কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে শিক্ষাঙ্গনে সরকারি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, নির্যাতন, তোলাবাজির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের পক্ষ থেকে অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোটের কেন্দ্রীয় নেতা ও সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি ইডেন মহিলা কলেজসহ প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সীমাহীন সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, সিট ও ভর্তিবাণিজ্য, প্রশ্নফাঁস, ছাত্র-শিক্ষকদের নির্যাতন, গণরুম, গেস্টরুমে নির্যাতনের ঘটনা গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। একদিকে সিলেবাস-কারিকুলামে সা¤প্রদায়িক কূপমণ্ডূক ধ্যান-ধারণা ঢুকিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে, অপরদিকে দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব কায়েম করে শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রসমাজ ও ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে জনমনে বিরূপ মনোভাব তৈরি করে শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতেই শাসক শ্রেণি পরিকল্পিতভাবে এহেন ন্যক্কারজনক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, তার প্রমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ছাত্রলীগ সন্ত্রাস পরিচালনা করছে। অথচ প্রশাসন, পুলিশ নীরব দর্শক কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। বিবৃতিতে অবিলম্বে ছাত্রলীগের বেপরোয়া সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।
বাম জোটের পক্ষ থেকে শিক্ষাঙ্গনে সরকার দলীয় ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বশংবদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র-গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।