সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

দম্পতি গ্রেপ্তার : ধার পরিশোধের জন্য নবজাতক চুরি

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে ৭ দিনের নবজাতককে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে যশোরের অভয়নগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪ এর একটি দল। এ সময় অপহৃত নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. রুবেল শেখ (৩৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া আফরোজ (২৩)।
র‌্যাব জানিয়েছে, পাওনাদারদের ধার পরিশোধের চাপে পড়ে অপহরণের পরিকল্পনা করেন ওই দম্পতি। এরই প্রেক্ষিতে পরিচিত ব্যক্তির ৭ দিনের নবজাতক সন্তানকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণ করেন এ দম্পতি। তারা ধামরাই থেকে খুলনার অদূরে রূপসা নদীর অপর পাশে যশোরের আমতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। মায়ের অনুপস্থিতিতে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা সিদ্ধান্ত নেন, মুক্তিপণ না পেলে শিশুটিকে গোপনে রূপসা নদীতে ফেলে দিয়ে আত্মগোপন করবেন।
দম্পতিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ভুক্তভোগী মিলি আক্তার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢুলিভিটা বাজারের পাশে থাকার কারণে একই এলাকার ভাড়াটিয়া রুবেল ও তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় থেকে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। গ্রেপ্তার রুবেল মিলি আক্তারকে ফুফু বলে ডাকতেন। তিনি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রুবেল ও তার স্ত্রী ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় আসেন। ভুক্তভোগী অসুস্থ থাকায় ৭ দিনের নবজাতককে রুবেল ও তার স্ত্রীর কাছে রেখে ওষুধ কিনতে বাইরে যান। ২০ মিনিট পর বাসায় ফিরে সন্তানসহ দুজনকে দেখতে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেন। পরবর্তীতে ঢুলিভিটা বাজার কমিটির সহায়তায় রুবেলের বাসার ঠিকানা নিয়ে বাসায় গিয়ে দরজা তালা দেয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়াও তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রুবেল মোবাইল ফোন চালু করলে প্রথমে নবজাতককে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে পুনরায় ফোন বন্ধ করে দেন।
তিনি আরো বলেন, পরে ১ মার্চ রুবেল অন্য একটি নম্বর দিয়ে ভুক্তভোগী মিলি আক্তারকে ফোন করে জানায় নবজাতক ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ লাগবে। তা না দিলে নবজাতককে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী মিলি আক্তার বিষয়টি জানিয়ে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। র‌্যাব অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি দল অভয়নগর থানাধীন আমতলা এলাকা থেকে অপহৃত ৭ দিনের নবজাতককে উদ্ধারসহ দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে।
নবজাতক শিশু অপহরণের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দম্পতি জানান, ঢুলিভিটা বাজার এলাকায় কয়েকটি দোকান ও মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতে পারছিল না রুবেল। পাওনাদাররা ধার পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকায় সে ঢুলিভিটা এলাকা থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কৌশলে নবজাতককে অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী সহজেই সুযোগ পেয়ে নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে র‌্যাব দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়