শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন ১০ মার্চ

আগের সংবাদ

ই-টিকেটের নামে ‘ফাঁকিবাজি’ : টিকেট দিতে অনীহা কন্ট্রাকটরের, টিকেটের বিষয়ে যাত্রীরাও উদাসীন, মনিটরিং ব্যবস্থা অপ্রতুল

পরের সংবাদ

বাঘায় ‘পলিনেট হাউসে’ প্রথম ক্যাপসিকাম চাষ : ১৫ কাঠায় সোয়া ৪ লাখ টাকা বিক্রির আশা

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) থেকে : এ বছরই ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের পরীক্ষামূলক প্রথম চাষাবাদ শুরু হয়েছে রাজশাহীর বাঘায়। উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল ইসলাম রুমন ‘পলিনেট হাউসে’ ২৫ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছেন। এ ফসল দেখতে আসছেন অন্য কৃষকরাও।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ ফসলের উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। মিষ্টি মরিচের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। পুষ্টিমানের দিক থেকে মিষ্টি মরিচ অত্যন্ত মূল্যবান সবজি। প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি মরিচে ১ দশমিক ২৯ মিলিগ্রাম আমিষ, ১১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৮৭০ আইহউ ভিটামিন এ, ১৭৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, শূন্য দশমিক ০৬ মিলিগ্রাম থায়ামিন, শূন্য দশমিক ০৩ মিলিগ্রাম রিভোফ্লেভিন এবং শূন্য দশমিক ৫৫ মিলিগ্রাম নায়াসিন রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। মাছ, মাংস, সবজি, সালাদ সব কিছুতেই এর ব্যবহার রয়েছে।
ঝুরঝুরে বেলে দোআঁশ মাটি ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত। ভাদ্র ও মাঘ মাসে বীজ বপন করলে ভালো ফলনের সম্ভাবনা বেশি থাকে। শতক প্রতি ১ গ্রাম বীজ লাগে। চারা তৈরির জন্য বীজগুলোকে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে আগের তৈরি করা বীজতলায় ১০ সেমি. দূরে দূরে লাইন করে বীজ বুনতে হবে। ৭-১০ দিন পর চারা ৩-৪ পাতা হলে মাঝারি আকারের পলিথিন ব্যাগে চারা স্থানান্তর করতে হবে। অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের সুবিধার জন্য নিচের দিকে ছিদ্রযুক্ত একটি টব বাছাই করতে হবে। টবের মাটির সঙ্গে এক-তৃতীয়াংশ জৈব সার মেশাতে হবে। চারা একটু বড় হলে শক্ত খুঁটি দিতে হবে যাতে হেলে না পড়ে যায়। আগাছা থাকলে সাবধানে তুলে ফেলতে হবে।
আমিনুল ইসলাম রুমন জানান, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত ‘পলিনেট হাউসে’ ২৫ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছেন। পলি শেডটিতে, বিদুৎচালিত ড্রিপ ইরিগেশনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। গত অক্টোবরে হুলুদ, সবুজ ও বেগুনি রঙের ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের চাষাবাদ শুরু করেন। আবাদে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। চারা লাগানোর প্রায় তিন মাসের মাথায় ফল পেতে শুরু করেন। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছেন। আরো ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। পাইকারি দরে হুলুদ রঙের মরিচ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, সবুজ রঙের ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। বেগুনি রঙের মরিচ বিক্রি শুরু হয়নি। বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ কেজি উৎপন্ন হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় এর চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। লোহার পাইপের খুঁটির উপরে পলিথিন দিয়ে তৈরি ‘পলিনেট হাউস’ এ সারা বছরই সবজি এবং ফুলের চাষ করা যাবে। ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ আমাদের দেশীয় প্রচলিত সবজি না হলেও ইদানীং এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হাসানুজ্জামান বলেন, এর পুষ্টিগুণ বেশ ও লাভজনক ফসল। এটি অভিজাত হোটেল ও ফাস্টফুডসহ বিভিন্ন বড় বড় মার্কেটে বিক্রি হয়ে থাকে। দেশের জনসাধারণকেও মিষ্টি মরিচ খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।
রাজশাহীর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনাও প্রচুর। কারণ সারাবিশ্বে টমেটোর পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ। আধুনিক প্রযুক্তির পলিনেট হাউস পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে অন্তত ২০ শতাংশ ফলন বেশি হয়। নতুন ধরনের এই ফসল বাজারজাতে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়