কেরানীগঞ্জের দগ্ধ সেই গৃহবধূর মৃত্যু

আগের সংবাদ

অনির্বাচিত সরকার এলে সংবিধান অশুদ্ধ হবে : অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

সংহতি সমাবেশে বক্তারা : সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চাই পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চট্টগ্রামে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি মানে সারা দেশের অশান্তি। পাহাড়ের অস্থিরতাকে পুঁজি করে নানা অপশক্তি সারাদেশের অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তাই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করে পার্বত্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিক ও বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতারা এসব দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের কর্মসূচিতে এবং নির্বাচনী ইশতেহারে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিটি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর জেলা পরিষদ চত্বরে এই সংহতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ আয়োজিত সংহতি সমাবেশ থেকে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়।
দাবিসমূহ হচ্ছে- পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময়সূচিভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন। পাহাড়ে সামরিক কর্তৃত্ব ও পরোক্ষ সামরিক শাসনের স্থায়ী অবসান। আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক করা এবং স্থানীয় শাসন নিশ্চিত করতে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক এসব পরিষদের যথাযথ ক্ষমতায়ন। পার্বত্য ভূমি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে কার্যকরের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ও ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থীদের পুনর্বাসন করে তাদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মূল ¯্রােতধারার অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক রণজিৎ দে, বাসদ’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, ঐক্য ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন রশিদ ভূঁইয়া, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাশগুপ্ত, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সৌখিন চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের প্রতিনিধি অলিক মৃ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুমন মারমা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরী, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান। সমাবেশে গণসংগীত পরিবেশন করে চট্টগ্রাম বিদ্যালয়ের রঁদেভ্যূ শিল্পীগোষ্ঠী। সংহতি সমাবেশ শেষে গণমিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার মূল কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের যে রাজনৈতিক দায় ও অঙ্গীকার এই রাষ্ট্রের ছিল তাও অনেকটা ভূলুণ্ঠিত। পাহাড়ের জুম্ম জনগণকে রাষ্ট্রের উন্নয়নের মূল ¯্রােতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা, রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা এবং অগণতান্ত্রিক শাসন ও সামরিক কর্তৃত্বের বিলোপ সাধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন জরুরি।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম পেরিয়ে শান্তি চুক্তি হয়। আজ আমরা উদ্বিগ্ন। পাহাড় আজ আবার অশান্ত। শুধু তা নয়, পাাহাড়ের অশান্তিকে ঘিরে সারাদেশে অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর হয়ে গেল। এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। যে সরকার চুক্তি করেছে সে সরকার আজ ১৪ বছর ক্ষমতায়। তারা বাস্তবায়ন করছে না কেন?
কবি সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও ভূমির অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চুক্তিটা হয়েছিল। এগুলো সমাধান না করে শুধু কয়টি পদে তাদের বসিয়ে দিয়ে সমাধান হবে না। সরকার, পার্বত্য জনগোষ্ঠী এবং বাম প্রগতিশীল শক্তিকে নিয়ে নতুন করে আবার বসা দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়