সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

সতীর্থ হলেও যেখানে মেসি-এমবাপ্পে দ্বৈরথ

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেসির অ্যাসিস্ট থেকে এমবাপ্পের গোল কিংবা মেসির গোলে এমবাপ্পের অ্যাসিস্ট। পিএসজিতে এরকম দৃশ্য দেখা যায় অনেক ম্যাচেই। ক্লাব সতীর্থ হিসেবে এই দুই তারকার একে অপরের গোল উদযাপনের দৃশ্যও ধরা পড়ে দর্শকদের চোখে। তবে এর বাইরেও ব্যক্তিগত কিংবা দলীয় অর্জনে মেসি এবং এমবাপ্পে একে অপরের প্রতিদ্ব›দ্বী।
পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। শেষ বয়সে এসেও খেলছেন শৈল্পিক ফুটবল। যে কোনো সময় বিদায় বলে দিতে পারেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। আর এমবাপ্পের ক্যারিয়ার মাত্র শুরুর দিকে। ২০১৮ বিশ্বকাপের নিজের জাত চেনানোর পর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন ২০২২ বিশ্বকাপেও। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতেছেন এমবাপ্পে। শুরুর দিকে মেসিও ছিলেন দুর্দান্ত। দুই তারকার জন্ম দুই মহাদেশে হওয়ার পরও এই দুই তারকার দ্বৈরথ দেখেছে বিশ্ব। সামনে রয়েছে আরেকটি দ্বৈরথ দেখার সুযোগ। কিন্তু কোথায়?
বিশ্বকাপের কথাই ধরা যাক। কাতারে আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের দ্বৈরথ দেখেছে পুরো বিশ্ব। যেখানে দেখা গিয়েছে মেসি-এমবাপ্পে দ্বৈরথও। টুর্নামেন্টে দুজনই ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। দুজনই দলকে ফাইনালে তুলতে বড় অবদান রাখেন। সমান সংখ্যক গোল নিয়ে দলকে তোলেন ফাইনালে। এরপর গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এই দুই তারকার লড়াই শুরু হয়। পরে অবশ্য মেসিকে হারিয়ে গোল্ডেন বুট জিতে নেন এমবাপ্পে। মাঠে নামার আগে সমান ৫ গোল ছিল তাদের। মাঠে নেমেই স্পট কিক থেকে গোল করেন মেসি। এরপর ম্যাচের ৮০ মিনিটে গোল করে আবারো সমান ৬ গোলের মালিক হন তারা দুজন। এর পরের মিনিটে গোলে করে এগিয়ে যায় এমবাপ্পে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত মিনিটে গোল করেন মেসি। আবার সমতা আসে। শেষ পর্যন্ত স্পট কিক থেকে গোল করে এই দ্বৈরথে বিজয়ী হন এমবাপ্পে। পুরো টুর্নামেন্টে ভালো খেলার সুবাদে গোল্ডেন বলের লড়াইয়েও দ্বৈরথ দেখা যায় এই দুই তারকার মাঝে। তবে এবার গোল্ডেন বুটজয়ী এমবাপ্পেকে হারিয়ে গোল্ডেন বল জেতেন মেসি। এরপর বিশ্বকাপ দ্বৈরথেও এমবাপ্পের দল ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় মেসির আর্জেন্টিনা।
এ পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলে একটিতে শিরোপা জিতেছেন মেসি। আর মাত্র দুটি বিশ্বকাপ খেলেই শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন এমবাপ্পে। ভবিষ্যতে হয়তো শিরোপার দ্বৈরথে মেসিকে ছাড়িয়ে যাবেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপের পর এই দুই তারকার দ্বৈরথ দেখা যায় ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে। পুরো বছর ভালো খেলার সুবাদে সেরা তিনে মনোনয়ন পান তারা। বিশ্বকাপের মতো এখানেও এমবাপ্পেকে হারিয়ে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মেসি। এই দ্বৈরথে ছিলেন বেনজেমাও। তিনজনের মধ্য থেকে ৫২ ভোট পেয়ে প্রথম হন মেসি। দ্বিতীয় হওয়া এমবাপ্পে পান ৪৪ ভোট ও তৃতীয় স্থানে থাকা বেনজেমা পান ৩৪ ভোট।
লিগ ওয়ানের শেষ ম্যাচে একসঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন মেসি এবং এমবাপ্পে। গোলের দেখা পেয়েছেন দুজনেই। দুটি মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন তারা। পিএসজির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এমবাপ্পে আর ক্লাব ক্যারিয়ারে এক হাজার গোলে অবদান রেখেছেন মেসি। ২০১৭ সালে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর মাত্র ২৪৭ ম্যাচ খেলেই সর্বোচ্চ ২০১ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। আর এই ম্যাচে এক গোল করার সুবাদে ক্লাব ক্যারিয়ারে ৭০১ গোল ও ২৯৯ অ্যাসিস্ট নিয়ে ১০০০ গোলে অবদান রাখেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এই দুই ক্লাব সতীর্থের সামনে আরো একটি দ্বৈরথ রয়েছে। এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে দেয়া হবে ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। গত দেড় যুগ ধরে এ ট্রফিটি নিজেদের করে নিয়েছিলেন মেসি ও রোনালদো। মাঝখানে লুকা মদ্রিচ একবার জিতে নেন এই পুরস্কার। আর সর্বশেষ ব্যালন ডি’অর জেতেন করিম বেনজামা। তবে এবার দ্বৈরথ হবে মেসি এবং এমবাপ্পের মধ্যে। হয়তো এটিই হতে পারে এই দুই তারকার শেষ দ্বৈরথ। মেসি তার ক্যারিয়ারে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন ৭টি। এমবাপ্পে এখনো একটিও না জিতলেও ভবিষ্যতে জিততে পারেন। তবে মেসিকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। মেসিও হয়তো আর দীর্ঘ করবেন না তার পেশাদার ক্যারিয়ার। ক্লাবের সতীর্থ হিসেবে বেশিদিন একসঙ্গে দেখা যাবে না তাদের। এখন অপেক্ষা করার পালা শেষ দ্বৈরথে বিজয়ী হবেন কে? মেসি নাকি এমবাপ্পে!
– আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়