সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা হত্যামামলা : আসামিদের ভয়ে এলাকাছাড়া বাদী

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইফুর রহমান ফারুক, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম তালুকদার নিক্সনকে (৪৮) হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে বাদী ও নিহতের স্বজনদের প্রতিনিয়তই হুমকি দিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম তালুকদার সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। আজগড়া গ্রামের বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ী উপজেলা সদরের বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে খুন করে। তিনি সদর উপজেলার লায়ন নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। পরে নিহত আমিনুল ইসলাম তালুকদারের ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার বাদী হয়ে ২ আগস্ট রাতে ধনবাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামি সুমন, সুজন ও ফারুকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে পুলিশিতদন্তে এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হাদিরা পূর্বপাড়া গ্রামের আজহার আলীর ছেলে আব্দুল আজিজ ও তার কয়েকজন সহযোগীর সম্পৃক্ততা বের হয়ে আসে। এরপর আব্দুল আজিজ, সবুজ ও মজনুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘ এক বছর কারাভোগ করার পর আজিজ, সবুজ ও মজনু জামিনে বের হন। তবে মামলার আরেক আসামি এখনো পলাতক রয়েছে।
তবে জামিনে এসেই মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে চলেছেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল আজিজ ও তার সহযোগীরা। প্রতিনিয়ত হুমকির কারণে মামলার বাদী এখন এলাকাছাড়া। এছাড়া নিহতের স্বজনরাও রয়েছেন আতঙ্কে। পরে মামলার বাদী হুমকির বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলেও কোন সুরাহা হয়নি। তাই তিনি (বাদী) মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের জন্য আবেদন জানান। পরে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে পুনরায় বাদীর আপত্তির কারণে বর্তমানে মামলাটি পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আব্দুল আজিজের নেতৃত্বেই তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে আব্দুল আজিজ ও তার সহযোগীরা জামিনে রয়েছেন এবং জামিনে এসেই তারা বিভিন্নভাবে তাকেসহ (বাদী) তার পরিবারের সবাইকে একে একে হত্যা করা হবে বলে আজিজ ও তার সহযোগীরা প্রতিনিয়তই হুমকি দিয়ে চলেছেন। এ নিয়ে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছেন ভাই হত্যার বিচারের দাবিতে। কিন্তু সেখান থেকে আশ্বাস পেলেও এর কোনো সুফল এখনো পাননি। বরং স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে আব্দুল আজিজ ও তার সহযোগীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তাই ভয়ে এবং নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়ে গোপালপুর থানায় তিনি দুইবার জিডিও করেছেন।
নিহত নিক্সনের স্ত্রী হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম জানান, স্বামী হত্যার বিচারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন আসামিরা জামিনে এসে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে চলেছেন। বর্তমানে তিনিসহ পরিবারের লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্বামী হত্যার বিচার তিনি দেখে যেতে পারবেন কিনা এটা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পিপিআই’র উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন জানান, মামলাটির তদন্তকাজ শুরু করেছেন কিছুদিন হলো। কয়েকজন আসামি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। তবে তারা বাদী বা নিহতের পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের হুমকি দিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে তার কাছে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়