জাকের সুপার মার্কেট : সংঘর্ষে সভাপতিসহ আহত ২

আগের সংবাদ

অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : সীতাকুণ্ডের ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে’ বিস্ফোরণে নিহত ৬, আহত আরো ২৫

পরের সংবাদ

ল²ীপুর-৪ আসন : সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনা বাড়ছে লক্ষ্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মিজানুর রহমান মানিক, কমলনগর (ল²ীপুর) : কমলনগর ও রামগতি উপজেলা নিয়ে গঠিত ল²ীপুর-৪ আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে বড় দুই দলসহ অন্যান্য দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনা বাড়ছে। প্রার্থীরা নীরব প্রচারণার অংশ হিসেবে এলাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। সা¤প্রতিক সময়ে শীতবস্ত্র বিতরণসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। নির্বাচনী গণসংযোগের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে আসার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন।
ল²ীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা) সহ প্রায় সবগুলো দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ভোটের মাঠ দখল নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনাসহ কেন্দ্রের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দলের কর্মসূচিগুলোতে উপস্থিত থেকে প্রার্থী হওয়ার জানান দিচ্ছেন তারা। তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে আর্থিক সহায়তাসহ নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এই আসনের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগণের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। নদী ভাঙন রোধসহ এলাকার উন্নয়নে ব্যার্থ এই এমপিকে কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছে না এলাকাবাসী। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ছাড়াও মহাজোট থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন হলেন- সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ঢাকা মহানগর যুবলীগ নেতা তাসবীরুল হক অনু, যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সহসম্পাদক আবদুজ্জাহের সাজু এবং অধ্যাপক শামছুল কবির। তবে নদী ভাঙন রোধসহ এলাকার উন্নয়নে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে চায় দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি জোট থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান। বিএনপির একক মনোনয়নপ্রত্যাশীও তিনি। সাবেক সাংসদ আশ্রাফ উদ্দীন নিজান ভোটের মাঠে বেশ সরব। এর আগে তিনি এ আসন থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি এলাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকার দলের করা মামলা-হামলা শক্ত হাতে দমন করাসহ নানা সহায়তা দিয়ে বিএনপিকে চাঙা রাখছেন তিনি। একই সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে মনোনয়ন পেতে চেষ্টা তদবির অব্যাহত রেখেছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনটিতে তার প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে রয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তবে বিএনপি জোটের মধ্যে সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য নেতা

হিসেবে আশ্রাফ উদ্দীন নিজান আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন। এ আসনে দলটির আর কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী না থাকায় তৃণমূল পর্যায়ে আশ্রাফ উদ্দীন নিজানকে নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা) থেকে দলটির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, ল²ীপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা নোমান

সিরাজী আলোচনায় রয়েছেন। এ আসনে ধর্মভিত্তিক এই দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম মোটামুটি ভালো অবস্থানে রয়েছে। রয়েছে তাদের দলীয় প্রতীক হাতপাখার ভোট ব্যাংক। গত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর আলোচন শোনা না গেলেও এ আসনে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো। সাংগঠনিকভাবে ধর্মভিত্তিক এই দলটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে জামায়াতের ব্যাপক কর্মী সমর্থক রয়েছে।
ল²ীপুর-৪ রামগতি ও কমলনগর আসনে এবার নতুন মুখের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে হয়তো নতুন কিছু পাবেন এলাকাবাসী। আর তিনি হলেন এক সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা, কমলনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযুদ্ধা আবুল বারাকাত দুলাল। জাসদের এক সময়ের নীতিনির্ধারণীদের অন্যতম এই নেতা এবার বড় দুই দলের যে কোনো একটির টিকেট নিয়ে এ আসনে লড়তে পারেন! তিনি নির্বাচনী মাঠে নামলে হেভিওয়েট ও জ্যেষ্ঠদের অবস্থা ভয়াবহ হবে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। কারণ আবুল বারাকাত দুলালের গ্রহণযোগ্যতা এ আসনে সবার উর্ধ্বে। তিনি একজন সর্বজন ও ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে সবার আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
সব মিলিয়ে এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেএসডি ও বাসদের সাংগঠনিক কার্যক্রম ছাড়া অন্য সংগঠনগুলোর কোনো অবস্থান এখানে নেই। তবে শেষ ফলাফল দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়