মহাখালীতে অভিযান : তিন রেস্টুরেন্টকে তিন লাখ টাকা জরিমানা

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে সম্ভাবনার হাতছানি : সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় সংকট দেখা দিলেও ইউরোপে সম্ভাবনার হাতছানি

পরের সংবাদ

আলীকদম প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ : এক যুগ অনুপস্থিতির শাস্তি অন্য স্কুলে বদলি

প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি : বিদ্যালয়ে ১২ বছর অনুপস্থিত থেকেও শাস্তির বদলে বদলির আদেশ পেয়েছেন একজন সহকারী শিক্ষক। শিক্ষা অফিসের এক উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক (ইউডিএ) তার ছোটবোন সহকারী শিক্ষককে এই বদলির অফিস আদেশ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। এমন কাণ্ড ঘটেছে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে।
জানা গেছে, মোতাহারা বেগমের পিতার বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের মালপুকুরিয়া গ্রামে। বাবার নাম মো. আব্দুস শুক্কুর, মায়ের নাম শফিকা বেগম। এ শিক্ষকের পিন নম্বর ৯৯৪১৫০৭৯৩১৫০১। শিক্ষক তথ্যে তার প্রথম যোগদান দেখানো হয়েছে ২৩/০২/২০১১। মোতাহারা বেগমের বড় ভাই ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি আলীকদম উপজেলা শিক্ষা অফিসে উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক পদে কর্মরত আছেন।
২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আলীকদম উপজেলায় ২০টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের আওতায় এনে গেজেট প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউএনডিপির অর্থায়নে এ বিদ্যালয়গুলো ২০১০ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়। গেজেটভুক্ত ২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে পারাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১০ সালে যখন ইউএনডিপি স্থানীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয় তখন ‘মোতাহারা বেগম’ নামের কোনো শিক্ষক ছিলেন না। ২০১৫ সালে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণের উদ্যোগ নেয় পার্বত্য জেলা পরিষদ। এসময় শিক্ষক তালিকা চূড়ান্ত হয়। তখন তথ্য গোপন করেন মোতাহারা বেগমের বড় ভাই ইউডিএ মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। তিনি রাইতুমনি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার স্ত্রী রিয়াজুল জান্নাত ও সহোদর ভাই মোঃ আব্বাস উদ্দিনকে, পারাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার সহোদর বোন মোতাহারা বেগমকে, মেনক্য মেনকক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মামাতো ভাই আরিফ উল্যাহকে, বিদ্যামনি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাগ্নে মোজাম্মেল হককে শিক্ষক হিসেবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয় ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। জানা গেছে, এসব শিক্ষক ২০১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে একদিনের জন্যও এসব বিদ্যালয়ে হাজির ছিলেন না। এমনকি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট শিক্ষকদের খসড়া গেজেট প্রকাশের সময় পর্যন্ত এবং ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল শিক্ষক নিয়োগের অফিস আদেশ দেয়ার তারিখ পর্যন্ত ছিলেন অনুপস্থিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরায় তাদের নামও নেই। এর মধ্যে সদ্য বদলীর আদেশপ্রাপ্ত পারাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোতাহারা বেগমও ছিলেন অনুপস্থিত।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চাহ্লাথোয়াই মার্মা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ আদেশে মোতাহারা বেগম নামের একজন শিক্ষকের নাম আছে। তবে তিনি আমাদের বিদ্যালয়ে যখন ২০১১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় তখন থেকে আজ পর্যন্ত একদিনের জন্যও হাজির ছিলেন না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারির স্মারকে মোতাহারা বেগমকে পারাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে চৈক্ষ্যং ত্রিপুরা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর ‘অফিস আদেশ’ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের ব্যক্তিগত তথ্যে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরের ফোন দিলে সুরেন্দ্র ত্রিপুরা নামের অপর একজন শিক্ষক জানান, এটি মোতাহারার নম্বর নয়।
এ ব্যাপারে গত শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সফিউল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বদলীর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়