মহাখালীতে অভিযান : তিন রেস্টুরেন্টকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে সম্ভাবনার হাতছানি : সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সংকট দেখা দিলেও ইউরোপে সম্ভাবনার হাতছানি

পরের সংবাদ

ভূমি নেই তবু প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাননি ময়না

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. রাজীব হুসাইন রাজু, নীলফামারী থেকে : ‘কত জনই তো আসিল (এলো) গেইল (গেল) তাও (তবুও) একখান (একটা) থাকার ঘর পানুনা (পাইনি)। শিয়ান (প্রাপ্ত বয়স্ক) বেটিক (মেয়ে) নিয়া (নিয়ে) রাস্তাতেই আন্ধি (রান্না করি), রাস্তাতে খাই আর এই ঘরত (ঘরে) থাকি (ঘুমাই)। নেম্বার (মেম্বার) চেয়ারম্যান কাহো (কেউ) দেখে না। ঠাণ্ডাত (ঠাণ্ডায়) হইছিলা (হয়েছিল) তাও (তবুও) একটা কম্বলও কাহো (কেউ) দেয় নাই। স্বামী তো থাকিয়াও (থেকেও) নাই।
মানুষের কাছোত (কাছে) চেয়া চেয়া (চেয়ে চেয়ে) খাও (খাই)। সরকারের কাছোত (কাছে) একখান (একটা) ঘর চাও (চাই)।’ দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কানাইকাটা কামারপাড়া গ্রামের পণ্ডিত রায়ের স্ত্রী ভূমিহীন ময়না রানী। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে সরকারি খাসজমিতে রাস্তার ধারেই ছোট একটি ঘরে মেয়ে পপি রানীকে (১২) নিয়ে বসবাস করছেন ময়না রানী। ঘর থেকে বের হলেই পা রাখতে হয় চলাচলের রাস্তায়। এমনকি রান্নার চুলাটিও রয়েছে রাস্তার ওপরেই। অসহায় ভূমিহীন হওয়া সত্ত্বেও আশ্রয়ণ প্রকল্পের কোনো ঘর পাননি তিনি। প্রতিবেশী বিউটি বেগম বলেন, আমাদের সঙ্গেই কাজ করতেন ময়না। কিন্তু বয়সের কারণে এখন ভারী কাজ করতে পারেন না তিনি। খুব কষ্ট করে মেয়েকে নিয়ে থাকেন এখানে। বৃষ্টি হলে না খেয়ে থাকেন তারা। পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইব্রাহিম তাকুলদার বলেন, আমার কাছে ভূমিহীনের সার্টিফিকেট চেয়েছে, আমি দিয়েছি। আর কিছু জানি না। ইউএনও আমাকে আর কোনো দায়িত্ব দেননি। যাচাই-বাছাই করেছেন তহশিলদার। কেন ঘর পায়নি বা পাবে কিনা জানি না। জানতে চাইলে নীলফামারী সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন নাহার বলেন, তিনি ভূমিহীন হলে আমাদের আরো আশ্রয়ণের ঘর আছে, তাকে দেয়া হবে। তবে স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী ময়না রানী।
মেয়ে সন্তান জন্মের পর আর কোনো খোঁজ নেন না স্বামী। এ অবস্থায় ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মেয়েকে বুকে আগলে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ময়না রানী। একটি নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জন্য আবেদনও করেছিলেন তিনি। তবে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ে ঘর মেলেনি তার কপালে। ভারী কাজ করতে না পেরে মানুষের কাছে হাত পেতে মেয়েকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে জীবিকা নির্বাহ করছেন এ নারী। তার নিরাপদ একটি বাসস্থানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়