চীন-বাংলাদেশ কালচার এন্ড আর্ট নাইট

আগের সংবাদ

কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছাড়াই চলছিল সীমা অক্সিজেন লিমিটেড

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে ভয়াবহ বিষ্ফোরণ ও ব্যাপক হতাহতের পরপরই মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। না কারখানায় না হাসপাতালে। হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক সাহায্য করাতো দূরে থাক কোনো হদিসই পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে সাধারণ জনগণ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড সমালোনা ও চাপ আসতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে মর্মান্তিক ও ভয়াবহ এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর অবশেষে গতকাল রবিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মামুন উদ্দীন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কারখানাটির সামনে আসেন। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান চালুর জন্য ফায়ার সার্ভিস থেকে যে সার্টিফিকেট নিতে হয় তা না নিয়েই তাদের ওই প্ল্যান্টটি চলছিল যা তার কথাতেই বেরিয়ে আসে।
কারখানাটিতে প্রয়োজনীয় অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আনুষাঙ্গিক অনুমতিপত্র ছিল না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুন উদ্দীন বলেন, ‘যত ধরনের লাইসেন্স দরকার সবগুলো মেইনটেইন করেই কারখানা চালাই। ফায়ার সেফটি সংক্রান্ত ব্যবস্থা পর্যাপ্ত আছে। ফায়ার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমাদের সব আপ টু ডেট।’
বন্ধ থাকা প্ল্যান্টগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছয় মাস ধরে প্ল্যান্টগুলো বন্ধ আছে। সেখানে ফায়ার এক্সটিংগেসার আছে।’ তদন্ত কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অসহযোগিতার কিছু নেই। তদন্ত কমিটি যা যা তথ্য নেবে, সব দেব।’ হতাহতদের শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এবং আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি কারখানা থেকে তাদের বেতন নিয়মিত দেয়া হবে বলে জানান মামুন উদ্দীন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানা গেছে এ সময় তিনি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলে দাবি করেন। কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মহান রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন।’
মামুন উদ্দীন বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ২৭ বছর ধরে এই কারখানা চলছে। আগে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। যে প্রজেক্টে এটা হয়েছে, এটা নতুন। আমি এটাকে দুর্ঘটনাই বলব। এখানে কারো হাত নেই।
বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া কারখানাটিতে সীমা গ্রুপের মোট পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট আছে। এর মধ্যে তিনটি অক্সিকো অক্সিজেন লিমিটেডের, যেগুলো বন্ধ ছিল। দুটি সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের। যেগুলো চালু অবস্থায় ছিল। ফলে বিস্ফোরণে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে, বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে যান সীমা গ্রুপের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আলীম। তার সঙ্গে যাওয়া কোম্পানির সুপারভাইজার মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণের সময় মাত্র ছয় জন শ্রমিক প্ল্যান্টে ছিলেন। এর মধ্যে তিনজন নামাজ পড়তে বাইরে বের হয়েছিলেন। জাহাজ কাটার কাজ কম থাকায় অক্সিজেন উৎপাদন কমে যাওয়ায় কারখানায় শ্রমিকও কম ছিল বলে জানান তিনি।
বিস্ফোরণে নিহত ৬ জন হলেন, শামছুল আলম (৫৬), মো. ফরিদ (৩৬), রতন লখরেট (৪৫), আবদুল কাদের (৫৮), মো. সালাহ উদ্দিন (৩০) সেলিম রিচিল। নিহত ৬ জনের মধ্যে শামছুল আলম ও সালাহউদ্দিন কারখানার কর্মী নন। ঘটনার সময় তারা ছিলেন কারখানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়