সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

কিডনি রোগীর ঝুঁকি বেশি : অপ্রত্যাশিত দুর্যোগে ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স’ নিশ্চিতের আহ্বান

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভূমিকম্পের মতো অপ্রত্যাশিত দুর্যোগে কিডনিসহ অন্য রোগীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই অবস্থায় এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় ইমার্জেন্সি রেসপন্স এবং অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ‘সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য- অপ্রকাশিত দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণদের সহায়তায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানান তারা।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ বৈঠকের আয়োজন করে কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস)। বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর রশিদ, ক্যাম্পসের নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালেহীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, সিকেডি এন্ড ইউরোলজি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম, স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।
অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, কিডনি রোগীরা দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। সারাবিশ্বে ৮৫ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে ২ কোটিরও বেশি কিডনি রোগী রয়েছে। প্রতি বছর দেশে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কিডনি সম্পূর্ণ বিকলের শিকার হয়ে যায়। আরো ১৫ থেকে ২০ হাজার আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। এদের বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন প্রয়োজন।
দুর্যোগের সময় কিডনি রোগীদের বিড়ম্বনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেলে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন। ডায়ালাইসিস সাধারণত সপ্তাহে ২-৩ দিন করতে হয়। দুর্যোগের কারণে ডায়ালাইসিস বন্ধ হলে মৃত্যু এগিয়ে আসবে। কিডনি সংযোজনের রোগীদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে, ওষুধ নিয়মিত না খেলে সংযোজিত কিডনি বাতিল হয়ে যেতে পারে। আবার দুর্যোগের সময়ে আঘাত, রক্তক্ষরণ, দুর্যোগপরবর্তী ডায়রিয়া, সংক্রমণ- এসব কারণে আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। যার জন্য ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। অল্প মাত্রার দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে সম্পূর্ণ কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। তখন ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হবে। তাই কিডনি রোগী দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
ডা. এম এ সামাদ বলেন, দুর্যোগের মোকাবিলায় কিডনি রোগীদের নিজ পূর্বপ্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি, যেমন প্রয়োজনীয় ওষুধসহ জরুরি ‘কিট বক্স’ প্রস্তুত রাখা, বিকল্প ডায়ালাইসিস সেন্টার সম্পর্কে আগে থেকে ধারণা নিয়ে রাখা, সাহায্যকারী নেটওয়ার্ক তৈরি করে রাখা, যেমন- বন্ধু, আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সহায়তা। ডায়ালাইসিস পেতে বিলম্ব হলে সাময়িক খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, যেমন- পানি কম, মাছ-মাংস কম, পটাশিয়াম যুক্ত খাবার, যেমন- ফল ও সবজি পরিহার।
অধ্যাপক ডা. হারুন-উর রশিদ, ২ থেকে আড়াই কোটি রোগী ধীরে ধীরে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়। শতকরা ৮০ ভাগ ক্রনিক ডিজিজের কোনো লক্ষণ থাকে না। ৫০ ভাগ মানুষ জানেই না, তারা সুপ্ত কিডনি রোগে ভুগছে। ২৫ ভাগকে চিকিৎসা দেয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে, বাকি ৭৫ ভাগের নির্মম ভাগ্য বরণ করার আশঙ্কা আছে। কিন্তু সতর্ক থাকলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ আকস্মিক কিডনি বিকল রোধ করা সম্ভব।
অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, অনাকাক্সিক্ষত স্বাস্থ্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে নীতি নির্ধারকদের নতুন করে ভাবতে হবে। সরকারের উচিত হবে আপৎকালীন সময়ে এসব রোগীকে চিকিৎসা পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং রোগীদের উচিত হবে তাদের হাতের কাছে সর্বদা একটা কীট সংরক্ষণ করা, যাতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের পাশাপাশি খাবারও রাখা যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়