চীন-বাংলাদেশ কালচার এন্ড আর্ট নাইট

আগের সংবাদ

কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

পুঁজিবাজারে আলো ঝলমলে দিন

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আলো ঝলমলে একটি দিন পার করল পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম। পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি লেনদেন বাড়লেও এদিন তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট দেখা যায়। ক্রেতা সংকটে পড়ে লেনদেনের শেষ দিকে প্রায় দুইশ প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অন্যদিকে দিনের সর্বনি¤œ দামে এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল বিক্রির আদেশ আসে। ফলে যাদের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে ক্রেতা সংকটে তারা তা বিক্রি করতে পারেননি।
এদিন গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হতেই মূল্যসূচকের বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই বড় উত্থান প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়ে। সেই সঙ্গে বড় হয় দাম বাড়ার তালিকা।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৪টির। দাম বাড়ার তালিকায় থাকায় ৭টির দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া ৩ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ৭৪টির। এর মধ্যে ৩৪টির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের ওপরে।
এমন বাজারেও ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। ক্রেতা সংকটে পড়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৪টি আগে থেকেই ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ৩টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমে নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। আর একটির দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কমেছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪২৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৮ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৮ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইস্টার্ন হাউজিং, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ফার্মা এবং শাহিনপুকুর সিরামিকস।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির দাম।
মুনাফার অতিরিক্ত লভ্যাংশ দিচ্ছে লাফার্জহোলসিম : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদ ২০২২ সালের সমাপ্ত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে কোম্পানিটি দুই দফায় ৩৩ শতাংশ নগদ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ দেয়।
অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২০২২ সালের জন্য কোম্পানিটি ৪৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিচ্ছে। এতে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ হিসেবে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নগদ ৪ টাকা ৮০ পয়সা করে পাবেন। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা করা এ লভ্যাংশ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির করা মুনাফার থেকে বেশি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডিএসই জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ শেয়ার প্রতি মুনাফা করেছে ৩ টাকা ৮৩ পয়সা।
এই মুনাফার ওপর ভিত্তি করেই লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ চূড়ান্ত ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দেয়। এরপর ৩১ অক্টোবর সমাপ্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের ১৮ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দেয় লাফার্জহোলসিম।
সব মিলিয়ে ২০২২ সালে কোম্পানিটি ৪৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ হিসেবে কোম্পানিটিকে ৪ টাকা ৮০ পয়সা দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের জন্য মুনাফার চেয়েও ৯৭ পয়সা বেশি লভ্যাংশ দিতে হবে।
চূড়ান্ত লভ্যাংশের বিষয়ে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের নেয়া সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৯ মে। আর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মার্চ।
ডিএসই জানিয়েছে, লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে কাম্পানিটির শেয়ারের দামে কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকবে না। অর্থাৎ শেয়ারের দাম যতখুশি বাড়তে পারবে। তবে দাম কমার ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইসের নিয়ম কার্যকর হবে। অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইসের নিচে দাম কমতে পারবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়