যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যার মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

বিদেশিদের নজর ঢাকার দিকে : ব্যস্ত সময় পার করলেন ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কোরিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সনির্ভর ৪র্থ শিল্পবিপ্লব বিশ্বব্যাপী কড়া নাড়ছে। এর ধাক্কা বাংলাদেশেও লাগছে। কিন্তু ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের তেমন কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি এখনো লক্ষণীয় নয়।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ২০২৫ সালে পৃথিবীতে কী কী পরিবর্তন ঘটাবে তার একটি ধারণা বিশ্লেষকরা দিয়েছেন। তারা ধারণা করছেন- ২০২৫ সালের মধ্যে মানুষের শরীরে মোবাইল ফোন বসানো হবে- যা হবে অনেকটা বর্তমানের পেসমেকারের মতোই। থাকবে চশমা ও পোশাকের মতো নিত্য পোশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে ইন্টারনেট। অর্থাৎ সবকিছুই হবে ইন্টারনেটভিত্তিক। ৫০ হাজার লোকের শহরে কোনো ট্রাফিক সিগন্যালের প্রয়োজন হবে না। চালকবিহীন গাড়ি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ত্রি-মাত্রিক ছবি ইত্যাদি ডিজিটাল প্রযুক্তি আগামীর পৃথিবীতে হাজার ঘটনার জন্ম দেবে। এ বিপ্লবটা মূলত প্রযুক্তির বিপ্লব, যা একধাপে মানুষের জীবনমানকে এগিয়ে নেবে একশ বছর সামনে। পরিবর্তনের এ হাওয়া মানুষের জীবনমান উন্নত করবে, বাড়বে আয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষ কাজে লাগিয়ে শিল্প-অর্থনীতির সব ক্ষেত্র পরিবর্তিত-পরিবর্ধিত হবে।

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষাব্যবস্থার সুস্পষ্ট রূপরেখা দিয়েছিলেন। প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ড. কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করে শিক্ষা কমিশনকে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের নির্দেশনা দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি চাই আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান শিক্ষা ব্যবস্থা।’
বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন জীবনঘনিষ্ঠ কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়া বিশাল জনগোষ্ঠী জাতির কোনো উপকারে আসবে না। এ বিষয়টি উপলব্ধি করেই ১৯৭৩ সালে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘… শুধু বিএ এমএ পাস করে লাভ নাই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও স্কুল, যাতে সত্যিকার মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবা।’
আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান’ শিক্ষাদর্শন থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। শিক্ষা উন্নয়নের নামে, শিক্ষানীতি প্রণয়নের নামে বারবার অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ ও আনুষঙ্গিক কাজে লক্ষ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
দেশব্যাপী কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো গড়ে উঠলেও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন অনুধাবন করে কর্মশক্তিতে বলীয়ান শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং মানসম্মত পাঠদান ও শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়নি। বরং বাস্তবতা বিবর্জিত শিক্ষা দিয়ে আমাদের কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে বেকারত্বের সনদ হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের সনদ দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। ‘কর্মশক্তিতে বলীয়ান শিক্ষা ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, ৫০ বছর পর আজ বিশ্বব্যাপী সেই কর্মমুখী আধুনিক জ্ঞান ও দক্ষতানির্ভর প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা সম্প্রসারণের কথা বলা হচ্ছে।
নীতিনির্ধারক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন বা দেশপ্রেম বিবর্জিত ব্যক্তিবর্গ বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনকে উপেক্ষা করেছেন। দেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ করতে হলে আমাদের অবশ্যই মানহীন বাণিজ্যিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঙইঊ এবং ঞঠঊঞ-মুখী করা প্রয়োজন
উচ্চশিক্ষাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে হবে। কেননা উন্নত সমাজব্যবস্থায় ৯৩ ভাগ ওয়ার্কফোর্স তৈরি হয় মাধ্যমিক থেকে শুরু করে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন পর্যায় পর্যন্ত। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা পর্যায় থেকে আসে মাত্র ৬ থেকে ৭ ভাগ। অথচ আমাদের উচ্চশ্রেণির কিছু মানুষ আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ব্যস্ততা দেখালেও প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মধ্যমস্তরের শিক্ষা নিয়ে সর্বোচ্চ অবহেলা ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। জাতির প্রয়োজনে এবং বিশ্ব শ্রমবাজারের আঙ্গিকে শিক্ষা বিন্যাসে এখনই মনোযোগ না দিলে বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ সম্ভব হবে না।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচিত ৪র্থ শিল্পবিপ্লব ও বিশ্ব প্রতিযোগিতার এই সময়ে বাস্তবতা উপলব্ধি করে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকোর্স প্রবর্তন করা। ব্রিটিশ বেনিয়া দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনেকেই বেরিয়ে আসতে না পারায় এবং বিশ্ব বাস্তবতা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হওয়ায় উপেক্ষিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর দর্শন। স্বাধীনতার চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি গঠনে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে অবশ্যই কঠোর থেকে কঠোরতর সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতির পিতার ‘কর্মশক্তিতে বলীয়ান’ শিক্ষাদর্শন বাস্তবায়ন করতে হবে।
আউটকাম বেসড এডুকেশন (ঙইঊ) ভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে সব উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঞঠঊঞ-মুখী করতে হবে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এইচএসসি ও পাস কোর্সসহ অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্সে অন্তত ১টি করে কারিগরি বিষয় সংযুক্ত করা দরকার। যেন উত্তীর্ণ সবাই কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কিংবা ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী চাকরিতে প্রবেশ করতে পারে।

বিএসি ও বিএনকিউএফ
২০ জুলাই ২০২২ বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (ইঅঈ) ‘উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক সম্মেলন এবং অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন অনুষ্ঠান’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজন করে। দেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (ওছঅঈ)-এর পরিচালকবৃন্দের উপস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুর মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিটি ফ্রেম (ইঘছঋ)-এ উচ্চশিক্ষায় দক্ষতা অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আউটকাম বেসড এডুকেশন (ঙইঊ) ভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন এবং তা প্রয়োগের জন্য সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইঅঈ-এর অ্যাফিলিয়েশন পেতে হলে সব উচ্চশিক্ষায় (লেভেল ৭ থেকে ১০ পর্যন্ত) ঙইঊ ভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতি প্রচলন করতে হবে।’
৪র্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এটি একটি আশাব্যঞ্জক বিষয়।

লেভেল ১ থেকে ৬ অবহেলিত
বিএনকিউএফ-এ উচ্চশিক্ষা বলতে লেভেল ৭ থেকে ১০ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রশ্ন থেকে যায় ঙইঊ ভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতি কেবলমাত্র কী উচ্চশিক্ষায় প্রয়োজন? কেন লেভেল ১ থেকে ৬ পর্যন্ত অবহেলিত থাকবে? বটম লেভেলকে দক্ষ করে গড়ে না তুললে ‘দক্ষ বাংলাদেশ’ গড়ে উঠবে না। ইঘছঋ-এর লেভেল ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সব পর্যায়ে ঙইঊ ভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতি প্রচলন করার মাধ্যমেই কেবল প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত
বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- ওই সব দেশে কারিগরি শিক্ষার হার ৫০ থেকে ৭৫ ভাগ এবং তাদের মাথাপিছু আয় ৩০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনান্তে লক্ষ্য করা যায়- মাথাপিছু আয়ের সঙ্গে মধ্যমস্তরের জনশক্তির সম্পর্ক রয়েছে।
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উন্নয়নে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর প্রস্তাবনায় কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার ১:১২ নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও অনেক উন্নত দেশে এই হার ১:৮ থেকে ১:১২। এক্ষেত্রে আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর হার ১:৫০ থেকে ১:৭০ পর্যন্ত লক্ষ করা যায়। কোনো কোনো টেকনোলজিতে একজনও শিক্ষক নেই বা কোনোটিতে একজন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে পলিটেকনিকে তীব্র শিক্ষক, ওয়ার্কসপ, ল্যাব ও ক্লাসরুম সংকট।

মাথাপিছু আয়
সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশের রূপকল্প অনুযায়ী ২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় ১৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে হলে বিদ্যমান ২ হাজার ৭৯৩ (৭ ফেব্রুয়ারি ’২৩) মার্কিন ডলারের জনসক্ষমতাকে ৬ থেকে ৭ গুণ বৃদ্ধি করতে হবে। কোন পদ্ধতি ও শক্তি ব্যবহার করে চলমান জনসক্ষমতাকে ৬ থেকে ৭ গুণ বৃদ্ধি করা যায়- এ বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে। এ ভাবনায় অবশ্যই উন্নত প্রযুক্তি এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল তৈরির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থান দিতে হবে। বিষয়টি অনুধাবন করে সরকার বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতা বা কর্মমুখীভিত্তিক শিক্ষাকে ২০৪০ সালের মধ্যে ন্যূনতম ৫০ ভাগে উন্নীত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্কুল পর্যায়ে ২০২০ সালে দক্ষতা বা কর্মমুখীভিত্তিক শিক্ষা প্রবর্তনের নির্দেশনা দিলেও নানা অজুহাতে ২০২০ সালে তা চালু হয়নি। ২০২১ ও ২০২২ সালেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালে সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছে।
কর্মমুখী বা কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধির কার্যকরী কৌশল গ্রহণ না করে গতানুগতিক ও আত্মঘাতিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কোনো কোনো মহল প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০৪১ যাতে বাস্তবায়িত না হয় সেই ষড়যন্ত্র করছে।
৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের স্বার্থে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুধাবন করা দরকার।

কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প নেই
৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জিং পরিবর্তনকে আমাদের এড়ানোর সুযোগ নেই। প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ ও সমূহ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে আমরা পৌঁছতে পারি সেটি গভীরভাবে ভাবতে হবে। কারণ ২০৩০ সালে কর্মক্ষম ও নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত হবে সর্বনিম্ন। তখন দেশে জনসংখ্যা হবে আনুমানিক ১৮ কোটি। এর মধ্যে কর্মক্ষমের সংখ্যা দাঁড়াবে ১২ কোটি আর নির্ভরশীল জনসংখ্যা হবে ৬ কোটি। এ বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান করতে ব্যর্থ হলে দেশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। এ থেকে উত্তরণের জন্য কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধি করতে হবে।
এই হার বৃদ্ধি করায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ৩০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি। ওইসব দেশের জীবনযাত্রার মানও অনেক উন্নত। অন্যদিকে বাংলাদেশে মাত্র ১৫ শতাংশ দক্ষ জনসম্পদ নিয়ে বর্তমান মাথাপিছু আয় ২৭৯৩ মার্কিন ডলার। ২০৪১ সালে ধনী রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদেরকে ‘দক্ষ বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে। তবেই বিশ্বমানের টিভিইটি শিক্ষা অর্জন ও এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজতর হবে।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দরকার ‘দক্ষ বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা। আর দক্ষ বাংলাদেশ গড়তে হলে কারিগরি শিক্ষা তথা পলিটেকনিক শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বের যেসব দেশ কারিগরি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, সেই সব দেশ ততবেশি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে। ঐসব দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়টি সরাসরি কারিগরি ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহারের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। অর্থাৎ মধ্যম শ্রেণির কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার হারের ওপর গড় বার্ষিক মাথাপিছু আয় নিবিড়ভাবে নির্ভরশীল। মধ্যম শ্রেণির দক্ষ জনশক্তি অর্থাৎ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর হার যে দেশের যত বেশি, সেই দেশের মাথাপিছু আয়ও তত বেশি।

এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় ৫০% ভর্তি বাধ্যতামূলক করা
যেহেতু কারিগরি শিক্ষা গ্রহণে এখনো আমাদের দেশে আগ্রহ কম, সেহেতু সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের অনুপাত নির্ধারণ হওয়া প্রয়োজন। অবশ্যই সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের অনুপাত বেশি হতে হবে। নইলে সরকারের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জিত হবে না। সরকারি নির্দেশনা জারির মাধ্যমে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের শতকরা ৫০ ভাগকে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষা গ্রহণের আসন কমিয়ে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের আসন বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ দক্ষতাবিহীন সনদভিত্তিক শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার ও জাতির জন্য বোঝা। কারিগরি শিক্ষাকেই মূলধারা করতে হবে। এ জন্য বর্তমানের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার অনুপাত নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার অনুপাত নির্ধারণ না করে গতানুগতিক ধারা অব্যাহত থাকলে কারিগরি শিক্ষাকে শিক্ষার মূলধারায় পরিণত করা এবং বেকার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ দেশে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণে প্রতি জেলায় একটি করে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, টেক্সটাইল ও লেদার ইনস্টিটিউটসহ এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ শিক্ষানীতিতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডকে অধিকতর শক্তিশালী করা ও
প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান ও জনবল বৃদ্ধি, যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক-প্রশিক্ষক নিয়োগের অঙ্গীকার করা হলেও বাস্তব অগ্রগতি সামান্যই।

দেশে শিক্ষিত স্নাতক বেকার বেশি
কারিগরি শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। তাই তাদের মধ্যে বেকারত্বের হারও কম। শ্রমশক্তি জরিপের (২০১৩ সাল) তথ্য অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭.৫ শতাংশ, এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে এ হার ১৩.৬ শতাংশ। কিন্তু স্নাতক ও স্নাতক-পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৬.৪ শতাংশ। অর্থাৎ যার শিক্ষার ডিগ্রি যত বড়, তার বেকার থাকার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি স্নাতকের নিচ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে বেকারত্বের হার কয়েক বছর ধরে কমে যাচ্ছে।
২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপেই দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৩ এই তিন বছরে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করা তরুণ-তরুণীদের বেকারত্বের হার কমেছে। কিন্তু একই সময়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৬.৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০১০ সালে এই হার ছিল ৯.৯ শতাংশ, আর ২০১৩ সালে হয়েছে ১৬.৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় কর্মমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া এখন সময়ের দাবি।
উপরের জরিপ থেকে স্পষ্ট হয় যে, শিক্ষিত যুুবসমাজের বেকারত্বের হার কমাতে হলে, কিংবা তা যেন আর বাড়তে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমিয়ে কারিগরি শিক্ষার প্রতি তাদের বেশি আকৃষ্ট করতে হবে।

প্রতি বিভাগে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দরকার
একটিমাত্র কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পক্ষে বিপুলসংখ্যক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধান করা সম্ভব নয়। দেশে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থাকলেও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সংখ্যা ১টিই রয়ে গেছে। অর্থাৎ কারিগরি শিক্ষা এখনো উপেক্ষিত। দেশে যদি ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড দরকারি মনে হয়, তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড স্থাপন হওয়া উচিত অন্তত ৮ থেকে ১০টি। এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
উপরন্তু পরিকল্পনাহীনতার কারণেই দেশে এখন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৮। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত প্রায় ৭০০ সরকারি-বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স খোলা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে প্রায় ১০৭। এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। প্রতি বছর এসব প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বেরিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখ। কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক উচ্চশিক্ষিত লোকবলের চাহিদা আমাদের শ্রমবাজারে নেই। সে কারণে প্রতি বছর প্রায় ৩-৪ লাখ উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকারের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।

এ ধারা থেকে পরিত্রাণের জন্য আশু করণীয়-
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষাকে সীমিত করে দক্ষতাহীন সনদনির্ভর শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা হ্রাস করা।
এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে ৫০ শতাংশকে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা।
সাধারণ শিক্ষায় একাদশ শ্রেণির আসন সংখ্যা যৌক্তিক হারে সংকুচিত করে কারিগরি শিক্ষার আসন বৃদ্ধি করা এবং কোনো আসন যাতে খালি না থাকে তা নিশ্চিত করা।
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে শিক্ষার মূলস্রোতধারা হিসেবে গণ্য করা।
শুধু পরিমাণগত নয়, গুণগত মানও নিশ্চিত করা।
বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অনুমোদনের ক্ষেত্রে মান ও ইতোমধ্যে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া।
প্রতিটি বিভাগে ১টি করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড স্থাপন করা।
শ্রম বাজারের চাহিদা নিরূপণ করে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো।
সাধারণ শিক্ষায় ভর্তির হার হ্রাস করে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বৃদ্ধির জন্য সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার অনুপাত সরকারিভাবে নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

পলিটেকনিকগুলোয় বিরাজমান প্রকট সমস্যাদি
দেশে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক রয়েছে। সব পলিটেকনিকই দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ প্রকট সমস্যায় জর্জরিত। বছরের পর বছর শুধু আশ্বাসবাণী শোনানো হয়, কিন্তু সমাধান হয় না।
উদাহরণ হিসেবে দেশের প্রথম ও সর্ববৃহত্তম কারিগরি প্রতিষ্ঠান ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চিত্র বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
৯০-এর দশকে ৩ হাজার শিক্ষার্থী ধারণক্ষমতার এই প্রতিষ্ঠানটিতে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা অপরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধি করলেও এই ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য একটি মাত্র ফিজিক্স ল্যাব, কেমিস্ট্রি ল্যাবও একটি। ক্লাসরুমের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় কোনো কোনো ক্লাসে দুই গ্রুপের ছাত্রকে একত্রিত করে পাঠদান করা হয়। অনুরূপভাবে টেকনোলজিভিত্তিক ওয়ার্কসপ ও ল্যাবের প্রকট সংকট রয়েছে। মারাত্মক শিক্ষক সংকটের কারণে এবং ওয়ার্কসপ ও ল্যাবের অভাবে ৩ পিরিয়ডের ব্যবহারিক ক্লাস কমিয়ে ২ পিরিয়ডে নেয়া হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা শুধু থিওরি মুখস্থ করে সনদধারী হচ্ছে- দক্ষ হচ্ছে না।
শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়টি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল টেকনোলজি বিভাগের চিত্র সারণি-১ এ তুলে ধরা হলো।

সারণি-১ : ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক স্বল্পতার চিত্র
ক্রমিক পদবী আছে শূন্য পদ মোট পদ
১. চিফ ইনস্ট্রাক্টর ৩ জন ১টি ৪টি
২. ইনস্ট্রাক্টর ৫ জন ১১টি ১৬টি
৩ ওয়ার্কসপ সুপার ১ জন ১টি ২টি
৩. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ২ জন ২০টি ২২টি
মোট = ১১ জন মোট = ৩৩টি সর্বমোট = ৪৪টি

উপরের সারণি-১ থেকে লক্ষ্য করা যায় যে, এই মুহূর্তে (১০ ফেব্রুয়ারি ’২৩) ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শুধু সিভিল টেকনোলজি বিভাগের মোট ৪৪টি পদের মধ্যে ৩৩টি পদ শূন্য। মাত্র ১১টি পদে শিক্ষক রয়েছে। অর্থাৎ পদ শূন্যতার হার ৭৫ ভাগ।
এই ভয়াবহ চিত্র দেশের প্রায় সব সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বিরাজ করছে।
সরকারের ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে কারিগরি শিক্ষার মূল সূতিকাগার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোয় তীব্র শিক্ষক সংকটসহ বিরাজমান অন্যান্য সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে।

৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয়
প্রযুক্তিকে গ্রামমুখী করে মানুষের দোর গোড়ায় প্রযুক্তিসেবা পৌঁছে দিতে হবে।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ড্রপ-আউটের হার কমানোর লক্ষ্যে পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত ও সহজতর করতে হবে।
প্রতিটি মাধ্যমিক স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে অন্তত ২টি করে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
প্রতিটি স্কুলে কমপক্ষে ৩ জন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
আর্থিক সহায়তা দানের মাধ্যমে আত্ম-কর্ম সহায়ক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিকে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হবে।
যত্রতত্র বেসরকারি পলিটেকনিক অনুমোদন দেয়া বন্ধ করে বর্তমানে চালু সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোয় মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

উপসংহার
এসব বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে ১৬ কোটি মানুষের হাত কর্মীর হাতে পরিণত হবে। তবেই আমাদের বিশাল জনসংখ্যা অভিশাপ না হয়ে সুদক্ষ সম্পদে রূপান্তরিত হবে- দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে দক্ষ বাংলাদেশের চক্রযান। আর এভাবেই জাতীয় স্বপ্ন ‘উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা আরেক নতুন বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো- যা হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আত্ম-মর্যাদাশীল সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ।

মো. ইদরীস আলী
বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি ও কথাসাহিত্যিক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়