যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যার মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

বিদেশিদের নজর ঢাকার দিকে : ব্যস্ত সময় পার করলেন ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কোরিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

বীরাঙ্গনা ও সংগ্রামী বীণাদাসরা আমাদের ক্ষমা করবেন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ত্যাগী নারী বীণাদাস তার পেনশন প্রার্থিতায় যেভাবে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন তা সংক্ষিপ্ত আকারে একটি বিশ্লেষণাত্মক বর্ণনা তুলে ধরা হলো। ভেতরে ঢুকলেন এক বৃদ্ধা। দক্ষিণ কলকাতায় এক স্কুল থেকে ১০ বছর আগে রিটায়ার করেছেন। এখনো পেনশন পাননি। তদবির করতে এসেছেন বৃদ্ধা। মহিলা তার আঁচলে মুখের ঘাম মুছলেন। চশমার কাচ মুছলেন। তারপর ক্ষীণকণ্ঠে একটা চেয়ারের কোনা ধরে দাঁড়িয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন, স্যার! আমার ফাইলটা মুভ করেছে? ডি আই বিরক্তির সুরে বললেন, আপনার সার্ভিস বুক থরোলি চেক করে আপনাকে আমি আগেও যে প্রশ্ন করেছিলাম এ জি ঠিক সেই প্রশ্নই করেছে… তবুও আপনি আমায় রিকোয়েস্ট করেছিলেন এ জি-তে ফাইলটা পাঠাতে। আই হ্যাভ ডান মাই ডিউটি। নাও আই হ্যাভ নাথিং টু ডু। আপনার সার্ভিস বুকে আপনার কোয়ালিফিকেশনের কোনো উল্লেখ নেই। আপনি যে বিএ পাস করেছেন তার প্রমাণ কোথায়? আপনাকে স্কুল কমিটি সিলেক্ট করেছিল কমপ্যাসানেট গ্রাউন্ডে। সার্ভিস বুকে শুধু লেখা রয়েছে, সি হ্যাজ বিন সিলেক্টেড অন রেকমেনডেশন অব এ সিনিয়র ক্যাবিনেট মিনিস্টার এন্ড দ্য স্কুল কমিটি হ্যাজ বিন কমপেলড টু রিক্রুট হার অন কমপ্যাশানেট গ্রাউন্ড দ্যাট সি ওয়াজ এ ফ্রিডাম ফাইটার এন্ড হ্যাড বিন ইন জেল ফর এ সেভারেল লং ইয়ার্স। বৃদ্ধার মুখে এবারে ফুটে উঠলো অপমানের ছাপ।
সত্যিই তো, তিনি যে বিএ পাস করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সে প্রমাণ কোথায়? তিনি বিএ পাস করার পর একটা চোথা কাগজ পেয়েছিলেন বটে যেটাকে মার্কশিট বলে। কিন্তু সেটাই বা কোথায়? ১৯৩১ সালে বিএ পাস করলেন ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে। পরের বছরে হলো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব। সেই সমাবর্তনে তার সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো কৈ? সেদিনই যে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করল। তারপর দীর্ঘ কারাবাস। কারাবাস থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখলেন পুলিশ ঘরে ঢুকে তার বইপত্র সবকিছু তছনছ করে চলে গেছে। অনেক খুঁজেও পাওয়া গেল না তার সেই মার্কশিট। আর সিনেট হলের সে ঘটনার পরেই তো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার সার্টিফিকেট বাতিল করে দিল। তার তখন মনে হয়নি ওই সার্টিফিকেটের মূল্য কতখানি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিন পর আবারো জেলে গেলেন ভারত-ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে। দেশ স্বাধীন হলো। তার মনে হলো, এ স্বাধীনতাই কি তারা চেয়েছিল? পেটের দায়ে নেতাদের দয়ায় দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে চাকরি করলেন ক’বছর। তখন কি করে বুঝবেন যে এ দেশে কমপ্যাসানেট গ্রাউন্ডে চাকরি পাওয়া যেতে পারে কিন্তু ইউনিভার্সিটির বাজেয়াপ্ত সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না! এ সার্টিফিকেটের জন্য তিনি বহুবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রেজাল্ট সেকশনে তদবির করেছেন। শেষে একজন এসিস্ট্যান্ট কন্ট্রোলার অনেক ফাইল ঘেঁটে-ঘুটে তাকে শেষে বলেছিলেন, আপনার সম্পর্কে সে সময় সিনেটে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তা বর্তমান সিনেট কনডোন করে আপনাকে সার্টিফিকেট দেয়ার সুপারিশ না করা পর্যন্ত কোনো সার্টিফিকেট দেয়া যাবে না। অনেক চেষ্টা করে বুদ্ধা একবার ভাইস চ্যান্সেলারের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। ভিসি যদিও খুব ভদ্র ব্যবহার করেছিলেন কিন্তু তিনিও তাকে সে একই কথা বলেছিলেন তার স্বামীও ছিলেন একজন প্রাক্তন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনিও গত হয়েছেন। নিঃসন্তান, সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধার দু-চোখে তখন শুধু অন্ধকার।
আসলে আমরা অধিকাংশই বই মুখস্থ করে ডিগ্রি লাভ করেছি। কিন্তু জ্ঞানী, সভ্য হয়ে উঠতে পারিনি। তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই কাহিনী। প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বাধীন ভারতে এভাবে হেনস্থা হওয়ার অসংখ্য ঘটনা গ্রাম গঞ্জে ছড়িয়ে আছে। সত্যিই খুব বেদনাদায়ক। এই তো স্বাধীন ভারতবর্ষের কঙ্কাল সার অবস্থা। এটাই কি প্রমাণিত হয় না তথাকথিত শিক্ষা মানে শুধু আক্ষরিক জ্ঞান? আচার, আচরণ, ব্যবহার ও কর্মে বাস্তবে ফুটে না উঠে তা শিক্ষাই নয়। সত্যই বড়ই বেদনাদায়ক অবস্থা। কতগুলো ঘৃণ্য লোকের জন্য যিনি দেশ স্বাধীন হবে বলে প্রাণপাত করলেন তার এই পরিণতি। মহৎ শিক্ষিকাকে শ্রদ্ধা জানাই। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র ঠিক এ রকম। দেখার কেউ নেই কারণ বেসরকারি মাধ্যমিক থেকে অবসর নিলে মৃত্যুর আগে জমানো টাকা তুলতে পারে না।
এই তো স্বাধীন ভারতের কঙ্কালসার আসল ইতিহাস! এখন নির্লজ্জরা অতীতকে ভুলে গিয়ে নতুন ইতিহাস নিয়ে ব্যস্ত! কতদিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে- কতটা মেরে পাহাড়সম অর্থ প্রমাণ করবে! যারা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইংরেজদের বুটের লাথি খেয়ে ভারতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ কোরে রেখে গেলেন তাদের সবকিছু থেকে বঞ্চিত কোরে তাদের কথা ভুলেই গেলেন। যখন আত্মত্যাগের বিনিময়ে জোটে অপমান আর লাঞ্ছনা, তখন আসলে সত্যিই দেশ অধঃপতনে যায়। অতীতের এসব স্মৃতি রোমন্থন করলে জানি না কতটুকু পুণ্য হবে, তবে সেই অভাগিনী দেশপ্রানার আত্মা কি সত্যিই শান্তি পাবে? একপেট খিদে আর অপমান নিয়ে যাকে মরতে হলো? বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা আজো এর স্বাক্ষর বহন করে চলেছে। আইনের অন্ধগলিতে কত শত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ঘুরে মরছে ন্যায় বিচারের জন্য। তাদের হকের টাকা ফিরে পাওয়ার আশায়। কিন্তু তারা আইনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে আর অপদস্থ হচ্ছে। এ পরিহাস হয়তো চলতেই থাকবে যুগ যুগ ধরে। চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের সেই অগ্নিকন্যা বীণাদাস, বিপ্লবী বেণী মাধব দাসের কন্যা! ওনার শেষ পরিণতি জানতাম না। আমার মনটা ক্রোধে, দুঃখে অশান্ত হয়ে গেছে! ভাবতে পারছি না এত বড় দুর্ব্যবহার হয়েছে ওনার সঙ্গে! স্বাধীনতার নামে প্রকৃতপক্ষে হয়েছিল ক্ষমতা হস্তান্তর। ইংরেজ গেল কিন্তু এক শ্রেণির সুযোগসন্ধানী লোকরা ক্ষমতার অপব্যবহার করার সুযোগ পেল। আমরা নির্লজ্জ। উদাসীন। তাইতো সর্বত্যাগী বিপ্লবীরা উপেক্ষিত থেকে যান। যারা হতে পারতেন স্বাধীন দেশে সমাজের অভিভাবক তাদের এভাবে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত হতে হয়েছে।
দেশে দেশে যুগে যুগে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী এমনিভাবেই নিগৃহীত-নির্যাতিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন! এই লেখা পড়ে উপলব্ধি হচ্ছে- ইনারা যে স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন সে স্বাধীনতা আমরা আজো অর্জন করতে ব্যর্থ। নিজের স্বাধীন দেশে যদি একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর এ বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে তাহলে সাধারণ মানুষ আরো কত অবহেলিত হোন ওইসব তথা কথিত সভ্য সমাজের সরকারি কর্মচারী দ্বারা। লজ্জায় ঘৃণায় নিজের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। শুধু ভিনদেশীরা নয়, যুগে এদেশীয় বিবেকহীন, বুদ্ধিহীন, মেরুদণ্ডহীন সুবিধাবাদীরা দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষদের নিষ্পেষিত করেছে। কে এদের বিচার করবে? সময় চলে গেছে বহুদূর। সময় এখনো যাচ্ছে। আমরা ইতিহাস বিস্মৃত জাতি তাইতো আমাদের এই অধঃপতন, হানাহানি, হিংসা নিয়ে বাস করি, আমদের গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রাম এর ইতিহাস ভুলে গেছি। ভারতবর্ষের কোনো জাতি ভোলেনি, নতুন করে তাদের ইতিহাস এর মূল্যায়ন করছে। আর আমরা বিদেশি ভাবধারায় অবগাহন করছি, যা কিনা সেই দেশেই পরিত্যাজ্য। যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন তাদের স্বার্থ ত্যাগের ফল ভোগ করছেন বর্তমান স্বার্থপর তথাকথিত নেতা বলে পরিচিত কিছু সমাজবিরোধী। ভারতবর্ষকে নিজেদের জমিদারি মনে করেন তারা। সাধারণ মানুষের কথা ভাবার জন্য তাদের সময় কোথায়। স্বাধীনতার সময় ইংরেজ আমলের প্রায় সমস্ত সরকারি অফিসার তথা কর্মচারীর দুর্নীতির মধ্যেই আজকের দেশের দুর্গতির বীজ নিহিত ছিল। দেশবিরোধী, ইংরেজ তলপিবাহক, বিপ্লব নিধনকারীরা বহাল তবিয়তে পুনরায় বহাল হলো। তাদের কোনো বিচার তো হলোই না, তাদের স্বদেশি বিদ্বেষীমূলক কাজকর্মকে রাজকর্তব্য বলে বিবেচনা করা হলো। সেই ট্রাডিশন এখনো চলেছে- এতে তো আশ্চর্যের কিছু নেই। সেই আমলের কিছু অফিসার বা কর্মচারীরা কিন্তু অবশ্যই ভালো ছিল।
এভাবে হয়তো অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী সবার অলক্ষে অবহেলায় হারিয়ে গেছেন। আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম আমাদের উজ্জ্বল ইতিহাস, কিন্ত স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাস কলঙ্কিত। ভাবীকাল হয়তো ক্ষমা করবে না। ব্রিটিশ থেকে ভারত-পাকিস্তান তারপর বাংলাদেশে মানুষের অধিকার চলছে পূর্বের ধারাতেই। রক্ত, জখম, লাশ, জেল-জুলুম, অত্যাচার ধর্ষণ, নির্যাতন মনে হয় সবই বৃথা। অতীত মূল্যায়িত হচ্ছে না, এ কারণেই ভারত বর্ষে সাধারণ জনতার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নেই। মনে হয় আমরা জন্ম নিয়ে যেভাবে বাবা-মায়ের উত্তরাধিকার হয়ে তাদের সম্পদের ওয়ারিশ হয়েছি। দেশটাও তেমনি বর্তমানে এসেছে। দেশটা বীরদের মনে রাখার জন্য নবীনদের পাঠ্যতে স্থান নেই। ক্ষমতাসীনদের জয়গান করতে করতে দিন শেষ। কৃতী বীণাদাসরা আমাদের ক্ষমা করে দিও। তোমাদের দেশ প্রেম আমাদের স্পর্শ করতে পারেনি। আমরা লজ্জিত।
বাঙালি জাতি দিনকে দিন মানবিকতা হারাচ্ছে- এর উত্তরণ কবে হবে জানি না। লেখাটা পড়ে খুবই কষ্ট পেলাম। আমার মনে হয় সভ্যতার দিন আস্তে আস্তে অস্তমিত হচ্ছে। এভাবেই জাতির শ্রেষ্ঠ বীর সন্তানরা হারিয়ে যায়। যাদের আত্মদানের বিনিময়ে এ দেশ, এ জাতি এবং বড় বড় কর্মকর্তারা নিয়ম ও শৃঙ্খলার দোহাই দিচ্ছেন স্বাধীনতা সংগ্রামে তারা কোথায় ছিলেন? কেন এই অধোগামিতা? জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্তত সম্মান দিয়ে নিজেরা ধন্য হোন। স্বাধীন বাংলাদেশেও এখন এমন পেনশন প্রার্থীর অভাব নেই। অনলাইন আবেদন সাবমিট করার ২ বছর ৫ মাস পরও ফাইলের কাজ শুরুই হয়নি। ডিজিটাল এবার স্মার্ট হবে। তখন হয়তো আরো বেশি কালক্ষেপণ হতেও পারে! আমরা তো বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর মধ্যেই চলেছি উত্তর স্বাধীনতা কালে। একমাত্র ক্ষমতাবানেরাই ফস্কা গেরো দিয়ে গলে যায়। বীণা দাসের কথা পড়েছি, আলোচনা হয়েছে কিন্তু এসব শিক্ষণীয় চরিত্র সর্বসাধারণের মাঝে তুলে ধরার দায়িত্ব আমরা নিতে পারিনি। স্বার্থপর আর লোলুপ মানুষরা তখনো ছিল আর আজ অনেকগুণ বেড়েছে। তাই এ দেশের সত্যিকারের মুক্তি নেই। নেই মানুষের মুক্তি। শুধু কোটি কোটি ডলারের চোরদের এ দেশের সরকার ছেড়ে দেয় ভোটবাজির খেলার হিসাব মেলানোর জন্য। দেশের জন্য তার। জীবনটাই দিয়ে চলে গেলেন বীণা শোন। কিন্তু তার কেন মূল্যায়ন হলো না। এই অভাগা দেশে। কেউ শুধু দিয়ে যাচ্ছে। কেউ আবার নিয়েই যাচ্ছে বাংলাদেশের মতো।
সরকার অবশ্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছেন ঠিকই- তার মধ্যেও ভুয়া হিসাবের কোনো কমতি বা ঘাটতি নেই। আমাদের এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন যারা যুদ্ধ করার পরপরই মারা গেছেন। তাদের অনেকের পরিবারেই আজ হাহাকার। বস্ত্র ও খাদ্যের অভাবে কঠিন দুর্ভোগ নিয়ে এক দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। এখনো এক শ্রেণির চাটুকার আমলারা সেই ব্রিটিশ শাসকদের প্রেতাত্মাদের ওপর ভর করে যা খুশি তাই করছেন। সেটি অবশ্য ইংরেজি আমলের আমলাদের অবহেলা। এ দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে তাদের অপমানিত, বঞ্চিত ও হয়রানি করে। ইহা মর্যাদার ও অধিকার বোধের উপরে আঘাত হানার এক কুপ্রবৃত্তিগত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। সে মানসিকতার ধারাবাহিকতায় এখন আমাদের এই স্বাধীন দেশেও অসহায় ও গরিব মানুষকে হয়রানি করতে এবং আমলারা তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপে মানুষকে ঠকাচ্ছে আর নিজেদের এক আলাদা শ্রেণিবিবেচনা করে বৈষয়িক প্রতিষ্ঠা অর্জনের প্রতিযোগিতার মোহে লিপ্ত হচ্ছে। এই নোংরা প্রতিযোগিতায় সমাজে বৈষম্য বাড়ছে। পাশাপাশি অন্যায় অবিচার জুলুমও চলছে। সরকারের সঙ্গে জনগণের ব্যবধানের পাল্লা ভারি করে তুলছে। আর সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ধারণার বীজ বপন করছে। স্বাধীন দেশের জন্য গণতন্ত্রমনা মানুষকে এভাবে ঠকিয়ে বা সেবা বঞ্চিত করে সমাজে শান্তি সুখের পরিবেশকে বিষয়ে তুলছে। দুর্নীতির নোংরা খেলায় মেতে উঠে সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। স্বাধীন দেশে তা বর্বরতা বৈ কিছু নয়।

ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
লেখক ও গবেষক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়