মহাখালীতে অভিযান : তিন রেস্টুরেন্টকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে সম্ভাবনার হাতছানি : সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সংকট দেখা দিলেও ইউরোপে সম্ভাবনার হাতছানি

পরের সংবাদ

সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির বৈঠকে বক্তারা : শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচারের নেপথ্যে সা¤প্রদায়িক গোষ্ঠী

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং সমাজ বিশ্লেষকরা বলেছেন, শিক্ষাক্রম নিয়ে ছড়ানো অপপ্রচার, গুজব এবং সা¤প্রদায়িকতা একই সুতায় বাঁধা। এর মাধ্যমে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে স¤প্রীতি ও সংস্কৃতিকে বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে। প্রকৃত অপরাধীদের সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও অপরাধীদের স্বরূপ সবার সামনে উন্মোচন করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে না। বরং অপ্রত্যাশিতভাবেই কোনো আলোচনা ছাড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুইটি পাঠ্যবই প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণ বিঘিœত হচ্ছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত ‘বিজ্ঞানভিত্তিক, অসা¤প্রদায়িক, মানবিক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা পাঠ্যক্রম বিষয়ে অপপ্রচার বন্ধ হোক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) প্রফেসর মোহাম্মদ মশিউজ্জামান, বাংলাদেশ নারী প্রগতি

সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি মফিদুল হক প্রমুখ। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ওয়াইডাব্লিউসিএ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হেলেন মনীষা সরকার। বিষয়বস্তু অপরিবর্তিত রেখে নুতন পাঠ্যপুস্তকের ভুলত্রæটি দ্রুত সংশোধন করে তা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সরকারের প্রতি মৌলবাদী গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে দমনের জোরালো দাবি জানিয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, মৌলবাদীদের সঙ্গে সমঝোতা করে বিজ্ঞান ও ইতিহাসের পাঠ্যক্রম পড়ানো বন্ধ করে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। সাধারণ কারিকুলাম নিয়ে যত কথা হয় মাদ্রাসার কারিকুলাম নিয়ে তা হয় না। বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ধর্মকে নিজ নিজ জায়গায় থাকতে দিতে হবে। ৫ম থেকে-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণ পাঠ্যক্রম থাকতে হবে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়নের আগেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাতে বাধা দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন’ বাস্তবায়নে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে।
প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান বলেন, মুখস্ত নির্ভর শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তে এবার সৃজনশীল চিন্তনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে দুই বছর গবেষণার পর ২০১৯ সালে রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের বৈশিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবারের শিক্ষাক্রমে সমস্যা চিহ্নিত, সমস্যা উত্তরণের উপায়, অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করা, বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান দেখানো, সব নিপীড়িত গোষ্ঠীর মানুষকে মর্যাদা দিতে শেখার মতো মানসিক অবস্থা তৈরির জন্য শিক্ষা উপকরণের উপর জোর দেয়া হয়েছে।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, চাহিদার সঙ্গে বিবেচনায় রেখে শিক্ষাক্রম সর্বদাই পরিবর্তনশীল। সরকারকে নীতিমালা বাস্তবায়নের উপর জোর দিতে হবে। দৃঢ়ভাবে সমঝোতার ক্ষেত্রে কতটুকু করা হবে তার কৌশল সরকারকে নিতে হবে। বিতর্কিত ইস্যুকে উপেক্ষা করে শিক্ষাক্রমের সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রোকেয়া কবীর বলেন, দক্ষ ও যুক্তিশীল মনোভাবের জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে বিজ্ঞান এবং মানবাধিকার শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের জেন্ডার সংবেদনশীল মনোভাব তৈরির জন্য জেন্ডার সমতাবিষয়ক প্রশিক্ষনের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়