শিমুর মেয়েকে বাবা : ‘মা ভুল করেছি মাফ করে দিও’

আগের সংবাদ

স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি : যে ফর্মুলায় স্মার্ট বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

মানব পাচার বাড়ছে : সরকারকে কঠোর ভূমিকায় নামতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাতিসংঘ মানব পাচারবিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানব পাচার পরিস্থিতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশে ২০২০ সালে যেসব মানব পাচারের ঘটনা শনাক্ত করা গেছে তার বেশির ভাগই ঘটেছে ঢাকা, খুলনা এবং সিলেট বিভাগীয় অঞ্চলে। জেলা হিসেবে বাংলাদেশের ৭টি জেলায় সবচেয়ে বেশি মানব পাচারের ঘটনা বেশি শনাক্ত করা হয়েছে। এসব জেলা হচ্ছে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, ঝিনাইদহ, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ। এসব জেলা থেকে প্রতি লাখে দেড় জনের বেশি মানুষ পাচারের শিকার হয়। ঢাকা, খুলনা ও সিলেট অঞ্চলের মানব পাচার চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়ার ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে। জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা আইওএম এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তর যৌথভাবে ‘ট্রাফিকিং ইন পার্সনস ইন বাংলাদেশ’ নামে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। মূলত অজ্ঞতা ও দারিদ্র্যের জন্যই ঘটছে এই পাচারের ঘটনা। সরকারি-বেসরকারি কার্যক্রম জোরদার করা হলেই দেশ থেকে মানব পাচারের মতো জঘন্য অপকর্ম কমে আসবে। পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ৭ লাখ মানুষ অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি জমান, যাদের একটি বড় অংশ যায় পাচার হয়ে। দেশের দক্ষ ও আধাদক্ষ শ্রমিকরা এখনো ঋণ বা জমিজিরাত বিক্রি বা বন্ধক রেখে অনিশ্চয়তা আছে জেনেও আদম পাচারকারীদের শরণাপন্ন হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে। ভূমধ্যসাগরে চাকরিসন্ধানীদের সলিলসমাধির খবর এসেছে। ইউরোপে পাঠানোর নাম করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ভারতে কিংবা শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে আটকে রেখে নির্যাতন এবং পরে জঙ্গলে ফেলে রাখার যে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ থেকে পাচারের যে উদাহরণগুলো পাওয়া যায়, তাতে দেখা যায় বিমান ও স্থলপথে সীমান্ত অতিক্রমের মাধ্যমেই বেশিসংখ্যক নারী ও শিশু পাচার হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এবং উত্তরবঙ্গ সীমানা দিয়েই পাচার হয় বেশি। পাচারকারীরা বিভিন্ন পথে নারী ও শিশু পাচার করে থাকে, যথা- স্থলপথ, জলপথ অথবা বিমান পথ। গত এক দশকে ৫ লাখ নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়েছে। যাদের বয়স ১২-৩০। বাংলাদেশের পাচারকারীরা ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত ব্যবহার করে পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে নারীদের পাচার করে। দেশের উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত পথ দিয়ে পণ্যসামগ্রী পাচারের পাশাপাশি নারী ও শিশু পাচার হয়ে থাকে। সরকার নারী ও শিশু পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করাসহ পুলিশ সদর দপ্তরে স্থাপন করা হয়েছে মনিটরিং সেল। সুসংঘবদ্ধ পাচারকারীরা বছরের পর বছর এ অপরাধ সংঘটিত করে চললেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় মনোভাবের কারণে। কাজেই মানব পাচার রোধে সরকারকে আরো কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে হেলাফেলা করার কোনো সুযোগ নেই। নারী-শিশু পাচার বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকারের দায়বদ্ধ ভূমিকা দেখতে চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়