সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

সংসদ নির্বাচন : ‘হিজড়া’ পরিচয়ে অংশ নেয়ার বাধা দূর

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী ও পুরুষের পাশাপাশি ‘হিজড়া’ পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীরা। সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ পরিচিতির জায়গায় মহিলা ও পুরুষের পাশপাশি প্রথমবারের মতো ‘হিজড়া’ শব্দটিও যুক্ত করতে চলেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করে বিধানটি যুক্ত করেছে সংস্থাটি।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত রবিবার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর ৯৪ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিধিমালার ১১ বিধি অধিকতর সংশোধন করল নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার তা গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অংশের দ্বিতীয় খণ্ডে ১১ নম্বর বিধিটি টিক চিহ্ন দিয়ে পূরণ করতে হয়। এই বিধিতে প্রার্থীর লিঙ্গ পরিচিত উল্লেখ করার বিধান রয়েছে। যেখানে আগে পুরুষ ও মহিলা ছিল, এখন যুক্ত হলো ‘হিজড়া’।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে গত ৩০ নভেম্বর সাক্ষাৎ করে ‘হিজড়া’ স¤প্রদায়ের উন্নয়ন সংগঠন ‘সুস্থ জীবন’। সংগঠনের চেয়ারম্যান পার্বতী আহমেদ এ সময় তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দাবি তোলেন, ‘জাতীয় সংসদে নারী আছে, পুরুষ আছে, আমরা কই? কাজেই আমাদের একজন দরকার’।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের পর কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে। পরবর্তীতে আইনে কিভাবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে বিষয়টিও খুঁজে বের করেন। যার ফলশ্রæতিতেই আনা হলো সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংশোধন। এই সংশোধনের ফলে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব পরিচয়েই সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র থেকেও যেমন তারা প্রার্থী হতে পারবেন, তেমনি দল থেকেও এই পরিচয়ে প্রার্থী হতে পারবেন।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের বিধিমালায় এই সংশোধন আনা হলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালায় এখনো বিষয়টি যুক্ত করা হয়নি। যদিও এরই মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের নারী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা গেছে।
হিজড়া জনগোষ্ঠী দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে কে এম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো আইন সংশোধন করে ‘হিজড়া’ শব্দটি ভোটার নিবন্ধন ফরমে যোগ করেন। বর্তমানে ইসির সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী, দেশে হিজড়া ভোটার ৮৩৭ জন। ২০১৯ সালের আগে হিজড়াদের ভোটার হতে হলে মহিলা কিংবা পুরুষ, এই দুটির যে কোনো একটি লিঙ্গ বেছে নিতে হত। এতে পরিচয় শনাক্তের জন্য সিভিল সার্জনের প্রত্যয়ন প্রয়োজন হতো, যা তাদের নানা বিড়ম্বনায় ফেলত। এর পর থেকে তৃতীয় লিঙ্গের অর্থাৎ ‘হিজড়া’ জনগোষ্ঠীর জন্য ভোটার হওয়ার সুযোগ ঘটলেও এখন থেকে নির্বাচনে হিজড়া হিসেবে অংশ নিতে আর কোনো বাধা রইল না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়