জাকের সুপার মার্কেট : সংঘর্ষে সভাপতিসহ আহত ২

আগের সংবাদ

অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ : সীতাকুণ্ডের ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে’ বিস্ফোরণে নিহত ৬, আহত আরো ২৫

পরের সংবাদ

কৃষ্ণসাগরীয় কৃষিপণ্যের বাণিজ্যে রাশিয়ার আধিপত্য

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইউক্রেনে হামলার এক বছরে আন্তর্জাতিক কৃষিপণ্যের বাজারে রাশিয়ার বাণিজ্য লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। দেশটির ঊর্ধ্বমুখী গম ও সূর্যমুখী তেল রপ্তানির কারণে পিছিয়ে পড়েছে ইউক্রেনের বাণিজ্যিক প্রবাহ। বাণিজ্যিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটা জানিয়েছে এসএন্ডপি গেøাবাল কমোডিটি ইনসাইটস।
গত বছরের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত পাঁচ মাস ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো অবরুদ্ধ ছিল। ফলে ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে (জুলাই-জুন) দেশটির গম রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। সূর্যমুখী তেল রপ্তানি কমে নেমেছে পাঁচ বছরের সর্বনি¤েœ।
বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানির গতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ ও তুরস্ক। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ফলে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে আবরো চালু হয় রপ্তানি। কিন্তু এরপর বাণিজ্য প্রবাহে বড় রদবদল দেখা দেয়। এশিয়ার দেশগুলোয় ইউক্রেনের রপ্তানি কমে আসে। এর পরিবর্তে ইউরোপের বাজারে স্থলপথে সূর্যমুখী তেলবীজ, গম ও ভুট্টা রপ্তানি বাড়ায় দেশটি।
রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ খাদ্যশস্য সরবরাহকারী দেশ। বৈশ্বিক গম রপ্তানিতে দেশ দুটির অবদান ২৭ শতাংশ, ভুট্টা রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ এবং সূর্যমুখী তেল রপ্তানিতে ৭৪ শতাংশ। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রবাহে বড় পরিবর্তন দেখা দেয়।
২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমের এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের গম রপ্তানি গত মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ শতাংশ কমেছে। এর পেছনে রাশিয়ার রপ্তানি শুল্ক বৃদ্ধিকে দায়ী করছে ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয়।
এসএন্ডপি গেøাবালের বিশ্লেষণ বলছে, চলতি মৌসুমে ইউক্রেনের গম রপ্তানি দাঁড়াবে ১ কোটি ৩৮ লাখ টনে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় ২৭ শতাংশ কম। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে প্রায় কয়েক সপ্তাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দেশটির গম রপ্তানি। তবে জুলাইয়ে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর রপ্তানি ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে।
ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধের প্রভাবে দেশটির গম রপ্তানির রুটে বড় রদবদল হয়েছে। ফলে ইউরোপে সরবরাহ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে। বিপরীতে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় ৭৫-৮০ শতাংশ কমেছে। এসএন্ডপি গেøাবালের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী মৌসুমে ইউক্রেনের গম রপ্তানি কমে ১ কোটি ২০ লাখ টনে নামতে পারে।
রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ গম রপ্তানিকারক। চলতি মৌসুমে দেশটি রপ্তানিতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গত বছরের ১ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাশিয়া ২ কোটি ৪৯ লাখ টন গম রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ লাখ টন বেশি।
এসএন্ডপি গেøাবাল বলছে, চলতি মৌসুমে রাশিয়ার মোট গম রপ্তানি দাঁড়াবে ৪ কোটি ১৫ লাখ টনে। এর আগের মৌসুমে দেশটি রপ্তানি করেছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ টন।
২০২২-২৩ মৌসুমে ইউক্রেন শস্যটির উৎপাদন কমে ২ কোটি ১০ লাখ টনে নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এসএন্ডপি গেøাবাল। এর আগের মৌসুমে দেশটিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ টন উৎপাদন হয়েছিল। রুশ ক্ষেপণান্ত্রের আঘাতে দেশটির বেশির ভাগ কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে কৃষি উপকরণ ও অবকাঠামো। ফলে আগামী মৌসুমে উৎপাদন আরো কমে ১ কোটি ৬৮ লাখ টনে নামার আভাস দিয়েছে এসএন্ডপি গেøাবাল।
অন্যদিকে রাশিয়ায় উৎপাদন ৯ কোটি ১০ লাখ টনে পৌঁছার পূর্বাভাস মিলেছে। আগের মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল ৭ কোটি ৫২ লাখ টন।
আগামী মৌসুমে দেশটিতে উৎপান কিছুটা কমে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টনে নামতে পারে।
এসএন্ডপি গেøাবাল প্ল্যাটসের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউক্রেন ফ্রি অন বোর্ড চুক্তিতে প্রতি টন গম ২৭৪ ডলারে রপ্তানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দাম কমেছে ২৩ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে রাশিয়া প্রতি টন গম বিক্রি করেছে ২৯৮ ডলার মূল্যে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দাম ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।
ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ ভুট্টা রপ্তানিকারক। মার্কিন কৃষি বিভাগের প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে দেশটির ভুট্টা রপ্তানি ২ কোটি ২৫ লাখ টনে নামতে পারে। যুদ্ধপূর্ব রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টন।
চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত ইউক্রেন ১ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার টন ভুট্টা রপ্তানি করেছে। গত মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি কমেছে ৭ শতাংশ। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়