ডিএসসিসি মেয়র : হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে

আগের সংবাদ

নির্বাচনী বছরে কর্মসংস্থানে জোর : বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার, সরকারি পদ খালি সাড়ে ৩ লাখের বেশি

পরের সংবাদ

সংসদে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হবে, মাধ্যমিক স্কুল ২০ হাজার ৩১৬টি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি কাঠামো সংগ্রহ করা হয়েছে। উক্ত কাঠামোগুলো পর্যালোচনার কাজ চলমান রয়েছে। পর্যালোচনা শেষে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিউশন ফি’ যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত নীতিমালা/গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে। তাছাড়া, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৯ (৪) ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শতকরা ৩ ভাগ আসন প্রত্যন্ত অনুন্নত অঞ্চলের মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য সংরক্ষণ করে এইসব শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। উক্ত বিধান অনুযায়ী মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা স্বল্প বেতনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে লেখাপড়া করছে।
সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির অপর এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি জানান, সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের সব জেলায় অন্তত একটি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিটি বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এমপি মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সারাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ২০ হাজার ৩১৬টি।

এর মধ্যে নি¤œ মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) ২ হাজার ৩৫৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪৪৩টি। তিনি জানান, সারাদেশে ৩৫৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, দেশে মোট ২২৫৭টি কলেজে ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। সেখানে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদে গতকাল মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেহেরপুর বিল, ২০২৩ পাসের জন্য উপস্থাপনের পর বিরোধী দলের সদস্যরা জনমত যাচাইয়ে প্রস্তাবের আলোচনায় দেশের শিক্ষার মানের সমালোচনা করলে শিক্ষামন্ত্রী তার বত্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। শর্ট কোর্স- সেগুলো করা হচ্ছে। শিক্ষকের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ডিপ্লোমা এবং শর্ট কোর্সগুলো বহির্বিশ্বে বর্তমান বাজারচাহিদা অনুযায়ী করা হচ্ছে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় শতকরা ৭০ ভাগ যেখানে আছে সেখানে আমাদের প্রচেষ্টাগুলোর মাধ্যমে মানে একটা ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে। আমি আশা করি, একসময় যে ঢালাওভাবে বলা হতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ওখানে কোনো মান নেই, ওখানকার শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে কাজ পায় না, সেটি আর একেবারেই থাকবে না। স্কুলপর্যায়ে যে শিক্ষা, সেটি একসময় জ্ঞানভিত্তিক ছিল, সেটার সঙ্গে দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের উচ্চশিক্ষার মান কমেছে এটা আসলে কোনো গবেষণা করে কেউ বের করেছেন তেমন নয়। র‌্যাঙ্কিংয়ের কথা বলা হয়েছে, র‌্যাঙ্কিংয়ে কতগুলো বিষয় দেখা হয় তার মধ্যে গবেষণা, বিদেশি শিক্ষার্থী, বিদেশি শিক্ষক, বিদেশের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ- এ রকম অনেকগুলো বিষয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে আছে। র‌্যাঙ্কিংয়ের দিকে কখনোই নজর দেয়া হয়নি। সেই কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। কিন্তু এখন আমরা র‌্যাঙ্কিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং খুব স¤প্রতি আমাদের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিক এবং প্রাইমারি র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমাগত উঠে আসছে গত দুই-তিন বছরে। আমরা এগুলোয় নজর দেয়ার ফলে, বিশেষ করে গবেষণায় বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, মান পড়ে যাওয়া তো একদিনের ব্যাপার না। একটা লম্বা সময় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। শিক্ষক নিয়োগে পুরোপুরি দলীয় বিবেচনায় একসময় নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। শিক্ষকের কোনো যোগ্যতা দেখা হয়নি। শিক্ষায়, গবেষণায় কোনো বিনিয়োগ ছিল না। উচ্চশিক্ষায় আমাদের যে প্রচেষ্টা তার ফলাফল দেখতে পাবেন। ইতোমধ্যে কতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়- নানান ক্ষেত্রে তাদের অর্জন রয়েছে। আমাদের উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীরা বিশ্ব বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে। নাসার রোবটিক্স চাম্পিয়নশিপে চাম্পিয়ন হয়ে আসছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। আমাদের শিক্ষার মান নেই এটি বোধ হয় বলা সঠিক না। আমাদের ইউজিসির তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থাগুলো নেয়া হচ্ছে। সব ক্ষেত্রে হয়তো সব ব্যবস্থা দেখা যায় না। কিন্তু অনেক ব্যবস্থাই এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে, আরো যেগুলো নেয়া সম্ভব তা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়