সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

নন্দীগ্রামে ১৮ বছর ধরে শিকলে বন্দি মজিদুল

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের রণবাঘা মথুরাপুর গ্রামের মজিদুল ইসলাম (৪৫) প্রায় ১৮ বছর ধরে নিজ বাড়িতেই শিকলবন্দি। দুই পায়ে লোহার বালা এবং একটি লম্বা শিকল। অনেক সময় দুই হাতেও শিকল পরিয়ে রাখা হয়। তিনি ওই গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে। শিকলে বন্দি রেখেই তার চিকিৎসা করাচ্ছেন একমাত্র সন্তান সেনা সদস্য মোহন আলী। ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি পান তিনি। বর্তমানে চিটাগাং ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত আছেন।
এলাকাবাসী জানান, দিনের বেলায় বাড়ির দরজার সামনে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন মজিদুল। বাড়িতে কেউ গেলে দেখামাত্র রেগে গিয়ে গালি দেন। যা! চলে যা! বলেই মারতে তেড়ে আসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কারণ তার দুই পায়ে লম্বা লোহার শিকল। ডাকলে সাড়া দেন। তবে সব কথার উত্তর দিতে চান না। শুধু মাথা নিচু করে মাটির দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। গতকাল সোমবার সরজমিনে গিয়েও এমন চিত্রের দেখা মেলে। তখন মজিদুলের কাছে স্ত্রী-সন্তানের কথা জানতে চাইলে অস্পষ্টভাবে বলেন, ‘হামার ছেলে ভালো, সেনাবাহিনী! ছেলের কথা শুনব, ওষুধ খাব, ছেলের জন্য দোয়া করব, হামার বউ ভালো! হামি ভালো হমু! আপনেরা বসেন, না হয় চলে যা! যা!’ কথাগুলো বলতে বলতে হঠাৎই তার অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন মজিদুলের স্ত্রী মাছুদা বেগম বলেন, ‘একদিন হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে অস্বাভাবিক হয়ে যান মজিদুল। প্রথম দিকে আমাকে মারধর করতেন। লোকজন দেখলেই মারতে তেড়ে যেতেন, হারিয়েও যেতেন। বাধ্য হয়েই তাকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে। শুরুর দিকে তাকে বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে। কিছুটা স্বাভাবিক হলেও কয়েক দিন পরই ফের অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয়।’ মজিদুলের ছেলে সেনা সদস্য মোহন আলী বলেন, বাবা মানসিক রোগী। ২০০৪ সালের দিকে বাড়িতেই তাকে শিকলবন্দি করা হয়। শিশুকাল থেকেই বাবাকে শিকলে বন্দি দেখে বড় হয়েছি। আল্লাহ হয়তোবা আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন। বাবাকে সুস্থ দেখতে চাই। বগুড়া সিএমএইচ হাসপাতালের চিকিৎসককে দেখিয়েছি। কিন্তু আমার বেতনের টাকায় বাবার চিকিৎসার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়