চীন-বাংলাদেশ কালচার এন্ড আর্ট নাইট

আগের সংবাদ

কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

দেশের বাজারে প্রভাব নেই : বিশ্ববাজারে টানা কমছে খাদ্যপণ্যের দাম

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বিশ্ববাজারে দাম বাড়ে প্রায় সব পণ্যের। তবে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য বলছে, টানা ১০ মাস বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতেও খাদ্যশস্যের দাম কমেছে। ২০২২ সালের মার্চের তুলনায় এখন খাদ্যশস্যের দাম ১৮ শতাংশ কম। ভোজ্যতেল, গম, চিনি, গুঁড়া দুধ, ডাল ও ছোলার দামে ঊর্ধ্বমুখিতা নেই। অথচ দেশের বাজারের চিত্র উল্টো। তবে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও তা পরিবর্তন হয়নি। বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে কমেনি। উল্টো কিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। আসন্ন রমজানে চাহিদা আরো বাড়বে তাই এ সুযোগে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল প্রায় এক হাজার ৯০০ ডলার। এখন তা এক হাজার ৩৫২ ডলারে নেমেছে। পাম অয়েলের দাম এক হাজার ৬৩৪ ডলার থেকে কমে হয়েছে ৯৪২ ডলার। একই সময়ের ব্যবধানে প্রতি টন গমের দাম ৪৯২ ডলার থেকে কমে ৩৮০ ডলার হয়েছে। এভাবে চিনি, গুঁড়া দুধ, ডাল ও ছোলার দামে নি¤œমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
জানা গেছে- বর্তমানে কোনো পণ্য বিশ্ববাজার থেকে কিনলে তা দেশে আসবে রোজার পর। ফেব্রুয়ারি থেকে যারা বিশ্ববাজারের পণ্য কিনছে, ঋণপত্র (এলসি) খুলছে, তারা কিছুটা দাম কম পাচ্ছে। কিন্তু এ পণ্য দেশে আসবে অনেক পরে। তখন ক্রেতারা পাবে এর সুফল। এখন যে পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো চড়া দামে আমদানি করা।
এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত বছর রোজার আগে একই সময়ের তুলনায় বর্তমানে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বছরের ব্যবধানে আটার দাম বেড়েছে ৫৬-৬৪ শতাংশ, ময়দা ৩৮-৪০ শতাংশ, চিনি ৪৮ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৮ শতাংশ, পাম তেল ১৮ শতাংশ, ছোলা ২০ শতাংশ এবং মসুর ডাল ১২ শতাংশ।
তবে দেশের বাজারে এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য ব্যবসায়ীরা আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিকে দুষছেন। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও এর কারণে পণ্যের কর বেড়ে যাওয়ার কথাও বলছেন তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য আমদানি সময়সাপেক্ষ। কম দামের পণ্য এখনো দেশে এসে পৌঁছায়নি। এ সুফল ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে আরো সময় লাগবে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলেন- এখন যদি কোনো পণ্য বিশ্ববাজার থেকে কেনা হয়, সেটা বাংলাদেশে আসবে রোজার পর। ফেব্রুয়ারি থেকে যারা বিশ্ববাজারের পণ্য কিনছে, ঋণপত্র (এলসি) খুলছে, তারা কিছুটা দাম কম পাচ্ছে। কিন্তু এ পণ্য দেশে আসবে অনেক পরে। তখন ক্রেতারা পাবে এর সুফল। এখন যে পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো চড়া দামে আমদানি করা। তারা জানান- কোম্পানিগুলো চড়া দামে ডলার কিনে এলসি করছে। অনেক কষ্টে সেটা করতে হচ্ছে। এরপর এলসি নিষ্পত্তি হতে দিতে হচ্ছে চড়া মূল্য, করও দিতে হচ্ছে সেই হিসাবে। সবকিছু মিলে পণ্যের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক নয়। ডলারের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা জানান- গত বছরের মে মাস পর্যন্ত দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা হয়েছে ১০৬ টাকা। কখনো ১১০ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়েছে এলসি খোলার জন্য। এরপর কর আদায়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম প্রভাব ফেলে। দাম যত বেশি হয়, কর তত বাড়ে। এবার অনেক ব্যবসায়ী এলসি নিষ্পত্তিতে ডলার সংকটের কারণে বন্দরে পণ্য খালাস না করতে পেরে জরিমানা গুনছেন।
এদিকে, দেশে রমজানে খেজুর, ছোলা, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়। এর মধ্যে পেঁয়াজ ও ডাল কিছু পরিমাণে বাংলাদেশে উৎপাদিত হলেও বাকি পণ্যগুলোর বেশিরভাগই আমদানি করতে হয়। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না বলে ঘোষণা আসলেও সব ধরনের পণ্যের দাম ইতোমধ্যেই বেড়ে গেছে।
স¤প্রতি দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, আসন্ন রমজানে চিনি, তেল ও ছোলা, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে। রমজানে ঘাটতি হওয়ার সুযোগ নেই। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়