চীন-বাংলাদেশ কালচার এন্ড আর্ট নাইট

আগের সংবাদ

কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত জরুরি

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোর বেশির ভাগই নজরদারির বাইরে রয়েছে। ফলে কারখানায় আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা আছে কিনা, কোথায় বিস্ফোরক রাখা হচ্ছে, দাহ্য পদার্থ নিয়ম মেনে রাখা হচ্ছে কিনা- এসবই থেকে যায় নজরের আড়ালে। বেশকিছু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দগদগে ক্ষত রেখে গেছে দেশের মানুষের মনে। এর মধ্যে গত শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর কদমরসুল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেড’ নামে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ও আগুনে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে আশপাশের অন্তত দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অক্সিজেন প্ল্যান্টের বিভিন্ন অংশে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গত বছর ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে ৫১ জন নিহত হয়েছিলেন। বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ঠিক ৯ মাস পরই কাছাকাছি এলাকায় এ রকম আরেকটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে স্তব্ধ দেশবাসী। অবহেলা বা অসচেতনতায় বারবার এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের শঙ্কিত করে। বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছিল সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কারখানা ও কনটেইনার ডিপোগুলোর অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে একের পর এক অভিযান পরিচালনা শুরু করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। চলমান এ অভিযানের মধ্যে আবারো এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। গত দুই মাসে কনটেইনার, পোশাক কারখানাসহ ৯টি কারখানায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু এর মধ্যে একটি কারখানাতেও পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা খুঁজে পাননি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসব প্রতিষ্ঠানে ছিল না যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, ছিল না অগ্নিনিরাপত্তা ছাড়পত্র। জরিমানা করা হলেও এই বাস্তবতা খুবই দুঃখজনক। অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করার সময় বা সিলিন্ডারে থাকা অক্সিজেন অন্য কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আসায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানা গেছে। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, তদন্তে মূল ঘটনা উঠে আসবে। প্রশ্ন উঠছে অক্সিজেন প্ল্যান্টের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। দেশের শিল্প-বাণিজ্যের জন্য অবকাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির দুর্বলতার কারণে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শেষ পর্যন্ত এর মূল্য হিসেবে এসব ঝুঁকিপূর্ণ কর্মস্থলে নিয়োজিত শ্রমিকদের জীবন দিতে হয়। আমরা এই হৃদয়বিদারক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না ঘটে সে জন্য শিল্প-সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার অনুরোধ জানাই। এছাড়া যারা এ ঘটনায় বেঁচে ফিরেছেন এবং যারা দগ্ধ ও আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কাম্য। অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ যাই হোক না কেন, আমরা আশা করি, তদন্তকারীরা তা দ্রুত খুঁজে বের করবেন। এ ঘটনায় দায়ীদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়