শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন ১০ মার্চ

আগের সংবাদ

ই-টিকেটের নামে ‘ফাঁকিবাজি’ : টিকেট দিতে অনীহা কন্ট্রাকটরের, টিকেটের বিষয়ে যাত্রীরাও উদাসীন, মনিটরিং ব্যবস্থা অপ্রতুল

পরের সংবাদ

শহীদ মিনারে পথনাটক উৎসব শুরু : স¤প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বসন্তের পড়ন্ত বিকালে হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন নাট্যসংগঠনের কর্মীরা। এসেছিল নাট্যামোদী নানা শ্রেণিপেশার মানুষেরাও। গোটা প্রাঙ্গণে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। উৎসবটা পথনাটককে ঘিরে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার বিকালে শুরু হয়েছে ছয় দিনব্যাপী পথনাটক উৎসব।
‘স¤প্রীতির সংস্কৃতি আনবেই মুক্তি’ স্লোগানে আয়োজিত উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন নাট্যকার নির্দেশক অভিনেতা নাট্যজন মামুনুর রশীদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস, সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান।
উৎসবের উদ্বোধক মামুনুর রশীদ বলেন, নাটক যতদিন পর্যন্ত উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল ততদিন পর্যন্ত ছিল পথনাটক। তিনি

বলেন, কেউ যেন মনে না করেন, সংস্কৃতিবান্ধব সরকার আছে আমাদের পথনাটকের প্রয়োজন নেই। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এখন সমস্যা আরো কঠিন হয়েছে।
মামুনুর রশীদ বলেন, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেয়েকে ছাত্রী নারীনেত্রী কীভাবে নির্যাতন করেছে। এটা আমার কল্পনায় আসে না, একটি নারী আরেকটি নারীকে এভাবে কী করে নির্যাতন করতে

পারে। এটা আমাদের ঐতিহ্যবর্জিত, সংস্কৃতিবর্জিত এবং মানবিকতাবর্জিত। এটা নিয়ে নাটক হওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ১ মার্চের দিনগুলোতে সংস্কৃতিকর্মী এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা একসঙ্গে চলেছি। আমরা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। রাজনীতিবিদরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা কখনো পিছিয়ে পড়েছেন, কিন্তু আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি। সেই দেশে আজ সংস্কৃতি ছিনতাই। রাজনীতিবিদদের দাপট। জিনিসপত্রের দাম আজ দ্বিগুণ। পথনাটকের মাধ্যমে এগুলো চিহ্নিত করে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া দুঃশাসন, দুর্নীতিকে রোধ করা দরকার। যে শিক্ষাঙ্গনে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষককে চাকরি নিতে হয় সেখানে তার মেরুদণ্ড কোথায় যাবে?
মামুনুর রশীদ বলেন, মঞ্চ নাটকের তিন দিক বন্ধ থাকে এক দিক খোলা। সেই মঞ্চে আমরা অভিনয় করি। যেখানে আলো থাকে, শব্দ থাকে এবং সর্বোপরি মানুষ টিকেট করেই হলে ঢোকে এবং মানুষের মনোযোগটা থাকে। কিন্তু শহীদ মিনারে যখন আমরা নাটক করি তখন দেখা যায় এর পাশ দিয়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার বিগ্রেডের গাড়ি বা বাস চলে যাচ্ছে, রিকশা টুংটাং শব্দ করছে। এর মধ্যে মানুষকে আবদ্ধ করে রাখা খুব কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটি করার জন্য উন্নত অভিনয়, উপযোগী পাণ্ডুলিপি এবং নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। সেই কারণে যারা পথনাটক লিখছেন তাদের সচেতন থাকা দরকার। নিজেদের নাট্যরচনার যে বুদ্ধি, নির্দেশনার যে বুদ্ধি তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হবে পথনাটকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাদের রচিত পথনাটক বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের বিভিন্ন আয়োজনে অভিনীত হয়েছে, এমন ৩৮ জন নাট্যকারকে সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়া এবারের উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৩৫টি নতুন নাটক, যা আগে কোনো উৎসবে প্রদর্শিত হয়নি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় ৩টি নাটক। শুরুতেই ছিল প্রাচ্যনাটের ‘নাইওর’।?জগন্ময় পালের লেখা নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। এরপর প্রদর্শিত হয় খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর ‘বাঁচার লড়াই’।?রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন এ কে এ কবীর। সব শেষে ছিল বৃত্ত নাট্যদলের ‘অভিশপ্ত ছায়া’।?রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শামসুদ্দিন শাকিল।
এছাড়া আজ মঞ্চায়ন হবে মাহফুজুর রহমান সবুজের রচনা ও নির্দেশনায় নাটক ‘চক্কর’। নাদিম মোড়লের রচনা ও নির্দেশনায় ‘ভিক্ষুক সমাচার’, আলমগীর হোসেনের নির্দেশনায় ‘ভুল সবই ভুল’ ও সাহাদাত হোসেন সাহিদের নির্দেশনায় ‘সূর্যোদয়ের হুংকার’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়