জাকের সুপার মার্কেট : সংঘর্ষে সভাপতিসহ আহত ২

আগের সংবাদ

অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : সীতাকুণ্ডের ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে’ বিস্ফোরণে নিহত ৬, আহত আরো ২৫

পরের সংবাদ

মঞ্চে ‘মাদার কারেজ এন্ড হার চিলড্রেন’

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা মঞ্চে এনেছে বার্টল্ট ব্রেখট রচিত নাটক ‘মাদার কারেজ এন্ড হার চিলড্রেন’। গতকাল শুক্রবার জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। আজ সন্ধ্যায়ও নাটকটির আরো একটি প্রদর্শনী হবে। সপ্তদশ শতকের ইউরোপের ধর্মযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজা আরিফ। নাটকের গল্পে দেখা যায় কীভাবে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট- এই দুই ধর্মাচারে বিভক্ত হয়ে ইউরোপের মানুষ পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে চলতে থাকা সে যুদ্ধে জার্মানির জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। আর বেঁচে যাওয়া মানুষেরা মুখোমুখি হয়েছিল মহামারি প্লেগ, দুর্ভিক্ষের মতো নানাবিধ বিভীষিকার। এই যুদ্ধের ভেতরই ‘এনা ফিয়ালিং’ নামের এক নারী একটি ভ্রাম্যমাণ ক্যান্টিন নিয়ে রণক্ষেত্রে ঘুরে বেড়ায়। যুদ্ধের মাঝে ব্যবসা করতে গিয়ে সে একে একে তার সব সন্তানদের হারায় কিন্তু সাহসটা হারায় না। নাটকটিতে ফুটে ওঠে, এনা ফিয়ালিং ওরফে মাদার কারেজের বুদ্ধি, বিচক্ষণতা, সাহসিকতা, মমতা এবং ধৈর্য। ইউরোপের সেই ধর্মযুদ্ধ কালে একটি ভ্রাম্যমাণ খাবারের গাড়ি নিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাড়ি জমানো, যুদ্ধের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তিন সন্তান এলিফ, সুইস পনির এবং ক্যাট্রিনকে একে একে হারালেও জীবন যুদ্ধে মাদার কারেজ কখনোই হার মানেননি। একজন নারীর জীবন যুদ্ধ এবং যুদ্ধ যুদ্ধচলাকালে শত ত্যাগের পরেও হার না মানা রূপ দর্শকদের বিমোহিত করে, প্রেরণা জোগায়।
নির্দেশক রেজা আরিফ বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা দেখছি রাশিয়ার-ইউক্রেন যুদ্ধ হচ্ছে, পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে, আফগানিস্তান-তুরস্কে শিশুরা মরছে। যুদ্ধ যেন পৃথিবীর ধ্রæব সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পৃথিবীর ইতিহাস যুদ্ধের ইতিহাস। মানুষ মানুষে যুদ্ধ, ধর্ম নিয়ে যুদ্ধ, সীমানা নিয়ে যুদ্ধ, জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ; যুদ্ধের পরিনামে এত মৃতের নাম-পরিচয়-ঠিকানা কেউ হয়তো কোনোদিনই লিপিবদ্ধ করে রাখবে না। না রাখুক! শিল্পের কাঁধে ভর করে কিছু কথা বলার অভিপ্রায়ে মাধ্যম হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি মঞ্চ নাটক।’
নাটকের প্রযোজনার বিষয়ে জাবি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ জানায়, ‘বার্টল ব্রেখট সম্ভবত বিংশ শতকের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী নাট্যকার ও তাত্ত্বিক। আড়াই হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা পাশ্চাত্য নাটকের গঠন কাঠামোকে তিনি দুমড়ে মুচড়ে ভেঙেছেন। এরিস্টটলের ক্যাথারসিস তত্ত্বকে বাতিল করেছেন। অথচ ব্রেখট পাঠ করলে অনুধাবন করা যায়, কী গভীরভাবে ক্যাথারসিসকে তিনি আলিঙ্গন করেছেন এবং তারপর ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। ব্রেখটের অপরাপর নাটকের তুলনায় মাদার কারেজের প্রেক্ষাপট অধিকতর বিস্তৃত। নাটকের প্রায় কুড়ি বছরের ঘটনাক্রমে এরিস্টটলের ‘ত্রি-ঐক্যের’ স্থানালাভের সুযোগ নেই। ‘মাদার কারেজ’ শুধু ব্রেখটীয় ‘এপিক থিয়েটার’ এর অন্যতম সেরা কীর্তি-ই নয়, আপন শৈলীতেও এপিক।’

:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়