ডিএসসিসি মেয়র : হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে

আগের সংবাদ

নির্বাচনী বছরে কর্মসংস্থানে জোর : বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার, সরকারি পদ খালি সাড়ে ৩ লাখের বেশি

পরের সংবাদ

ফের বাড়ল এলপিজির দাম : ১২ কেজির সিলিন্ডারে বাড়ল ২৬৬ টাকা, বাড়তি ব্যয়ের চাপে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জানুয়ারিতে এক দফা দাম কমার পর আবারো এলপিজির দাম বেড়েছে। ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানুয়ারি মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১ হাজার ২৩২ টাকা। সেই হিসাবে সিলিন্ডারপ্রতি ২৬৬ টাকা বেড়েছে। একইভাবে অটোগ্যাসের দামও বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেগুলেটরি কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। নতুন দাম গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কার্যকর হয়েছে। তবে রেগুলেটরি কমিশনের দাম ঘোষণার আগেই সরবরাহ সংকটের অজুহাতে গত এক সপ্তাহ ধরে সারাদেশে বাড়তি দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছিল। আর দাম বাড়ায় বিপদে পড়েছেন মধ্য ও নি¤œবিত্তের মানুষ। ছোট ছোট হোটেলের ব্যবসায়ীরাও বাড়তি দামের চাপে পড়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে মাসে এক লাখ ২০ হাজার টন এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে।
এর আগে, গত ২ জানুয়ারিতে ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৬৫ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৩২ টাকা নির্ধারণ করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। গত ডিসেম্বরে যার দাম ছিল ১ হাজার ২৯৭ টাকা। গত নভেম্বর মাসে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৫১ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২৫১ টাকা নির্ধারণ করেছিল বিইআরসি।
গতকাল বিইআরসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিসেম্বর মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) যথাক্রমে প্রতি মেট্রিক টন ৬৫০ মার্কিন ডলার এবং ৬৫০ মার্কিন ডলার ছিল। এটি জানুয়ারি মাসে কমে যথাক্রমে ৫৯০ এবং ৬০৯ ডলার হয়েছিল। এবার তা আবারো বেড়ে প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) ৭৯০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এ কারণে এলপিজির দাম বাড়ানো হয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে অটোগ্যাসের দাম ধরা হয়েছে লিটারপ্রতি ৬৯ টাকা ৭১ পয়সা। জানুয়ারি মাসে ছিল ৫৭ টাকা ৪১ পয়সা এবং ডিসেম্বরে ছিল ৬০ টাকা ৪১ পয়সা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা বেসরকারি এলপিজির ভোক্তা

পর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১২১ দশমিক ৬২ টাকায় বা রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে গ্যাসীয় অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি লিটার শূন্য দশমিক ২৭ টাকায় সমন্বয় করা হলো।
ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ মূল্য প্রতি লিটার ৬৯ দশমিক ৭১ টাকায় সমন্বয় করা হলো। সমন্বয়কৃত উক্ত মূল্য ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রযোজ্য ও কার্যকর হবে এবং পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
জানা গেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ডলার ও জ্বালানি দামের সংকটের মধ্যে এলপিজির দাম ওঠানামা করছে। এমন পরিস্থিতিতে বিইআরসি প্রতি এক কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১২৪ টাকা ৮৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে। ১২ কেজি সিলিন্ডার ছাড়াও সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দামও বাড়ানো হয়েছে। তবে সরকারি পর্যায়ে সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দামের পরিবর্তন হয়নি। সেটি আগের দাম ৫৯১ টাকাই রয়েছে।
এদিকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে গত এক সপ্তাহ ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছিল এলপিজি। এক সপ্তাহে খুচরায় ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম অন্তত ২০০ টাকার বেশি বেড়েছে। ১২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছিল ১৬০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকায়।
ঢাকার পীরেরবাগে একটি ছোট্ট খাবারের দোকানের মালিক গোলাপ মিয়া বলেন, গ্যাসের দাম রাতারাতি একশ থেকে দেড়শ টাকা করে বাড়ছে। ১২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডার দেখিয়ে তিনি বলেন, এখন যেটা জ্বলছে এটা গত শনিবার রাতে ১৪৫০ টাকা করে কিনেছিলাম। গতরাতে একটা দিয়ে গেল ১৫৫০ টাকা দাম। গত মঙ্গলবার দাম নিয়েছে ১৭০০ টাকা। গ্যাসের দাম তো আগে কখনো এভাবে বাড়তে দেখি নাই। মনে হয় গ্যাসের সংকট। এই সুযোগে দাম বাড়তে ?শুরু করেছে। এভাবে বাড়লে তো হোটেল ব্যবসা করে টিকে থাকা যাবে না।
এ বিষয়ে আগারগাঁওয়ের খুচরা বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, কোম্পানি থেকে গ্যাস দিচ্ছে না। আজ (বৃহস্পতিবার) ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ১৬০০ টাকায় বিক্রি করছি। রাতে গ্যাসের ট্রাক আসবে কিনা নিশ্চিত নই। যদি তাই হয়, তবে আগামীকাল আর গ্যাস বিক্রির উপায় থাকবে না।
এলপি গ্যাস অপারেটরগুলোর সংগঠন এলপিজি অপারেটর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, বাজারে চাহিদা বেশি আর সরবরাহ কম হলে এ ধরনের বিষয় হতে পারে। গত কয়েক মাসে যেভাবে আমদানি হচ্ছিল চলতি মাসে সেভাবেই হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু শিল্পকারখানায় এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে গেছে। ইন্ডাস্ট্রি খাতে গ্যাস যাওয়াতে সাধারণ ভোক্তারা একটু কম পাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়