স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় ২২ মাসের শিশুকে আছাড় দিয়ে হত্যা

আগের সংবাদ

সমাবেশে ওবায়দুল কাদের : হিরো আলমকে প্রার্থী রেছেন ফখরুলরা

পরের সংবাদ

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন : সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমায় বাড়ছে বকেয়া পরিশোধের চাপ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দেশের মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিযোগ হিসেবে পরিচিত ‘সঞ্চয়পত্র’ খাতে বেশি সুদ না দিতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রয় কমাতে কমিয়ে দেয়া হয়েছে সুদের হার। এসব কড়াকড়ি আরোপে তলানিতে নেমেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। সদ্য সমাপ্ত ২০২২ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে সরকার উল্টো আসল ও সুদসহ মোট ৭ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকার ৫ হাজার ৫৪২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে। এ সময় আগের বিক্রয়কৃত সঞ্চয়পত্রের মূল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ও সুদ বাবদ ৩ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। অর্থাৎ ডিসেম্বরে সরকার আসল ও সুদসহ মোট ৭ হাজার ৩৩ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এতে শুধু ডিসেম্বরেই সঞ্চয়পত্র থেকে টাকা সংগ্রহের পরিবর্তে উল্টো ১ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা কোষাগার কিংবা ধার করে পরিশোধ করেছে সরকার। এর আগের মাস নভেম্বরেও সরকার বিক্রিত সঞ্চয়পত্রের চেয়ে ৯৭৮ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করেছিল।
এদিকে গত অক্টোবরেও সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি তো হয়নি বরং উল্টো ৯৬৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরেও সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ৭০ কোটি টাকা ঋণাত্মক ছিল। এ নিয়ে টানা চার মাস সঞ্চয়পত্রে ঋণাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার আগের মাস আগস্টে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল মাত্র ৮ কোটি টাকা। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। গত বছরের জুলাইয়ে বিক্রির অঙ্ক ছিল ২ হাজার ১০৪ কোটি টাকা।
জানা গেছে- বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে এই খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার, উল্টো ৩ হাজার ১০৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা কোষাগার ও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেছে।
এ অর্থ বছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। সেখানে প্রথম ছয় মাসে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪০ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে পূর্বের বিক্রয়কৃত সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে সরকার সংগ্রহ করেছিল ২০ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা অর্থাৎ পুরো অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের যে পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে ৪৮৭ কোটি টাকা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছিল। গত অর্থবছরে বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল। এই টাকা সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ অন্যান্য খরচ করেছিল। সে কারণে ব্যাংক থেকে খুব একটা ঋণ নিতে হয়নি।
এর আগে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরো কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। তারপরও বাড়তে থাকে বিক্রি।
সর্বশেষ সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এর পর থেকেই বিক্রি কমছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়