সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

মাদক মামলা : পুলিশ ও আইনজীবীসহ ১৩ জনের দণ্ড ফেনীতে

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শুকদেব নাথ তপন, ফেনী থেকে : ফেনীর বহুল আলোচিত ৬ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলায় ৫ পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় দেন। রায়ে প্রধান আসামি এসআই মাহফুজসহ ৬ জনকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১ লাখ টাকা জরিমানা, ৬ জনকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ১ জনকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংস বনিক জানান, রায়ে এএসআই মো. মাহফুজুর রহমান, এসআই মো. বিল্লাল হোসেন বেলাল, এসআই মো. আশিকুর রহমান আশিক, সালেহ আহমদ, ফরিদুল আলম ফরিদ কোম্পানী, মো. জাফর কোম্পানীর ১৫ বছরের কারাদণ্ড ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এডভোকেট জাকির হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, কনস্টেবল মো. শাহীন এসবি শাহীন, মো. আব্দুল মোতালেব মুহুরী, কনস্টেবল কাশেম আলী কাশেম, গিয়াস উদ্দিন গেসুর ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। মো. জাবেদ আলীর ৫ বছরের কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৮ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন। ৫ জন পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- আবুল কাশেম, আব্দুল মোতালেব মুহুরী, বিল্লাল হোসেন বেলাল, আশিকুর রহমান আশিক ও জাফর কোম্পানি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহিদ হোসেন কমল জানান, আমরা এ রায়ের বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করব। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংস বণিক। আসামিপক্ষে ছিলেন এডভোকেট ফয়েজুল হক মিলকী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আনেয়ারুল ইসলাম ফারুক, জাহিদ

হোসেন কমল, মীর মোশাররফ হোসেন মানিক ও তাজুল ইসলাম ভূঞা।
এপিপি দ্বিজেন্দ্র কুমার কংস বণিক জানান, ১ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফের আদালতে এ মামলার পূর্ণাঙ্গ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রধান আসামি পুলিশের বরখাস্তকৃত এএসআই মাহফুজসহ ৮ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি একদিনে তদন্ত কর্মকর্তাসহ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলায় এএসআই মাহফুজসহ ৫ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে দায় স্বীকার করেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পিপি এডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ জানান, ২০১৫ সালের ২১ জুন শহরতলীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইয়াবার ট্রানজিট পয়েন্ট লালপোলে একটি শিশুকে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকার নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই মাহফুজুর রহমান। র?্যাব-৭ এর একটি দল গাড়িটি ধাওয়া করে তাকে আটক করে। পরে তার গাড়ি থেকে ৬ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই মাহফুজুর রহমান ও গাড়িচালক জাবেদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। র?্যাবের পক্ষ থেকে নায়েক সুবেদার মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২ জুন ফেনী মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ফেনী মডেল থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর মো. শাহীনুজ্জামানকে। তিনি ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত সন্তুষ্ট না হলে পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ২২ মে দ্বিতীয় মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর আবুল বশর অভিযোগপত্র জমা দিলে আদালত তা গ্রহণ না করে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। ১৩ জনকে আসামি করে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তৃতীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন। চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি এএসআই মাহফুজুর রহমানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে ১০ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়