উপাচার্য ড. মশিউর রহমান : সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখতে হবে

আগের সংবাদ

সংস্কারের বিরূপ প্রভাব বাজারে : আইএমএফের শর্ত মেনে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রত্যাহার করায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

পরের সংবাদ

জাতীয় ভোটার দিবসে সিইসি : নির্বাচন নিয়ে মুরুব্বিয়ানা নয়

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দলগুলোকে আগেও বলেছি, তাদের প্রতি আমরা বারবার আবেদন জানাচ্ছি আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশ নিন। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে পৌঁছাতে যদি মতপার্থক্য থাকে, সেটা নিরসনের চেষ্টা নিজেরাই করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন মুরুব্বিয়ানা করতে পারবে না। শুধু সবাইকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাতে পারে। আর সেটিই করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ভোটার দিবসের র‌্যালি শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এসব কথা বলেন।
এর আগে জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবন থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে একটি র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি আগারগাঁওয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে নির্বাচন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমসহ
ইসির অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। র‌্যালিতে ঢাকা জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যোগ দেন। এদিন পঞ্চমবারের মতো সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় ভোটার দিবস পালন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভোটার হবো নিয়ম মেনে, ভোট দেব যোগ্যজনে’। দিবসটি উপলক্ষে বিকালে আলোচনা সভারও আয়োজন করে ইসি।
রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, আমরা বিনীতভাবে সব রাজনৈতিক দলকে বলব, আপনারা যে কোনো প্রকারেই হোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন এবং প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে ভোটকেন্দ্রগুলোয় ভারসাম্য সৃষ্টি করুন। যাতে এ ভারসাম্যের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে এক ধরনের নিরপেক্ষতা এবং যথার্থতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম, অনেক দলও ভোটে আসছে না। তাই ভোটার দিবস করে লাভটা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমার সহকর্মীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। সার্বিকভাবে মোটেই কম হয়নি। এটা সঠিক তথ্য নয়।
সিইসি বলেন, আমরা যেটা অনুমান করেছি, বাস্তবতার নিরিখে, ভোট যখন প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক হয়, ব্যাপকভাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক হয়, তখন ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকে। জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে কারণ সেখানে সময় বাকি আছে মাত্র ১০ মাস। আর সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক হয়নি। আপনারা ইউনিয়ন কাউন্সিলর ভোট দেখেছেন সেখানে কিন্তু উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল এবং ইভিএমে হয়েছে। ইভিএমে ভোটে বলা হয় ধীরগতি, সেখানেও উপস্থিতি যথেষ্ট ভালো ছিল। আমরা আশা করি আগামীতে ভোট প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক হবে। সেখানে উপস্থিতি যথার্থ হবে। জেলা পরিষদে আমাদের উপস্থিতি ছিল ৯৯ শতাংশ, সেখানে ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে ভোট হয়েছে।
সিইসি বলেন, বিভিন্ন কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। আবহাওয়াগত কারণ হতে পারে, দুর্যোগের কারণে হতে পারে, শীতের কারণে হতে পারে; বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ, ভোটাররা এসেছেন কিনা, তাদের বাধা দেয়া হয়েছে কিনা, তারা ভোট দিতে পেরেছেন কিনা, সেটাই বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য আমাদের কাছে।
কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব কার? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব হচ্ছে প্রথমত ভোটারের নিজের। রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা যদি হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাদের সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমরা ভোটটা আয়োজন করব। আমরা আপনাদের ব্যালট পেপার সাপ্লাই করব, বক্স সাপ্লাই করব এবং আমরা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক যে সংস্থাগুলো আছে তাদের সোজা বলে থাকি আপনারা ভোটকেন্দ্রের চারপাশে প্রত্যাশিত যে আইনশৃঙ্খলা এবং অনুকূল পরিবেশ, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। তাই দায়িত্বটি সামগ্রিক সমন্বয়ের। এটা আপনাদের অনুধাবন করতে হবে। এককভাবে এ দায়িত্ব কখনই নির্বাচন কমিশনের নয়।
বিকালের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংকট দেখা দিতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হলে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়বে। তিনি আরো বলেন, আমরা একটা সংকটে আছি, তাতে সন্দেহ নেই। কারণ ভোট নিয়ে আমরা এখনো রাজনৈতিক কোনো ঐক্য দেখতে পাচ্ছি না। এটা খুব প্রয়োজন। যদি ঐক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। আমরা চাই না, নির্বাচনের পূর্বে বা নির্বাচনের সময়ে কোনো রাজনৈতিক সংকট তৈরি হোক।
ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৯১ হাজার ৪৪০ জন : এদিকে, জাতীয় ভোটার দিবসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে দেশের মোট ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। র‌্যালি শেষে এ তালিকা প্রকাশ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৭ কোটি; ভোটার সংখ্যা এর ৭০ শতাংশ। নির্বাচন কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জনসংযোগ পরিচালক যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, এবার হালনাগাদের পর চূড়ান্ত ভোটারসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৯১ হাজার ৪৪০। দেশের মোট ভোটারের মধ্যে ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন নারী এবং ৮৩৭ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়