এ পথে। কিন্তু এলসি সংকট ও দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে বিরাজমান সমস্যার কারণে গত আট মাস থেকে ভারতীয় পণ্য আমদানিতে ছন্দপতন ঘটেছে। এ কারণে রাজস্ব আদায়ও অস্বাভাবিক হারে কমেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ ভোরের কাগজকে বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। এই চিত্র শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর নয়। সারাদেশের চিত্র একই। পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দর মূলত আমদানিনির্ভর বন্দর। তবে চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন কারণে আমদানির পরিমাণ কমেছে। গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে পণ্য আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ ভোরের কাগজকে বলেন, এ বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করছেন না ব্যবসায়ীরা। মূলত এ কারণেই রাজস্ব আহরণে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এলসি সংকটের কারণে এ বন্দরে আমদানি কমেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়