সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে পাঁচ সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী : শেখ হাসিনার সঙ্গে মোজা বিনতে নাসেরের বৈঠক

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্মার্ট, উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ৫টি সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) সাইডলাইনে গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) ‘ইনভেস্ট ইন রিসার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইন এলডিসি ফর স্মার্ট এন্ড ইনোভেটিভ সোসাইটিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর অধিকার, যুদ্ধ-সংঘাতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সোচ্চার কণ্ঠস্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট, উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে উন্নীত

হতে সাহায্য করবে। এজন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ৫টি ‘কি সাপোর্ট’ (মূল সহায়তা) চান তিনি।
প্রথম সহায়তা হিসেবে শেখ হাসিনা জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে কার্যকর প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য আন্তর্জাতিক বেসরকারি খাতকে যথাযথ প্রণোদনা দেয়ার করার কথা বলেন। দ্বিতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ব্রডব্যান্ড বিভাজন ও প্রযুক্তিগত বৈষম্য কমাতে ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ সহায়তা করার কথা বলেন। তৃতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশগুলো যেসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে সেগুলো মোকাবিলায় গবেষণা পেশাদার ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। চতুর্থত, সহায়তা হিসেবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পরও ট্রিপস চুক্তির আওতায় ‘এলডিসি ছাড়’ অব্যাহত রাখা, বিশেষ করে ওষুধ এবং এগ্রো- কেমিক্যালসে। পঞ্চমত, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে উদ্ভাবন ও উন্নয়ন উভয়ের জন্য উপযোগী একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়তার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে আমরা জনগণের কাছে ২০২১ সালের মধ্যে একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলাম। ওই সময়ে এটিকে ‘রূপকথা’ বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি প্রমাণ করেছে যে- আমরা আমাদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারি। আমাদের সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়া। স্মার্ট বাংলাদেশের মূল ভিত্তি হবে ৪টি- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট ইকোনমি।
গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এই মহামারি আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছে যে- এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বিনিয়োগের জন্য আর অপেক্ষা করা উচিত নয়। তাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ ধরনের বিনিয়োগ করা অপরিহার্য। যে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য এলডিসিগুলোর গড় জিডিপি ব্যয় এখনো শুন্য দশমিক ৬ শতাংশের নিচে রয়েছে ও তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকটি বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে রয়েছে।
বৈশ্বিক অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আবির্ভাবের সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশগুলো পিছিয়ে থাকার মতো অবস্থায় নেই। আমাদের তরুণদের ভবিষ্যৎ কাজে সম্পৃক্ত করা উচিত। এর জন্য আমাদের অর্থপূর্ণ বৈশ্বিক অংশীদারত্ব দরকার।
শেখ হাসিনার সঙ্গে মোজা বিনতে নাসেরের বৈঠক : এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গতকাল বৈঠক করেছেন কাতার ফাউন্ডেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শেইখা মোজা বিনতে নাসের। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে মোজা বিনতে নাসের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। তিনি (মোজা বিনতে নাসের) বলেছেন, আপনি ১৭০ মিলিয়ন লোকের উপকার করছেন। আপনি অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মানুষের জন্য কাজ করি। এটা আমার বাবার স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছি, আহামরি কিছু করিনি। তখন মোজা বিনতে নাসের বলেন, না অনেক কিছু করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মোজা বিনতে নাসের জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশ নারী ও শিশুদের জন্য কি করছে। তখন প্রধানমন্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিক, শিক্ষার প্রসার, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, দেশে-বিদেশে স্কলারশিপের জন্য বৃত্তি, মানব সম্পদ উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে বাংলাদেশে কাতার ফাউন্ডেশনের সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়