ডিএসসিসি মেয়র : হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে

আগের সংবাদ

নির্বাচনী বছরে কর্মসংস্থানে জোর : বেকার ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার, সরকারি পদ খালি সাড়ে ৩ লাখের বেশি

পরের সংবাদ

ইপিবির প্রতিবেদন : জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় বেড়েছে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশের রপ্তানি আয় ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে (জানুয়ারি) যার পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কৌশলগত রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। এদিকে ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ৩১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২২ অর্থবছরের একই সময়ের ছিল ২৯ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে তৈরি পোশাক পণ্য (আরএমজি) রপ্তানির আয় ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি থেকে ১২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে দেশে। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১০ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় এ বছর আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়া ২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত নিটওয়্যার থেকে আয় ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ১৪ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১৩ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে আরএমজি রপ্তানি বেড়েছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক তবে আমাদের আরো বেশি অর্ডার প্রয়োজন। বিগত বছরগুলোতে জানুয়ারি মাসে আমাদের যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা এ বছরের তুলনায় বেশি।
জানা গেছে, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য ইউরোপ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অর্ডার কমেছে। এরপরেও আরএমজি খাতে নতুন আমদানিকারকদের আগ্রহে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা। তাদের আশা, চলতি বছরসহ সামনের বছরগুলোতে এ খাতের রপ্তানি বাড়বে।
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমলেও, বাজারে আমাদের অংশ বাড়াতে আমরা আশাবাদী। ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের আরএমজি শিল্প বিশ্ব বাজারের ১২ শতাংশ দখল করবে।
মন্দার আঘাত থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। লকডাউন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং মহামারিজনিত অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের রেকর্ড গড়েছিল, এক মাসের হিসাবে এটি ছিল দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়।
বিভিন্ন খাতে রপ্তানি আয়ের উত্থান-পতন : ২০২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয় ১৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমে ৬৯২ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকেছে। আগের বছর একই সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছিল ৮৩১ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ সময়ে এই খাতের রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৭৩৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে, যা ২০২২ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৮২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে চামড়ার জুতা থেকে রপ্তানি আয় ৪ দশমিক ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪১৪ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলার থেকে ৪৩১ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। অন্যদিকে চামড়াজাত অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আয় ২২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৪ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারে।
এদিকে ২০২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয় ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ৫৫৫ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে, যা আগের ২০২২ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৪৮ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন ডলার।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এ সময় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও কমেছে ২১ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৪৮ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার, যেখানে গত অর্থবছরে একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ৯৯৫ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার।
হিমায়িত এবং জীবন্ত মাছের রপ্তানি আয় ২২ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমে ২৯১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আগের অর্থবছর একই সময়ে আয় হয়েছিল ৩৭৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চিংড়ি রপ্তানি ২৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে ২১৩ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৫ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্সের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশে। এ সময়ের মধ্যে দেশে মোট রেমিট্যান্স আয় হয়েছে ১২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়