মহাখালীতে অভিযান : তিন রেস্টুরেন্টকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে সম্ভাবনার হাতছানি : সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সংকট দেখা দিলেও ইউরোপে সম্ভাবনার হাতছানি

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামের একুশে বইমেলা : শেষ দিনে লেখক পাঠকের ভিড়ে জমজমাট

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে ২১ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলার পর্দা নেমেছে। গতাল মঙ্গলবার শেষ দিনে জমজমাট ছিল বইমেলা। ক্রেতা, দর্শনার্থী, পাঠকের ভিড় ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। পাঠকদের বই কিনে সে বইয়ে লেখকের অটোগ্রাফ নিতে দেখা যায়। বিক্রি বাড়ায় খুশি লেখক ও প্রকাশকরা। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে পেরে উচ্ছ¡সিত পাঠকরাও। লেখক-পাঠকদের উপস্থিতি ও জমজমাট আড্ডায় পুরো বইমেলা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার শেষ দিনে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামসংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে বইমেলা মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এ অংশগ্রহণকারী ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রকাশকদের মাঝে সনদ প্রদান ও সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার দেয়া হয়। মেলার শেষ দিনেও মোড়ক উন্মোচন হয়েছে নতুন নতুন বইয়ের। এদিকে, বইমেলার শেষ দিনে অন্য দিনের চেয়ে বেশি বই বিক্রি হয়েছে। আবার অনেক লেখক তাদের ঘনিষ্ঠজনকে বই উপহারও দিয়েছেন। মেলায় শিশু-কিশোরদের বেশি উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

বড় বড় প্রকাশনীগুলোতেও ছিল পাঠক দর্শনার্থীদের ভিড়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আয়োজনে বইমেলার শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আবহমান বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করতে হলে তাদের হাতে বই তুলে ধরতে হবে। আকাশ সংস্কৃতির কবলে বইয়ের জায়গা কেড়ে নিয়েছে অনলাইন সামাজিক মাধ্যম। নতুন প্রজন্মকে গড়তে হলে দায়িত্ব নিয়ে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বইগুলো তাদের হাতে তুলে দিন। তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী আগামীতে এই বইমেলাকে আরো বড় পরিসরে আয়োজনের জন্য মঞ্চ নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সংযুক্ত করার পরামর্শ দেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বই মানুষকে সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বই ভূমিকা রেখেছে। মেয়র হিসেবে বীর চট্টলাবাসীর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে এই বইমেলার আয়োজন করেছি আর আগামী বছর এ বইমেলার প্রাঙ্গন আরো বড় করব। আগামী বছর বইমেলায় মঞ্চনাটকসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি বাড়াব।
বইমেলায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, বইয়ের চোখে ইতিহাস দেখেন পাঠকরা। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামজা, আমার দেখা নয়া চীনের মতো বইগুলোর মাধ্যমে পাঠকরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারছে, বুুঝতে পারছে তৎকালীন ঐতিহাসিক বাস্তবতা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। মেলার আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান বইমেলার আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) আবদুল মালেক, কাউন্সিলররা, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস।
মেলা প্রাঙ্গণে পাঠক-লেখক আড্ডা দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নানা ধরনের আয়োজন ভিন্ন মাত্রা যোগ করে এবারের মেলায়। সারাদেশের ১০৮টি প্রকাশনী তাদের বই নিয়ে ১৫০টি স্টলে হাজির হয় চট্টগ্রাম বইমেলায়। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ভালোবাসা, কারাগারের জীবন, সামাজিক রীতিনীতিসহ বিচিত্র বিষয় নিয়ে লেখা বইয়ের সমাহার ছিল বইমেলায়। এবারের মেলার অনুষ্ঠানমালায় ছিল নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস-২১ ফেব্রুয়ারি, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়