চীন-বাংলাদেশ কালচার এন্ড আর্ট নাইট

আগের সংবাদ

কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

বর্ধিত মেয়াদেও শেষ হবে না বাঁধের কাজ : শঙ্কিত হাওড় পারের কৃষক

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শংকর দত্ত, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে : ছাতক উপজেলার ৩৭টি পিআইসির কাবিটা প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। সেই সঙ্গে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। সব মিলিয়ে শঙ্কিত হাওড়পারের কৃষকরা। বর্ধিত মেয়াদে কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।
ছাতক উপজেলার ৩৭টি পিআইসির কাবিটা প্রকল্পে অধীনে ধীরগতিতে চলছে হাওড় রক্ষা বাঁধের নির্মাণ ও সংস্কার কাজ। গত ২ মার্চ উপজেলার বিভিন্ন হাওড় ঘুরে দেখা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারিতে বাঁধ নির্মাণকাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও পরে ৭ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। বর্তমানে বাঁধের নির্মাণকাজের অর্ধেক শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কমিটির সভাপতি।
উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কৃষক রহিম আলী, নুরুল আমিন, নোয়ারাই ইউনিয়নের মতিন মিয়া, আরজ আলী, ছবির মিয়া, খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়নের আবু তাহের, সাদিক মিয়া, সিংচাপইড় ইউনিয়নের ফয়েজ আহমদসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কৃষক বাঁধের কাজে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক জায়গায় অনিয়ম হচ্ছে কাজে। যদি সঠিকভাবে বাঁধের কাজ না হয় তবে পানিতে কৃষকের কষ্টের বোরো ফসল তলিয়ে যাবে। তার দায় তখন কে নেবে?
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওড়ের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত উপজেলায় সব প্রকল্পের প্রায় ৮৩ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছর উপজেলায় বিভিন্ন হওরের ফসল রক্ষায় ৩৭টি প্রকল্পে কাজ চলছে। ৭ মার্চ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক।
উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে জাউয়াবাজার নোয়ারাই, চরমহল্লা, খুরমা উত্তর, খুরমা দক্ষিণ ও সিংচাপইড় ইউনিয়নের বিভিন্ন হওড়ের ফসল রক্ষায় ৩৭টি প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতির অনুকূলে সর্বাধিক ২৫ শতাংশ টাকা অগ্রিম দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। প্রকল্পের ৯ নম্বর পিআইসির সভাপতি অজিত দাস বলেন, গত বছরের কাজের টাকা এখনো পাইনি। আমরা কিভাবে কাজ শেষ করব। তবুও কাজ প্রায় শেষের দিকে। তিনি আরো বলেন, এ বছর সরকারি বিধি অনুযায়ী যে টাকা পাওয়ার কথা সেই টাকা তো পাইনি এখন পর্যন্ত। শ্রমিকদের তো পরে দিচ্ছি বলে কাজ করানো যায় না। এদিকে, কাজের ধীরগতির ব্যাপারে বিভিন্ন পিআইসির সভাপতিরা জানিয়েছেন, হাওড় রক্ষায় ৩৭টি প্রকল্পের মধ্যে অগ্রিম কোনো প্রকল্পেই টাকা দেয়া হয়নি। কাজ শুরুর পর ২৩টি প্রকল্পের কাজে ১ম কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি ১৪টি প্রকল্পের কাজে ১ম কিস্তির টাকাই পরিশোধ করা হয়নি।
অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) দাবি, আর্থিক সংকটের কারণে কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দের টাকা না পেয়ে তারা ধারদেনা করে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকরা দ্রুত বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে কাজ ধীরে চলায় অনেক বাঁধের কাজই শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ও কাবিটা কমিটির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন জানান, পিআইসির কমিটির কাজ শুরু করতে বিলম্ব করায় ও ফান্ড স্বল্পতায় বিল পরিশোধে দেরি হচ্ছে। শিগিগরই পিআইসির টাকা পরিশোধ করা হবে। কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮৩.৩ % হয়েছে বলে তিনি জানান।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প কমিটির সভাপতি নুরের জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রথমেই পিআইসি গঠনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। প্রকল্পের কাজ নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। আমি সাইট ভিজিটে আছি এখনো। এক এক জায়গায় এক এক রকমের নির্দেশনা। সেই মোতাবেক কাজ প্রায় শেষের পথে। আশা করা যাচ্ছে, ৭ তারিখের মধ্যে দ্রুত হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতকাজ শেষ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়