উপাচার্য ড. মশিউর রহমান : সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখতে হবে

আগের সংবাদ

সংস্কারের বিরূপ প্রভাব বাজারে : আইএমএফের শর্ত মেনে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রত্যাহার করায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

পরের সংবাদ

খেলার মাঠে মেলা নয় : চট্টগ্রামের মাঠগুলো উদ্ধারের উদ্যোগ

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : খেলার মাঠে মেলা আয়োজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিকরা নানা আলোচনা-সমালোচনা করে আসছিলেন। খেলার মাঠে মেলা আয়োজন করায় তরুণ-কিশোররা খেলাধুলা করা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এতে করে তরুণ-কিশোররা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ছে।
চট্টগ্রামের নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়াম। যে মাঠে অনুশীলন করে, খেলাধুলা করে সৃষ্টি হয়েছে নন্দিত ক্রিকেটার, ফুটবলার। সেই আউটার স্টেডিয়াম মাঠটিতে খেলার বা অনুশীলনের সুযোগ পায় না খেলোয়াড়-শিক্ষার্থীরা। বাণিজ্যমেলা, বস্ত্রমেলা, বৃক্ষমেলা, হস্ত-কুঠির শিল্পমেলাসহ বিভিন্ন ধরনের মেলা-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয় মাঠটি। খেলার দলগুলোর অনুশীলন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে ভালো খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে না। এটাকে শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অন্তরায় হিসেবে দেখেন ক্রীড়ামোদী ও অভিভাবকরা। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল- মেলা আয়োজনের জন্য স্থায়ী একটি ভেন্যুর। এ নিয়ে মেলার আয়োজকদেরও নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।
অবশেষে খেলার মাঠে মেলা আয়োজনের সমস্যাটি সমাধানের পথে। খেলার মাঠে কোনও মেলা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের আউটার স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খেলার মাঠে কোনও মেলা হবে না। চট্টগ্রামের মাঠগুলো উদ্ধার করা হবে। তৈরি করা হবে নতুন মাঠ। চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরে আমাদের যে জায়গা রয়েছে সেখানেই সব মেলার আয়োজন করা হবে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা-সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আরো বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের যে মাঠ রয়েছে সেটি আমরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করেছি। মাঠের যে অংশটুকু রয়েছে সেটি লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছে। আমরা সেখানে লাল খুঁটি দিয়ে দিব। মাঠের ভেতরে যদি কোনো স্থাপনা থাকে সেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। একটি যুক্তিসংগত সময় দেয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে স্থাপনাগুলো সরাতে হবে। অন্যথায় আমরা অ্যাকশনে যাব। তিনি বলেন, মাঠের মধ্যে যেসব স্থাপনা থাকবে সবই অপসারণ করা হবে। চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১৯১টি ইউনিয়ন রয়েছে। ১ বছরের মধ্যে ১৯১টি খেলার মাঠ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রামের খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরি হবে। শুধু ক্রিকেট নয়, সব খেলায় গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। পলোগ্রাউন্ড মাঠ নিয়ে কাজ করছি, সারা বছর যাতে খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আউটার স্টেডিয়ামের সীমানা নির্ধারণ করে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। এরপর সীমানা প্রাচীর দেয়া হবে। ওয়াকওয়ের সিস্টেম থাকবে, যাতে বয়স্ক মা-বাবারা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় মানের খোলোয়াড় তৈরি করতে হলে ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ আলাদা আলাদা ৫টি অনুশীলন মাঠ প্রয়োজন। বিশেষায়িত মাঠ না হলে ক্রীড়াঙ্গনে প্রকৃত সুফল প্রাপ্তি দুরূহ হয়ে উঠবে। জেলা প্রশাসক এই বিশেষায়িত মাঠের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন। আশা করছি খুব দ্রুতই চট্টগ্রাম ফুটবল-হকি ও নারীদের জন্য পৃথক মাঠ পাবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর দিয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এরপর জেলা প্রশাসক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)সহ সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করা হবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাঠ সংরক্ষণের উদ্যোগকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে। আউটার স্টেডিয়াম পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবহার করতে হবে।
এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঘোষণা দেন, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার জন্য আউটার রিং রোডে বে-টার্মিনালের উল্টোপাশে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়