শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন ১০ মার্চ

আগের সংবাদ

ই-টিকেটের নামে ‘ফাঁকিবাজি’ : টিকেট দিতে অনীহা কন্ট্রাকটরের, টিকেটের বিষয়ে যাত্রীরাও উদাসীন, মনিটরিং ব্যবস্থা অপ্রতুল

পরের সংবাদ

ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীর ঢল : ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা জেনেও সাগর পাড়ির প্রবণতা বাড়ছে

প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে উত্তাল সমুদ্রে জাহাজডুবিতে ধারাবাহিকভাবেই অভিবাশনপ্রত্যাশীর মৃত্যু বাড়ছে। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ৬৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর সলিল সমাধি ঘটেছে। এ ঘটনা সামনে এনেছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথে হাজারো মানুষের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানোর বিপজ্জনক যাত্রার প্রবণতা। বেশির ভাগ অভিবাসনপ্রত্যাশীই উত্তর আফ্রিকা থেকে যাত্রা করে। তবে কিছু কিছু মানুষ তুরস্ক থেকে ইতালিতে পাড়ি জমায়। ইতালি সরকার ধারাবাহিকভাবেই এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করে আসছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের হিসাবমতে, এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নৌকায় করে ১৩,০৬৭ জন অভিবাসপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছে। ২০২২ সালের একই সময়ে যে সংখ্যা ছিল ৫,২৭৩। আর তার আগের বছরে এ সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৫৬। এ বছর নিবন্ধিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ৮৬১ জনই অভিভাকহীন শিশু।
২০২২ সালে মোট ১০৫,১২৯ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছিল। ২০২১ সালের তুলনায় এ সংখ্যা বেশি। ওই বছরে এ সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ৪৭৭। আর ২০২০ সালে ছিল ৩৪ হাজার ১৫৪। তবে এর আগে ২০১৬ সালে ইতালিতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ১৮১,৪৩৬ অভিবাসনপ্রত্যাশী। ২০২২ সালে নিবন্ধিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ১৩,৩৮৬ জন অভিভাবকহীন শিশু। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, ২০২২ সালে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো ৫১ শতাংশ অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছিল লিবিয়া থেকে। ৩১ শতাংশ এসেছিল তিউনিসিয়া থেকে এবং ১৫ শতাংশ এসেছিল তুরস্ক থেকে। আরো অল্পকিছু অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছিল লেবানন, আলজেরিয়া এবং সিরিয়া থেকে।
এ বছর এখন পর্যন্ত ইতালিতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে গিনির নাগরিক। তাদের সংখ্যা ১ হাজার ৬৫৪। এরপর আছে যথাক্রমে- আইভরি কোস্ট (১,৫১১), পাকিস্তান (৯৯৭), তিউনিসিয়া (৮৪৬), মিশর (৪৯০) এবং বাংলাদেশ (৪৪৭)।
এর আগে ২০২২ সালে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল মিসরের নাগরিক। তাদের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৫৪২। এরপর ছিল যথাক্রমে- তিউনিসিয়া (১৮,১৪৮), বাংলাদেশ (১৪,৯৮২), সিরিয়া (৮,৫৯৪) এবং আফগানিস্তান (৭,২৪১)।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার নিখোঁজ অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রকল্প সেই ২০১৪ সাল থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগরে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু এবং নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার নিবন্ধন তালিকা রেখেছে। বিশ্বে ভূমধ্যসাগরের এই যাত্রাপথই সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর এই পথে আনুমানিক ২২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
২০১৭ সালে ইতালির তৎকালীন মধ্যবাম সরকার অভিবাসপ্রত্যাশীদের ঢল ঠেকানো, মানবপাচার রোধ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছিল। এর ফলে ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল এক লাফে অনেকখানি কমে যায়।
কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই চুক্তির নিন্দা জানায়। তাদের ভাষ্য ছিল, এ চুক্তির ফলে হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়ার আটক শিবিরে আটকা পড়েছে, যে শিবিরগুলোতে নিয়মিতই চলে নির্যাতন।
পরের বছরগুলোতে ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল অবশ্য কমই ছিল। তবে এর একটি কারণ ছিল কোভিড মহামারি। পরে আবার অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ইতালিতেও আসে ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী মেলোনির নতুন সরকার। ২০২২ সালে এ সরকার এসেই আরো একবার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল কমানোর অঙ্গীকার করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়