চট্টগ্রাম অফিস : অপরাজনীতির জন্য বিএনপিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে মন্তব্য করে তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি জনগণের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে, আবার জনগণের কাছে যেতে হলে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যে অপরাজনীতি করেছে, মানুষের ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, সেসবের জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোইকা এই ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে। ৭০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত ফিজিবিলিটি স্টাডিতেই চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তা, ব্যবহার উপযোগিতা, মেট্রোরেলের রুটসহ নানা বিষয় উঠে আসবে। একই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কত অর্থের প্রয়োজন তারও হিসাব দেবে কোইকা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি দাবি তুলেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এই দেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউকে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই নির্বাচন হবে। সংসদীয় গণতন্ত্রের সব দেশেই যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও তাই করবে। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। তার সরকারই তখন নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বিএনপির এই পদযাত্রা, কিংবা কদিন পরে বসার যাত্রা করবে- যেই যাত্রাই করুক না কেন, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, মানুষের সমর্থনের ওপর বিশ্বাস করে তারা যদি নির্বাচন বর্জন করেন তাহলে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যায়। তারা নির্বাচন বর্জন করে মানুষ থেকে যে দূরে সরে গেছে। যদি আবারো করে, তবে যোজন যোজন দূরে সরে যাবে। তবে আমি আশা করি, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমরা চাই, বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি শুভদিন, আনন্দের দিন। কারণ চট্টগ্রামে মেট্রোরেল হবে চট্টগ্রামের অনেকে ভাবেনি। এটি আমার জন্যও আনন্দের দিন। বেশ কয়েকবছর ধরে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে বহুবার নিবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আজকে কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পৃথিবীতে বিশ্ব মন্দা চলছে, সংকটময় বিশ্ব পরিস্থিতি, এই পরিস্থিতির মধ্যে অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে সরকার। বিশ্বময় অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম ধীরগতি হয়ে গেছে। সেই পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী এই চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ঝাং কিউন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ইআরডি সচিব শরিফা খান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, কোইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়াং-আহ দোহ প্রমুখ।