স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় ২২ মাসের শিশুকে আছাড় দিয়ে হত্যা

আগের সংবাদ

সমাবেশে ওবায়দুল কাদের : হিরো আলমকে প্রার্থী রেছেন ফখরুলরা

পরের সংবাদ

এক রহেগা পাকিস্তান!

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অধ্যাপক মোহর আলী অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষেই কলম চালিয়েছেন। টাইম-এ প্রকাশিত চিঠিতে তারা বলেছেন পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার প্রচারণা ভিত্তিহীন। তারা বুদ্ধিজীবী হত্যার কথাও অস্বীকার করেছেন। তবে ২৫-২৬ মার্চ জগন্নাথ ও ইকবাল হলের আশপাশে ‘সংঘটিত যুদ্ধে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষকের মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেননি। তবে ৩ জন শিক্ষকের মৃত্যুর কারণ ঈষৎ ভিন্ন- তারা প্রাণ হারাতেন না ‘যদি না তারা যে ভবনগুলোতে বাস করতেন সেগুলো আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করত।’ (দৈনিক পাকিস্তান ৯ জুলাই ১৯৭১)
২০ মে ২৯৭১ পশ্চিম পাকিস্তানের লায়ালপুরে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মওলানা মুফতি মাহমুদ বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি নিতান্তই হাস্যকর। প্রকারান্তরে তিনি জুলফিকার আলীর বিরোধিতা করেছেন। অর্থাৎ তখনো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার কারণে পশ্চিমাংশের ক্ষমতা দাবি করে বসেছেন সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি এটাও বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর যতক্ষণ আস্থা স্থাপন করা না যাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্ন অবান্তর। তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের আইনগত বাধার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন এবং বলেন যে কোনো প্রকারেই হোক না কেন ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হলে তার আগে জাতীয় পরিষদের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে। তবে সাময়িক কাজের জন্য প্রেসিডেন্টের জারি করা লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারকে অন্তর্বর্তী শাসনতন্ত্র হিসেবে অনুমোদন করা যায় বলে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে এই দলের অবস্থান পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ এবং পাকিস্তানের পাকিস্তান পিপলস পার্টি ঠেকানো এবং সামরিক শাসকের শাসনকাল প্রলম্বিত করতে সহায়তা করা। আর এই সহায়তার মাধ্যমেই পাকিস্তানর ‘অখণ্ডতা এবং সংহতি’ ধরে রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। পূর্ব পাকিস্তানের ‘দেশপ্রেমিক জনপ্রতিনিধি’ হচ্ছেন তারাই যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্বরতাকে সমর্থন করেছেন। সুতরাং জমিয়ত উল-উলামাই ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মওলানা গোলাম গাউস হাজারভি মনে করেন পূর্ব পাকিস্তানের অবশিষ্ট দেশপ্রেমিক ও পশ্চিম পাকিস্তানি গণপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়- অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। (পূর্বদেশ ১৪ মে ১৯৭১)
সামরিক বাহিনীর দৃঢ়তা সাময়িকভাবে হলেও পাকিস্তানকে ভেঙে টুকরো হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করেছে। জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামের ‘ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট’ মো. আতাহার আলী জনগণকে সতর্ক করে দেন কারণ ইসলামের শত্রæরা লাখো মুসলমানের ‘রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তানের ক্ষতিসাধনের বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে; এ যাত্রা পাকিস্তান রক্ষা পেলেও চক্রান্তের অবসান ঘটেনি।’ কাজেই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক সাচ্চা ইমানদার জনতা শত্রæর মারণ আঘাত প্রতিহত করবে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।
১৬ জুলাই ১৯৭১ কনভেনশন মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট ফজলুল কাদের চৌধুরী স্বীকার করেছেণ দেশ মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে আর পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ ভুল পথে পরিচালিত হয়ে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সুতরাং জাতীয় পরিষদের নতুন নির্বাচনের প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা ৯৬ জন লোক পাকিস্তানের জন্য ভোট দিয়েছিল। কিন্তু ২৩ বছর ধরে তরুণদের অপরিপক্ব মনে যে কারণেই হোক বঞ্চনার ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে এবং এই বঞ্চনা ও অবহেলা মোকাবিলার জন্য সংগ্রামের মাত্রা তাদের জানা ছিল না। তিনি বলেন, সঙ্গোপনে ভারতের এজেন্টদের দ্বারা পরিচালিত তথাকথিত বাংলাদেশ বেতার থেকে ফজলুল কাদের চৌধুরী ও অন্যান্য মুসলিম লীগ নেতার মৃত্যুদণ্ডের কথা তার স্বরে ঘোষণা করা হচ্ছে।
তিনি অখণ্ড পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন। সেই মুহূর্তের জন্য তার পরামর্শ অবিলম্বে রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতাদের আস্থায় নিয়ে একটি জাতীয় সম্মেলন করা এবং সেই সম্মেলনে উঠে আসা আশা-আকাক্সক্ষা সমন্বয় করে সংকট বিমোচনের ফর্মুলা তৈরি করা। তার এ আহ্বানের স্পষ্টভাবে সামরিক সরকারের শাসন অব্যাহত রাখার বৈধতা দেয়া হয়েছে।
পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-পিডিপির পশ্চিম পাকিস্তান অংশের প্রেসিডেন্ট নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান ২০ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে জানান ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে জাতীয় পরিষদের অধিকাংশ সদস্য পাওয়া না যাওয়ায় ও তারা আত্মগোপন করায় বর্তমান জাতীয় পরিষদ তার প্রয়োজনীয়তা ও ইপ্সিত ফলদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। কার্যত জাতীয় পরিষদের পরিবর্তে এটি আঞ্চলিক পরিষদে পরিণত হয়েছে। আঞ্চলিক রাজনীতিতে তিনি কট্টর ভুট্টোবিরোধী। ভুট্টো আওয়ামী লীগের পাকিস্তানপন্থি এবং সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কিছুসংখ্যক সদস্যের সঙ্গে সমঝোতা করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি মনে করেন যেহেতু সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কাজেই শীর্ষ স্থানীয় ক’জনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী না বলে দলের সবাইকে একই পঙ্ক্তিভুক্ত করতে হবে। পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা গুঁড়িয়ে দিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সেনাবাহিনী যে গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছে জুলফিকার আলী ভুট্টো সেনাবাহিনীকে সে কৃতিত্ব না দেয়া তিনি তার সমালোচনা করেছেন।
তিনিও প্রেসিডেন্ট ইয়হিয়া সরকার অব্যাহত রাখার কথাই প্রকারান্তরে বলেছেন, কারণ তিনি মনে করেন শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করার প্রশ্নে যেসব প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে চিরদিনের মতো তার সমাধান হওয়ার আগে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রশ্ন আসতে পারে না। (দৈনিক বাংলা, ২১ জুলাই)
জামায়াতে ইসলামীর অস্থায়ী আমির মিয়া তোফায়েল মোহাম্মদ গ্রেপ্তারকৃত বাঙালি নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার শুরু করার দাবি জানান। পূর্ব পাকিস্তানে সরকারের খারিজ করে দেয়া এমপিদের শূন্যস্থানে নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন না করে নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট প্রাপককে নির্বাচিত ঘোষণার আহ্বান জানান। নতুন নির্বাচনের জন্য ৪ মাস যথেষ্ট সময় নয়। মিয়া তোফায়েল ঢাকা সফর করে ২৩ জুলাই লাহোর বিমানবন্দরে অবতরণ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সঠিকভাবেই দেশ পরিচালনা করছেন, তবে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মানসিক আস্থা স্বাভাবিক করতে সেখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আত্মীয় অধ্যাপক গোলাম আযম অবিলম্বে জাতীয় পরিষদ বাতিল করে অনুকূল সময়ে সমগ্র পাকিস্তানে নতুন করে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান। ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ করাচিতে জামায়াতের পার্টি অফিসে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বলেন আওয়ামী লীগ ছাড়াও আরো যেসব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল সেগুলো হচ্ছে : ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী গ্রুপ), আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালী খান গ্রুপ) পূর্ব পাকিস্তান শাখা। শুধু দল নিষিদ্ধকরণেই নয় তিনি এসব দলের নেতাদের বিচারের দাবিও জানান। কারণ কারা গোপনে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত সুষ্ঠু আদমশুমারি। সুতরাং অবিলম্বে আদমশুমারির কাজে হাত দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কয়েকটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রস্তাবও দেন। তিনি মনে করেন ভালো মুসলমান কখনো বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। পূর্ব পাকিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করার জন্য তিনি দেশপ্রেমিকদের সক্রিয় হতে বলেন রাজাকারদের কাজের প্রশংসা করেন। (দৈনিক পাকিস্তান ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)।
২১ সেপ্টেম্বর লাহোরে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগবহির্ভূত একমাত্র রাজনৈতিক এমএনএ পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি প্রধান নুরুল আমীন ভুট্টোর আলাদা করে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দেন এবং পরিপূর্ণ জাতীয় পরিষদ গঠনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর করা সমীচীন হবে বলে মনে করেন কিন্তু পাকিস্তানের পূর্বাংশে ‘বিশেষ অবস্থা’ বিরাজমান বলে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার সময় এখনো আসেনি। যদিও তার বক্তব্য সামরিক সরকারের অব্যাহত শাসনই সমর্থন করে তবুও তিনি বলেন ‘এক নায়কত্ববাদ বা সেনাবাহিনীই এখন দেশের উভয় অংশকে একত্রে রাখতে পারবে বলে যারা বলাবলি করেন তিনি তাদের সঙ্গে একমত নন’- যত তাড়াতাড়ি এমন মনোভাব দূর হবে ততই মঙ্গল। ‘একমাত্র গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই পাকিস্তানের উভয় অংশকে অটুট ও ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবে।’ কিন্তু যে দলটি পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ জাতীয় পরিষদ আসনের ১৬৭টি পেল সেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নে তিনি নিশ্চুপ থাকলেন, এখানে গণতন্ত্রের প্রশ্ন না এনে বললেন দলটি পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছে এবং পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বুঝতে পেরেছে যে ‘ছয় দফার অন্তরালে তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।’ বিপদের সময় কেটে গেছে, সময়োচিত পদক্ষেপ নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।
৪ অক্টোবর ১৯৭১ দৈনিক পাকিস্তান-এ প্রকাশিত পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর মজলিশ-ই-শূরা শাসনতন্ত্র প্রণয়নের দায়িত্ব প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকেই দিয়েছে তবে তাদের নিম্নোক্ত গাইড লাইন না মানলে তাতে জাতির আশা-আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হবে না। (ক) কুরআন সুন্নাহ হবে শাসনতন্ত্রের প্রধান উৎস (খ) ফেডারেল ও পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র (গ) পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী (ঘ) পূর্ব আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন (ঙ) কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে বৈষম্য দূর করে অর্থনৈতিক সমতা সৃষ্টি করবে (চ) সার্ভিসে নিয়োগ বৈষম্য দূর করবে এবং ছ) নতুন শাসনতন্ত্র মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেবে।
১০ অক্টোবর কাউন্সিল মুসলিম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তানের আদর্শ সমুন্নত রেখে অখণ্ডতা বজায় রাখতে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রে একটি জাতীয় সরকার অবিলম্বে প্রতিষ্ঠা করা দরকার। পাকিস্তানের ‘প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজ সহজতর করার জন্য একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি জনপ্রিয় শাসনতন্ত্রী জারি না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে একটি জাতীয় সরকার’ দায়িত্ব পালন করবে।
ভুট্টোর ‘অদ্ভুত ধরনের পাগলামি’র সমালোচনা করে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজম বলেন, ভুট্টোর দেয়া দুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে ক্ষমতা অর্পণের তত্ত্বটি আসলে ভুয়া। পাকিস্তানের পক্ষে বিদেশিদের বোঝাতে ও দলে আনতে উদ্যোগী শাহ আজিজুর রহমান পুরো বিষয়টিকে ভারতীয় প্রচারণা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং সাফল্যের সঙ্গে সেসব প্রচারণা করা দরকার তা করে এসেছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। (তিনি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন।) (২৫ অক্টোবর, দৈনিক পাকিস্তান)
৬ নভেম্বর পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি প্রধান নুরুল আমীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পূর্বাঞ্চলে রাজাকারের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের সশস্ত্র করা অনুরোধ জানালে তিনি সম্মতি প্রদান করেন। তিনি জানান ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে খসড়া শাসনতন্ত্র প্রকাশ করা হবে এবং ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বসবে।
আর সবাইকে ডিঙিয়ে ভুট্টো বললেন বিপ্লব অনিবার্য, পাকিস্তানের জনগণ পুতুল সরকার গ্রহণ করবে না। কথিত শাসনতন্ত্র প্রকাশের আগেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকার ধূলি চুম্বন করে পরাজয় মেনে নিল এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটল।

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়