সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

যশোর হত্যাকাণ্ড : দুই যুগ পূর্তিতে রংতুলিতে উদীচীর প্রতিবাদ

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ও ভয়াবহ বোমা হামলাগুলোর অন্যতম যশোর বোমা হামলা। ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল মাঠে আয়োজিত বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে গভীর রাতে যখন হাজারো জনতা ও সংস্কৃতিকর্মী বাংলার আবহমান সংস্কৃতির ধারক বাউল গানের সুর মূর্ছনায় বিমোহিত হয়েছিলেন, ঠিক তখনই বিকট শব্দে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে মঞ্চের নিচে আগে থেকে পেতে রাখা বোমার।
ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠীর চালানো ওই হামলায় প্রাণ হারান নূর ইসলাম, সন্ধ্যা রানী, রামকৃষ্ণ, তপন, বাবুল সূত্রধরসহ অন্তত ১০ জন শিল্পী-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। আহত হন দেড় শতাধিক শিল্পী-কর্মী ও সংস্কৃতিমনা সাধারণ মানুষ। মৌলবাদী অপশক্তির ঘৃণ্য হামলার শিকার সেসব সংস্কৃতিকর্মী এখনো পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে নিয়ে জীবনযাপন করছেন। এটিই ছিল স্বাধীনতার পর এ দেশের মাটিতে প্রথম প্রকাশ্যে বোমা হামলার ঘটনা।
আগামীকাল যশোর হত্যাকাণ্ডের দুই যুগপূর্তি। এ উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ‘দুই যুগেও হয় না বিচার, এই লজ্জা ও অপমান কার’ এই স্লোগানকে ধারণ করে গতকাল শনিবার এ কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন হচ্ছে যশোরে। এদিন যশোর টাউন হলে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘রং তুলিতে প্রতিবাদ’ শীর্ষক আয়োজনের উদ্বোধন করেন বোমা হামলায় নিহত নাজমুল হুদা তপনের বোন নাজমুন সুলতানা বিউটি এবং বোমা হামলায় নিহত নূর ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার ২৪ জন বরেণ্য চিত্রশিল্পী। তাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন যশোরের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পী মফিজুর রহমান রুনু। উদীচী যশোর জেলা সংসদের সভাপতি তন্দ্রা ভট্টাচার্য্যরে সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য বক্তব্য রাখেন উদীচী যশোর জেলা সংসদের সহসভাপতি এবং যশোর হত্যাকাণ্ড দিবস-২০২৩ এর আহ্বায়ক আব্দুল আফফান ভিক্টর, যশোর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব। সঞ্চালনা করেন কাজী শাহেদ নওয়াজ।
আলোচনা শেষে উদ্বোধকদ্বয় রং তুলির আঁচড় দিয়ে প্রথমদিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর দিনব্যাপী প্রতিবাদী চিত্রকর্ম অঙ্কনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ তুলে ধরেন ২৪ জন বরেণ্য চিত্রশিল্পী। তাদের সঙ্গে স্থানীয় শিশুশিল্পীরাও অংশগ্রহণ করে। এছাড়া কবিতায় প্রতিবাদ তুলে ধরেন ১৫ জন বরেণ্য বাচিক শিল্পী।
তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন আজ ৫ মার্চ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও শ্রেণি-পেশার বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ৬ মার্চ সমাপনী দিন বিকাল ৩টায় যশোর টাউন হল ময়দানে নির্মিত শহীদ বেদীতে

শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হবে। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে যশোর টাউন হল ময়দানে প্রতিবাদী সমাবেশ, প্রদীপ প্রজ¦লন, মশাল মিছিল ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে। এছাড়া বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত যশোর হত্যাকাণ্ডের শত ছবির প্রদর্শনীও থাকবে।
৬ মার্চ যশোরে আয়োজিত কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সংসদের নেতাকর্মী ছাড়াও খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের পদ্মাপারের জেলা ও শাখাগুলোর বন্ধুরা অংশ নেবেন। এছাড়া দেশের সব জেলা ও শাখায় যশোর হত্যাদিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়