শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন ১০ মার্চ

আগের সংবাদ

ই-টিকেটের নামে ‘ফাঁকিবাজি’ : টিকেট দিতে অনীহা কন্ট্রাকটরের, টিকেটের বিষয়ে যাত্রীরাও উদাসীন, মনিটরিং ব্যবস্থা অপ্রতুল

পরের সংবাদ

রেলে নতুন নিয়ম কার্যকরের প্রথমদিন : এনআইডি না আনায় টিকেট কাটতে পারেননি অনেকেই

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কমলাপুর থেকে ট্রেনে চেপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন বলে টিকেট কাউন্টারে হাত গলালেন হাসিনুর বেগম। কাউন্টারে থাকা টিকেট বিক্রেতা রেজিস্ট্রেশন করার জন্য এনআইডি চাইলেন। হাসিনুর বেগম তো অবাক, টিকেট কাটব তো জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে কেন? তিনি আরো একটু এগিয়ে মুখ গলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কী চান? ভেতর থেকে বলল- এনআইডি। হাসিনুর বললেন, কেন? কাউন্টার থেকে উত্তর এলো- টিকেট কাটতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন? আগে মোবাইল দিয়ে এনআইডি রেজিস্ট্রেশন করেন, তারপর টিকেট। তা না হলে পরের জনকে জায়গা দেন। এনআইডি আনেননি… অগত্যা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে সরে দাঁড়ালেন তিনি। টিকেট কাটার এই নতুন হ্যাপায় চরম বিরক্ত হয়ে বিষোধগার করতে থাকলেন রেল কর্তৃপক্ষের।
শুধু হাসিনুর বেগম নন, গতকাল বুধবার এনআইডি রেজিস্ট্রেশন করে টিকেট কাটার নিয়ম চালুর প্রথম দিনে আরো অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। সিলেট যাবার জন্য কাউন্টারে হাত গলিয়েও টিকেট কাটতে ব্যর্থ হন মো. দিদারুল আলম। তারও রেজিস্ট্রেশন করা নেই, সঙ্গে এনআইডিও নেই। রেলের এমন কঠিন নিয়মের প্রতিবাদ করে কিছুক্ষণ চিল্লাচিলি করেন তিনি। এরপর সঙ্গে থাকা স্ত্রীকে নিয়ে বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওয়ানা হন।
টিকেট কাটতে ব্যর্থ হওয়া যাত্রীদের অভিযোগ, নতুন নিয়মের বিষয়টি তারা জানতেন না। তাছাড়া এনআইডি তো সবসময় সঙ্গে রাখাও যায় না। মূল্যবান জিনিস, যদি হারিয়ে যায়? তারা রেলওয়েকে টিকেট কাটার বিষয়টি সহজ করার আহ্বান জানান। এদিকে এনআইডির ফটোকপি এনেছেন এমন অনেকে হেল্প ডেক্সের সহায়তা নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে সমর্থ হন এবং পরে তারা টিকেটও কাটেন।
এর আগে গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধনের পর ট্রেনের টিকেট বিক্রির নতুন পদ্ধতি উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এর পাশাপাশি আন্তঃনগর ট্রেনে টিকেটবিহীন যাত্রীদের টিকেট কাটার জন্য ভ্রাম্যমাণ টিকেট পরীক্ষকদের হাতে পস (পিওএস) মেশিন তুলে দেন তিনি। এ সময় মন্ত্রী বলেন, শুরুতে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে এই প্রক্রিয়া চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েেেছ। ধীরে ধীরে সব লোকাল ট্রেনেও এ সেবা চালু করা হবে। আগে একটি টিকেট থাকলেই ভ্রমণ করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে টিকেট থাকলেই ট্রেনে চড়া যাবে না। যার টিকেট তাকে ভ্রমণ করতে হবে। অন্যের নামে কাটা টিকিটে ভ্রমণ করা যাবে না। যদি কেউ অন্যের টিকিটে ভ্রমণ করে তবে সেটি বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। একই সঙ্গে বিনা টিকেটে ভ্রমণের দায়ে সেই যাত্রীকে জরিমানা দিতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, টিকেট কালোবাজারি ঠেকাতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। অনেকেই টিকেট কিনে বেশি দামে বিক্রি করত। এখন যেহেতু যার টিকেট তাকেই ভ্রমণ করতে হবে, সেহেতু কালোবাজারির সুযোগ থাকবে না। ট্রেনে ভ্রমণ করা নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করতে স্টেশনগুলোতে হেল্পডেক্স ব্যবস্থা করার কথাও জানান রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ হবে। এটিকে ঘিরে দালালচক্র গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। এখন থেকে টিকেট কেটে যাত্রা বাতিল করতে চাইলে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে দিয়েই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে বলেও জানান রেলমন্ত্রী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়